সিদ্ধার্থ চক্রবর্তী, বাকৃবি প্রতিনিধি:
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একদফা দাবি অর্জিত হয়েছে আজ ৫ আগস্ট (সোমবার)। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের পর থেকেই দেশের বিভিন্ন স্থানে আওয়ামীপন্থীরা গা ঢাকা দিতে শুরু করেছেন। একইভাবে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) থেকেও গা ঢাকা দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপচার্য অধ্যাপক ড. এমদাদুল হক চৌধুরী এবং প্রশাসনিক অন্যান্য ব্যক্তিবর্গ (ভারপ্রাপ্ত কোষাধ্যক্ষ, উচ্চ শিক্ষা কো-অর্ডিনেটর, ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা, সহযোগী ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা এবং প্রক্টর। এদিকে হল থেকে পালিয়েছেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। অন্যদিকে উপাচার্য যাওয়ার আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব দিয়ে যান বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন কাউন্সিলের আহবায়ক অধ্যাপক ড. খন্দকার মো. মোস্তাফিজুর রহমানকে। বিষয়টি তিনি মৌখিকভাবে সাংবাদিক সমিতিকে নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে বিকাল থেকেই হলে এসে লুটপাট ও ভাংচুর শুরু করেছেন আশেপাশের এলাকাবাসী। সংকটকালীন সময়ে শিক্ষার্থীদের জানমালের নিরাপত্তার কথা না ভেবে ক্যাম্পাস থেকে পালিয়েছেন প্রশাসনিক ব্যক্তিবর্গ এমনটিই জানিয়েছে একাধিক সূত্র। আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের অনুপস্থিতিতে ক্যাম্পাসকে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য উপাচার্যের কার্যালয়ে আলোচনায় বসেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সোনালী দলের শিক্ষকবৃন্দ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. আসাদুজ্জামান সরকার।
একাধিক সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগের পর থেকে ক্যাম্পাস ছেড়ে পালাতে থাকেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। আশেপাশের এলাকাবাসীরা ক্যাম্পাসের মধ্যে ঢুকে ছাত্রলীগ নেতাদের কক্ষ ভাংচুর করেন। এসময় তারা আবাসিক হলগুলোতে ভাংচুর, লুটপাট, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আজহারুল ইসলামের এবং প্যাথলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবু হাদী নূর আলী খানের আবাসন ভাংচুর করেন। একপর্যায়ে প্রক্টরের আবাসনে আগুন দেন তারা এবং টাকা-পয়সা ও গহনা লুটপাট করেন।
আরও জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশের এলাকাবাসীরা উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করলে ওই বাসভবনের পশ্চিম পাশের দেওয়াল ভেঙে উপাচার্যসহ প্রশাসনের ব্যক্তিবর্গকে ইঞ্জিন চালিত নৌকা দ্বারা নিরাপদ স্থানে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
এমতাবস্থায় আবাসিক হলগুলোর নিরাপত্তা চান শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে নিরাপত্তা দাবি করছেন তারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আজহারুল ইসলাম বলেন, আমার বাসায় ভাংচুর হয়েছে। আমি আমার পরিবারের নিরাপত্তা চাই। আমার পরিবারের মানুষগুলোর কি দোষ সেটিও জানতে চাই। এসময় তিনি পদত্যাগ করবেন এবং কোনো দায় নিবেন না বলেও জানান।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল থেকে সাইকেল, মোটরসাইকেলসহ অন্যান্য জিনিসপত্র লুটপাট করেছেন বহিরাগতরা। এছাড়াও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের কক্ষসহ বিভিন্ন কক্ষে ভাংচুর করেন তারা।
এমআই