জাহিদুল ইসলাম, রাবি প্রতিনিধি:
সারাদেশের সাথে সমন্বয় করে সরকারি সকল চাকরিতে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের এক দফা দাবিতে রেললাইন অবরোধ করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার (১২ জুলাই) বিকাল পাঁচটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেশন বাজার সংলগ্ন রেললাইন অবরোধ করেন তাঁরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিকাল সাড়ে তিনটা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে অবস্থান নিতে শুরু করে শিক্ষার্থীরা। এরপর সাড়ে চারটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রধান সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে শিক্ষার্থীরা। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেশন বাজার সংলগ্ন রেললাইনে অবস্থান করে তাঁরা। এতে ঐ সময়ের জন্য রাজশাহীর সাথে সারাদেশের রেলযোগাযোগ ব্যাহত হয়।
এসময় শিক্ষার্থীরা, 'জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্র সমাজ জেগেছে', 'মেধাবীদের কান্না, আরা না আর না', লড়াই লড়াই লড়াই চাই, লড়াই করে বাঁচতে চাই', সারা বাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার খবর দে', কোটা না মেধা, মেধা মেধা', আপোষ না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম', অ্যাকশন অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন', 'জ্বালো রে জ্বালো, আগুন জ্বালো', 'কুমিল্লায় হামলা কেন, প্রশাসন জবাব চাই', 'আমার ভাইয়ের রক্ত কেন, প্রশাসন জবাব চাই', ইত্যাদি স্লোগানে আন্দোলন মুখরিত করেন।
আন্দোলনে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী সালাউদ্দিন আম্মার বলেন, আমাদের এক দফা এক দাবি। সরকারি চাকরিতে সকল গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করতে হবে। এবং সংবিধানে উল্লেখিত অনগ্রসর জনগোষ্ঠী এবং বিশেষ চাহিদা সম্পন্নদের জন্য কোটাকে ন্যায্যতার ভিত্তিতে নূন্যতম পর্যায়ে সর্বোচ্চ ৫ শতাংশে এনে সংসদে আইন পাশ করে কোটা পদ্ধতিকে সংস্কার করতে হবে। এই ৫ শতাংশের ভেতরে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য ২ শতাংশ, অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জন্য ২ শতাংশ এবং বিশেষ চাহিদা সম্পন্নদের জন্য ১ শতাংশ বরাদ্দ থাকবে। এতে মুক্তিযোদ্ধাদের কোনো নাতি-নাতনি সুযোগ পাবে না।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী বারিউল ইসলাম বলেন বলেন, আগে আমাদের একটা সমন্বয় কমিটি ছিলো, সেটা বিলুপ্ত করা হয়েছে। এখন আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি।আমাদের দাবি সর্বোচ্চ ৫ শতাংশের উপরে কোটা বহাল থাকা যাবে না। এবং এটা সংসদের নির্বাহী বিভাগের আইন পাশ করার মাধ্যমে করতে হবে। এছাড়া অন্য কোনো সমঝোতা আমরা মেনে নিবো না।
ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ তামিম বলেন, সারাদেশের সাথে একাত্মতা পোষণ করে আমরা আন্দোলনে নেমেছি। এখন আমাদের এক দফা এক দাবি, বৈষম্যমূলক সকল কোটা যৌক্তিকতার ভিত্তিতে সংস্কার করতে হবে। মুক্তিযোদ্ধার নাতি-নাতনির জন্য কোনো কোটা রাখা যাবে না, এটা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক এবং ভিত্তিহীন। আমাদের দাবি না মেনে নেয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
এই বিক্ষোভ কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ইনস্টিটিউট ও বিভাগের প্রায় তিন সহস্রাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেয়।
এমআই