জামালপুর প্রতিনিধি :
জামালপুরে তথ্য চাওয়ায় সাংবাদিকদের সাথে অসদাচরন করেছে আঞ্চলিক পাসপোর্ট কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক উত্তম কুমার দেব।
বুধবার দুপুর ২টার দিকে জামালপুর শহরের বিজয় চত্তরে আঞ্চলিক পাসপোর্ট কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
তথ্য চাওয়ায় সময় টেলিভিশনের স্টাফ রিপোর্টার জাহাঙ্গীর আলম, যমুনা টেলিভিশনের জামালপুর প্রতিনিধি সাগর ফরাজী, দৈনিক দেশ রূপান্তর পত্রিকার জামালপুর প্রতিনিধি ময়না আকন্দ , ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের জামালপুর প্রতিনিধি সাইমুম সাব্বির শোভন ও ক্যামেরা পার্সন শাওন মোল্লার সাথে অসদাচরন করা হয়।
প্রেসক্লাব জামালপুরের সাধারন সম্পাদক ও সময় টিভির সাংবাদিক জাহাঙ্গীর আলম বলেন-‘দুপুর ২টার দিকে আমরা কয়েকজন সাংবাদিক কিছু তথ্যের জন্য পাসপোর্ট কার্যালয়ে যায়। সেখানে সহকারী পরিচালকের কক্ষে প্রবেশ করার আগেই উত্তম কুমার দেবকে দেখা যায়। তিনি দড়জায় দাড়িয়ে কয়েকজন সেবাগ্রহীতার সাথে গোপন আলাপ করছিলেন। আমরা পরিচয় দিতেই তিনি উত্তেজিত হয়ে যায়। তিনি আমাদেরকে তার কক্ষে প্রবেশ করতে দিচ্ছিলো না। পরে আমরা কিছু তথ্য চাইলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে কক্ষে প্রবেশ করে। আমরা সবাই তার রুমে গিয়ে বসি।’
প্রেসক্লাব জামালপুরের কোষাধ্যক্ষ ও যমুনা টেলিভিশনের সাংবাদিক সাগর ফরাজী বলেন-‘এডি সাহেবের রুমে বসে আমরা কিছু তথ্য চায়। মাসে গড়ে কতজন পাসপোর্টের জন্য আবেদন করে? কোন ধরনের পাসপোর্ট বেশি হয়? এই দুইটি প্রশ্ন করার পরে তিনি আরো উত্তেজিত হয়ে উচ্চস্বরে বলেন- আমার কাছে কোনো তথ্য নেই। সব তথ্য ডিজি অফিসে। আপনারা ঢাকা যান। আমি এখন খেতে যাবো। আমার এতো সময় নেই। এই কথা বলে তিনি আমাদেরকে রুমের ভেতরে রেখে বের হয়ে যান এবং দড়জা লাগিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন। পরে আমরা বের হয়ে আসি।’
প্রেসক্লাব জামালপুরের ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক ও দৈনিক দেশ রুপান্তরের সাংবাদিক ময়না আকন্দ বলেন-‘একজন সাংবাদিক তথ্যের জন্য সরকারি কার্যালয়ে যেতেই পারে। তথ্য দেয়া যাবে কিনা সেটি পরের বিষয়। তথ্য দেয়া যাবে না বললেই আমরা চলে আসতাম। কিন্তু এমন ব্যবহার করাটা তার ঠিক হয়নি।’
এমন ঘটনায় সহকারী পরিচালক উত্তম কুমার দেবের শাস্তির দাবি জানিয়েছে জামালপুরের সাংবাদিক নেতারা।
জামালপুর অনলাইন জার্নালিস্ট নেটওয়ার্কের সভাপতি জাহাঙ্গীর সেলিম বলেন-‘জামালপুর আঞ্চলিক পাসপোর্ট কার্যালয় নিয়ে হাজারো অভিযোগ রয়েছে। তাদের প্রতিটি শিরায় শিরায় অনিয়ম- দুর্নীতি। এবার আমরা এর শেষ দেখবো। প্রশাসনের কাছে আমাদের দাবি একটাই। পরিবর্তনের এই যুগে এমন দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা আমরা জামালপুরের মাটিতে দেখতে চায় না। তার বিচার না হলে আমরা কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলবো।’
তবে এই বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি জামালপুর আঞ্চলিক পাসপোর্ট কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক উত্তম কুমার দেব।
জেলা প্রশাসক মোঃ শফিউর রহমান জানান- ‘একজন সাংবাদিক তথ্যের জন্য সরকারি কার্যালয়ে যেতেই পারে। সহকারী পরিচালকের এমন ব্যবহার করাটি ঠিক হয়নি। আমি এখনই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করছি।’
এর আগে জামালপুর আঞ্চলিক পাসপোর্ট কার্যালয়ের দুর্নতি ও অনিয়ম নিয়ে বিভিন্ন গনমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ করে জেলার সাংবাদিকেরা। সবশেষ দুর্নতি ও অনিয়মের কারনে সোমবার পাসপোর্ট কার্যালয়ে গিয়ে প্রতিবাদ ও হুশিয়ারি করে জামালপুরের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীরা। পরে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিতভাবে আবেদন করে তারা।
এমআই