জাহিদুল ইসলাম, রাবি প্রতিনিধি:
কবিতা, গান ও অভিনয়ের মাধ্যমে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে সাংস্কৃতিক প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা। রবিবার (৭ জুলাই) বিকাল তিনটা থেকে সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে এই অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা। এই কর্মসূচি থেকে আজ সোমবার রেললাইন অবরোধের ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন প্রতিবাদী গান, পুঁথি পাঠ, একক ও সম্মিলিত অভিনয় এবং কবিতা আবৃত্তি করেন। গান, কবিতা, অভিনয়ের পাশাপাশি 'আমার সোনার বাংলায়, কোটা প্রথার ঠাঁই নাই', 'জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্র সমাজ জেগেছে ', 'সারা বাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে', 'কোটা প্রথার বিরুদ্ধে, লড়াই করো একসাথে', 'দেশটা নয় পাকিস্তান, কোটার হবে অবসান ইত্যাদি স্লোগানে আন্দোলন মুখরিত করেন।
আন্দোলনের মূখপাত্র পপুলেশন সায়েন্স অ্যান্ড হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী আমানুল্লাহ খান বলেন, আমাদের দাবি সুস্পষ্ট, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষনায় ২০১৮ সালের পরিপত্র বাতিল করা হয়েছে। কিন্তু ওনাদের ঘোষণাকৃত পরিপত্র হাইকোর্টে টিকলো না। শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করে তাঁদের দাবি আদায় করলো, প্রধানমন্ত্রী নিজে বা সরকার সেটা বাতিল করলো। এবং হাইকোর্ট সেটা বাতিল করলো। এইযে উভয়ের মধ্যে একটা সংকট তৈরি হয়েছে এর দায় সম্পূর্ণ নির্বাহী বিভাগকে নিতে হবে। এবং নতুন করে এমন একটি পরিপত্র জারি করতে হবে যাতে শিক্ষার্থীদের অধিকারও আদায় হয় এবং আইনগত কোনো জটিলতা না থাকে।
আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী মেহেদী সজিব বলেন, আমরা চারটি দাবিতে আন্দোলন করে আসছি। আমাদের দাবি না মানা পর্যন্ত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা পদ্ধতি সংস্কার আন্দোলনের লাগাতার কর্মসূচি পালন করা হবে। আমাদের পরবর্তী কর্মসূচি আগামীকাল প্যারিস রোড থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন রাজশাহীগামী রেললাইন শান্তিপূর্ণভাবে অবরোধ করা হবে।
আইন বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী সানজিদা ঢালি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন কোটা আন্দোলন একটি অযৌক্তিক আন্দোলন। তিনি কিন্তু এই আন্দোলনকে সমর্থন করে ২০১৮ সালে কোটা পদ্ধতি বাতিল করে দিয়েছিলেন। আমরা তখন আন্দোলন করেছিলাম কোটা পদ্ধতি সংস্কারের জন্য, বাতিলের জন্য নয়। তিনি নিজের ইচ্ছায় বাতিল করে দেন। আজ ৬ বছর পর তিনি কোন যুক্তিতে এই আন্দোলনকে অযৌক্তিক আন্দোলন বলছেন। আমরা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের এত শিক্ষার্থী আন্দোলন করছি তিনি কোন হিসাবে এটিকে অযৌক্তিক আন্দোলন বলছেন। আর কোটা পদ্ধতি যদি রাখতে হয় সেটি ১০ শতাংশের বেশি নয়।
প্রসঙ্গত, এই সাংস্কৃতিক প্রতিবাদ কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের প্রায় সহস্রাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। এর আগে গত ৬ জুন , ৩০জুন, ১, ৪, ও ৬ জুলাই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা।
সময় জার্নাল/এলআর