সাইফ ইব্রাহিম, ইবি প্রতিনিধি:
গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) উপাচার্যসহ শীর্ষ পাঁচ কর্তাব্যক্তি পদত্যাগ করেছেন। এছাড়াও রেজিস্ট্রারসহ বিভিন্ন দফতরের পরিচালকরা ছিলেন ছুটিতে, করছেননা অফিস। এমন পরিস্থিতিতে রোববার থেকে সারাদেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললেও ইবির শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়নি। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রশাসনিক কাজেও বিরাজ করছে স্থবিরতা। তাই দ্রুত যোগ্য ও সৎ উপাচার্য নিয়োগের মাধ্যমে ক্যাম্পাসে শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ নিশ্চিতের দাবি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের।
জানা গেছে, ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন সিন্ডিকেট সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়। তাই নিয়মানুযায়ী সিন্ডিকেট সভার মাধ্যমেই শিক্ষা কার্যক্রম চালুর সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন (ধারা-১১) অনুযায়ী উপাচার্য এবং উপাচার্যের অনুপস্থিতিতে উপ-উপাচার্য সিন্ডিকেট সভা আহবান করতে পারেন। এদিকে গত ৮ আগস্ট পদত্যাগ করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া। পদগুলো বর্তমানে শূন্য। তাই নতুন উপাচার্য নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষা স্বাভাবিকভাবে শুরু হচ্ছে না। এতে সেশনজটের সঙ্কায় রয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, করোনার সময় শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে। সেটি কাটিয়ে না উঠতেই ফের দীর্ঘ ছুটিতে শিক্ষা কার্যক্রম নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। উপাচার্যহীন বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখা দিয়েছে অচলাবস্থা। তাই অবিলম্বে যোগ্য নতুন উপাচার্য নিয়োগ দিয়ে ক্যাম্পাসের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতের দাবি তাদের।
এদিকে পদত্যাগ করেছেন প্রক্টর ও ছাত্র উপদেষ্টাও। প্রক্টরিয়াল বডির অনুপস্থিতিতে ক্যাম্পাসের সার্বিক নিরাপত্তা রয়েছে হুমকিতে। হলগুলোতে অনুপস্থিত হল প্রশাসনও। তবে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় হলগুলোতে শিফট করে ২৪ ঘণ্টা পাহারা দিচ্ছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের নানাবিধ অসুবিধায় সহযোগিতাও করছেন তারা।
এদিকে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিস ও একাডেমিক শাখায় মূল সনদপত্র উত্তোলন, বিভিন্ন বিভাগের রেজাল্ট, হল পরিবর্তন, পুনঃভতি ও মানোন্নয়ন পরীক্ষাসহ উপাচার্যের অনুমোদন নির্ভর বিভিন্ন কাজ আটকে আছে। অন্যদিকে রেজিস্ট্রার না থাকায় রেজিস্ট্রার অফিসের প্রায় সকল কাজ বন্ধ রয়েছে। পরিচালক শূন্যতায় হচ্ছেনা অর্থ ও হিসাব শাখার কাজও।
এসব বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক ডিনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তারা দ্রুত ক্লাস-পরীক্ষা শুরুর জন্য সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ জানিয়েছেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য ও উপ-উপাচার্য না থাকায় ক্লাস-পরীক্ষা কখন চালু হবে বলা যাচ্ছে না।
সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এ কে এম মতিনুর রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ক্লাস-পরীক্ষা এবং হলসমূহ বন্ধ হয়েছে। তাই সিন্ডিকেটের মাধ্যমেই ক্লাস-পরীক্ষা শুরুর সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আশা করি, সকল সংকট কাটিয়ে উঠতে দ্রুত উপাচার্য নিয়োগ দেবে সরকার।
এমআই