শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪

৪৬ হাজার টাকার 'হেনা হ্যান্ডিক্রাফটস' এখন ১১ লাখ টাকায় পৌঁছেছে

রোববার, জুন ১৩, ২০২১
৪৬ হাজার টাকার 'হেনা হ্যান্ডিক্রাফটস' এখন ১১ লাখ টাকায় পৌঁছেছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: ছাত্রজীবন থেকেই ব্যবসার মাধ্যমে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার প্রয়াস ছিলো আইরিন হেনার। আর সেই ইচ্ছে থেকেই গড়ে তুলেছেন (Hena Handicrafts) করোনাকালীন অনলাইনে বিক্রি করলেও শুরুটা হয় অফলাইনে। হেনা হ্যান্ডিক্রাফট অফলাইনে বেশি জনপ্রিয়। এখানে রয়েছে মেয়েদের হাতের কাজের ড্রেস (থ্রি পিছ, ওয়ান পিছ, টু পিছ), কোটি, শাড়ি, পাঞ্জাবিসহ বাচ্চাদের আইটেম ,হাতের কাজের কোশন কাভার, বেড কাভার, কাঁথা ইত্যাদি। মূলত হাতের কাজের ড্রেসগুলো নিয়েই হেনা হস্তশিল্পের পথচলা।’

প্রবল আগ্রহ, সামনে অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ আর নিজে কিছু করার তাগিদে স্বল্প পুঁজিতে হস্তশিল্প নিয়ে নিজের ব্যবসা শুরু করেন আইরিন হেনা। তবে মফস্বলে থাকায় এই পথচলা সহজ ছিল না। পরে ঢাকায় চলে আসলে বাড়তে থাকে তার স্বপ্নও। সেই স্বপ্নের দিকে এগুতেও থাকেন হেনা।

করোনায় যখন মার্কেট বন্ধ ছিলো তখন মানুষ  কেনাকাটার জন্য অনলাইনে ঝুঁকে পড়ে। আর এ সুযোগেই নিজেকে উদ্যোক্তা হিসসেবে গড়ে তুলেছেন  অনেকে।  তেমনই একজন সফল উদ্যোক্তা আইরিন হেনা।

নিজের জমানো অল্প কিছু টাকা আর কিছু ধার নিয়ে ৪৬ হাজার টাকায় শুরু হয় তার ব্যবসা। ধীরে ধীরে ব্যবসার পরিধি বাড়তে থাকে। দিন গড়িয়ে সেই ৪৬ হাজার টাকা তাকে এখন এনে দিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। অফলাইন-অনলাইন সবখানেই পেয়েছে তার পরিচিতি। তিনি মনে করেন আর্থিক ও মানসিক দৃঢ়তাই হচ্ছে নারীর শক্তি। তাই নিজে সফলতার পাশাপাশি মাধ্যম হয়ে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিচ্ছে সমাজের অন্য নারীদের।

উদ্যোক্তা হওয়ার গল্প শুনতে চাইলে আইরিন হেনা বলেন-

‘সাবলম্বী হওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও প্রথম দিকের শুরুটা স্বাভাবিকভাবেই মসৃণ ছিলো না। বিয়ের বছরখানেক পরেই আমার স্বামী ও আমি দুজনে মিলে মাত্র ২০ হাজার টাকা দিয়ে ড্রেস কিনি। তবে আগ্রহের ব্যাপার হলো ৪ দিনের মাথায় সব বিক্রি হয়ে যায়। সেই টাকা দিয়ে আবার নতুন ড্রেস কিনি সেগুলোও মাত্র সপ্তাহের ভেতরে বিক্রি হয়ে যায়। সেই ভালো লাগা থেকেই আত্নবিশ্বাস জাগে, যেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি তা নিয়েই সামনে এগোতে পারবো। সেখান থেকেই ৬ বছরের চেষ্টায় আজকের ‘হেনা হ্যান্ডিক্রাফট’।’

