সিদ্ধার্থ চক্রবর্তী, বাকৃবি প্রতিনিধি:
সরকারি চাকরিতে কোটা প্রথা সংস্কার এবং সারাদেশে শিক্ষার্থীদের উপর হামলার প্রতিবাদে পঞ্চম দিনের মতো ঢাকা-ময়মনসিংহ রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে আন্দোলন করেছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) বিকাল সাড়ে ৪ টার দিকে ঢাকাগামী জামালপুর কমিউটার ট্রেন অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা।
এর আগে দুপুর ৩টার দিকে বিভিন্ন হল থেকে মুক্তমঞ্চে এসে সমবেত হন শিক্ষার্থীরা। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চ থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে কেআর মার্কেট হয়ে আব্দুল জব্বার মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৭ শতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।
সকল গ্রেডে (৯ম-২০তম) অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে, সংবিধানে উল্লিখিত অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য ন্যূনতম কোটা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে এবং সারাদেশে বিভিন্ন জায়গায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর হামলার প্রতিবাদে বাকৃবির সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন।
বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা রেললাইন অবরোধের সিদ্ধান্ত নেন। তবে রেললাইনে আগে থেকেই অবস্থান করছিলো বাকৃবি শাখা ছাত্রলীগের শতাধিক নেতাকর্মী। আন্দোলনকারীরা রেললাইন অবরোধ করতে চাইলে বাকৃবি শাখা ছাত্রলীগ বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি না করেই রেললাইন থেকে সরে যায়। এরপর আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ঢাকাগামী জামালপুর কমিউটার ট্রেন আটকে দেয় এবং রেললাইনে বসে সারাদেশে শিক্ষার্থীদের উপর হামলার প্রতিবাদে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।
বাকৃবির ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষার্থী মালিহা মাশরাত বলেন, "আজকে যৌক্তিক আন্দোলনে আমার ভাইয়ের রক্ত ঝরছে, আমার বোনের রক্ত ঝরছে। এ কেমন স্বাধীনতা, এই কেমন বাংলাদেশ? আন্দোলনে রক্ত ঝরায় দেশের পতাকার সম্মান ক্ষুন্ন হচ্ছে। যারা আজকে মাথায় পতাকা বেঁধে আন্দোলন করছে তাদের মাথায় আঘাত করা হচ্ছে, পিটুনি দেয়া হচ্ছে। যৌক্তিক দাবিতে তাদের দেহের রক্ত ঝরছে। আজকে স্পষ্ট করে বলতে চাই, আর একজনের দেহের রক্ত যদি ঝরে, এই বাকৃবি ছাত্র সমাজ, সারা বাংলার ছাত্র সমাজ জিরো টলারেন্স নীতিতে দাঁড়াবে।"
কৃষি অনুষদের শিক্ষার্থী ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান ওয়াহিদা আঞ্জুম রিস্তা বলেন, "আমি সব সময় মুক্তিযুদ্ধের পরিবারের সদস্য হিসেবে গর্বিত ছিলাম। কিন্তু এখন লজ্জা লাগছে যে আমার জন্য আমার ভাইয়েরা রক্ত ঝরাচ্ছে। আমি আমার ভাইদের অধিকার, বোনদের অধিকার হরণ করে এই কোটা চাই না। আমি চাই এর একটা বিহিত হোক, কোটা সংস্কার হোক।"
সময় জার্নাল/এলআর