মোঃ ইমরান মাহমুদ, জামালপুর প্রতিনিধি : সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা পুনর্বহালের রায় বাতিল এবং কোটাপদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে সারা বাংলাদেশের সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে বিক্ষোভ মিছিল ও জামালপুর-দেওয়ানগঞ্জ মহাসড়ক অবরোধ করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন জামালপুরের মেলান্দহে অবস্থিত বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেফমুবিপ্রবি) সাধারণ শিক্ষার্থীরা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে নিতে তারা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষনা দিয়েছেন।
রবিবার (৭ জুলাই) বেলা ১১টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন চত্বরে সমাবেশে মিলিত হন শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভ মিছিল বের করে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থান প্রদক্ষিণ করে মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান গেট হয়ে গোবিন্দগঞ্জ বাজারে এসে জামালপুর-দেওয়ানগঞ্জ মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন তারা।
এ সময় শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ধরনের ব্যানার, পোস্টার প্রদর্শন করে "সারা বাংলা খবর দে, কোটা প্রথা কবর দে" "সোনার বাংলা গড়তে হলে, মেধার অবমূল্যায়ন বন্ধ করতে হবে" সহ "আমার সোনার বাংলায় খাই নাই বৈষম্যের ঠাঁই নাই" এমন অনেক কোটাবিরোধী স্লোগান দিতে থাকেন।
এ সময় বঙ্গমাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা বিরোধী আন্দোলনের আহ্বায়ক ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী লিটন মিয়া বলেন, মেধাবীদের বঞ্চিত করে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়া সম্ভব নয় তাই সরকার প্রধানের প্রতি আমাদের বার্তা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হলে এবং বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে চলাতে হলে মেধাবীদের ঠাই দিতে হবে এবং কোটাব্যবস্থার সংস্কার করতে হবে।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, বৈষম্যমূলক কোটার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অন্যায় করা হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা এর আগেও সব অন্যায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছেন। যে বৈষম্য থেকে মুক্তির জন্য দেশ স্বাধীন হয়েছে, সেই বৈষম্য আমরা মেনে নেব না।
তারা বলেন, আমরা কোটার সংস্কার চাই। যারা কোটা পাওয়ার অধিকার রাখে তাদেরকে অবশ্যই সেই অধিকার দেওয়া হোক। কিন্তু অতিরিক্ত কোটা প্রদানের মাধ্যমে বিপুলসংখ্যক মেধাবীদের বঞ্চিত করার সুযোগ আমরা মেনে নিতে পারি না। কোটা ব্যবস্থার যৌক্তিক সংস্কার করে ২০১৮ সালে জারিকৃত পরিপত্র পুনর্বহালের দাবি জানাই।
এ সময় তারা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দেন এবং তারা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষনা দেন।
গত ৯ জুন মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায় স্থগিত না করে আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়ে দেন চেম্বার আদালত। ওইদিন আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোতাহার হোসেন সাজু। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। এরপরই নতুন করে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হয় কোটাবিরোধী আন্দোলন।
এমআই