‘সেই শুরু করা ৪৬ হাজার টাকা এখন ১১ লাখ টাকায় এসেছে। শুধু আর্থিক দিকেই নয় পরিচিতও পেয়েছি বেশ। পারিবারিক কোনো বাঁধা ছিলো কিনা তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, পারিবারিক জয়ের যে বন্ধন সেই চড়াই-উতরাই পার করেই আমি এতোদূর এসেছি। আমার স্বামী আমাকে অনেক সাহায্য করে। আমার চার বছরের মেয়ে নিয়ে কাজগুলো করতে আমার পরিবার আমাকে সাহায্য করে। তাছাড়া আমার পণ্যগুলো সারাদেশে পৌঁছাতে, কাপড় কেনা থেকে সব ধরণের সাহায্য আমার পরিবার আমাকে করে।’

হাতের কাজের পোশাকের চাহিদা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘হাতের তৈরি সব পণ্যই বরাবরই ক্রেতাপ্রিয়। এর চাহিদা সারাবছরেই তবে মূলত উৎসব আমেজে অর্ডার বেশি পেয়ে থাকি। এছাড়া সারাবছরই টুকিটাকি ড্রেস বিক্রি করে থাকি।’
 
করোনাকালে ব্যবসার পরিস্থিতি নিয়ে বলেন, ‘আমি যেহেতু অনলাইন ব্যবসায় নতুন, তাই একটু বেগ পেতে হচ্ছে। আগে ৫ বছর যাবৎ অফলাইনে করে এসেছি। করোনাকালে আমি সবথেকে বেশি ড্রেস বিক্রি করতে পেরেছি।’


পারিপার্শ্বিক বাঁধা যা কখনো থমকে দেয়নি সাহস ধৈর্য নিয়ে তিনি এগিয়ে চলছেন। তিনি বলেন, ‘ব্যবসার শুরুতে যখন অফলাইনে বেচাকেনা ছিল অনেকে অনেক ধরনের অবহেলা, তুচ্ছ করা, কোনো একটা অফিসে গিয়েছি সেখানে উপরে উঠতে না দেওয়া, এখানে ড্রেস দেখানো যাবে না। নানা ধরনের ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। তবুও থেমে নেই তার স্বপ্নের।’

ভবিষ্যত পরিকল্পনা নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি যেন মানুষকে সবসময় ভালো পণ্য দিয়ে আসতে পারি। আমার যাত্রা যেহেতু অফলাইনে তবে মানুষ দিনকেদিন অসুস্থ হয়ে যায়, দুর্বল হয়ে যায়। তখন হয়তো এমন পরিস্থিতি নাও থাকতে পারে তাই অনলাইনেও আমার পরিচিতি নিজের একটি মার্কেট প্লেস তৈরি করে আমার এই স্বপ্নের ‘হেনা হেন্ডক্রাফট’ অদূরে এগিয়ে যাক।’

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা অনলাইনের পাশাপাশি ঢাকাতে একটা হস্তশিল্পের দোকান দেওয়ার। আমি ট্রেড লাইসেন্সও করার চেষ্টা করছি অনলাইন ব্যবসার পরিচয় দিয়ে। অনেকের স্বপ্নের শোরুমকে দুঃস্বপ্ন হতে দেখেছি। তাই ওয়েবসাইট খুলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে হাতের কাজের শাড়ি, ওয়ান-পিছ, টু-পিছ, থ্রি-পিছ ছড়িয়ে দিতে চাই। এতে আমার স্বপ্নও ছড়িয়ে যাবে।’

উদ্যোক্তা হিসেবে এখন তিনি লাখপতি। সফল এ নারী উদ্যোক্তা জানান, ‘তার এসব সফলতার পেছনে রয়েছে অক্লান্ত পরিশ্রম, আনন্দ ও সুখের অনেক কাব্য। করোনার ধাক্কা কেটে গেলে নতুন উদ্যমে ​শুরু করবো। আমি চাই, আমার কাজের মাধ্যমে নারীদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হোক।’

সময় জার্নাল/এমআই 


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল