সময় জার্নাল ডেস্ক:
দারুননাজাত একাডেমিতে ক্ষুদে বিজ্ঞানীদের অংশগ্রহণে আকর্ষণীয় বিজ্ঞান মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাজধানীর ডেমরার মাতুয়াইল ক্যাম্পাসে ২৪ আগস্ট শনিবার সকালে এই মেলা হয়।
বিজ্ঞান মেলার উদ্বোধন করেন সংবিধান বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট ব্যারিস্টার এ বি এম ছিদ্দিকুর রহমান খান। উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি বলেন, 'বিজ্ঞান মেলার মতো আয়োজন শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞানমুখী করে, তাদের মাঝে প্রযুক্তির প্রসার ঘটায়, তাদের সমাজ ও রাষ্ট্রের সংকট সমাধান অনুসন্ধানে উদ্বুদ্ধ করে।
এসব আয়োজনে শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ দেখা যায়। শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞানের প্রতি তাদের এই আগ্রহ ধরে রাখতে সক্ষম হলে এদেশেই সৃষ্টি হবে যুগশ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী। এ আয়োজনের মাধ্যমে ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞান বিষয়ে আগ্রহী করে তুলে নিঃসন্দেহে দারুননাজাত একাডেমি প্রশংসার দাবি রাখে।'
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বক্তারা বলেন, বিজ্ঞান চর্চায় শিক্ষার্থীদের উদ্বুদ্ধ করতে বিজ্ঞান মেলার আয়োজন করা হয়। এ আয়োজন শিক্ষার্থীদের মেধা, সৃষ্টিশীলতা বিকাশে নিঃসন্দেহে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। বর্তমান বিজ্ঞানের যুগ, রোবোটিক্সের যুগ, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের যুগ। বিশ্বকে নেতৃত্ব দিতে হলে অবশ্যই জ্ঞান-বিজ্ঞানে অগ্রণি ভূমিকা পালন করতে হবে।
অনুষ্ঠানের সভাপতি ও অত্র প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ মাওলানা মু. জিয়াউল হক বলেন, 'আধুনিক যুগোপযোগী শিক্ষা কারিকুলাম বাস্তবায়নের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের পুঁথিগত বিদ্যার সমান্তরালে বিজ্ঞানকে তাদের নিকট শিক্ষণীয় ও আকর্ষণীয়ভাবে উপভোগ্য এবং বিজ্ঞান শিক্ষার প্রতি আকর্ষণ সৃষ্টির লক্ষ্যে নিয়মিত বিজ্ঞান মেলার মতো সময়োচিত অনুষ্ঠান আয়োজন করতে দারুননাজাত একাডেমি দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।'
বিজ্ঞান মেলার আয়োজনে শিক্ষার্থীরা বেশ আনন্দিত ও উৎফুল্ল। তারা বলেন, দারুননাজাত একাডেমি নিয়মিতই আমাদের নিয়ে বিভিন্ন প্রতিযোগিতা ও অনুষ্ঠান আয়োজন করে আসছে। এর মাধ্যমে নতুন বিষয় জানা ও শেখার আগ্রহ আমাদের মাঝে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
মেলা প্রাঙ্গন ছোট ছোট স্টল দিয়ে সাজানো হয়েছে। স্টলগুলোতে নিজেদের 'আবিষ্কার' নিয়ে ক্ষুদে বিজ্ঞানীরা তাদের আবিষ্কারের সুফল তুলে ধরছে।
শিক্ষকরা জানান, মেলায় শিক্ষার্থীদের ছোট ছোট আবিস্কার যে কাউকে অভিভূত করবে। Global warming & Climate Change, Laser Homes Security & Blind Man Glass, Photosynthesis, Solar System থেকে শুরু করে বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখার আবিস্কার মেলায় স্থান পেয়েছে।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রতি সন্তানের আগ্রহ অভিভাবককেও গর্বিত করেছে। এ ধরনের আয়োজনের উদ্যোগ গ্রহণে তারা দারুননাজাত একাডেমি কর্তৃপক্ষের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
অভিভাবক শফিকুর রহমান বলেন, 'দারুননাজাত একাডেমি শিক্ষার্থীদের উন্নয়নে নানামুখী প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। নিয়মিত শ্রেণি কার্যক্রমের পাশাপাশি কুইজ প্রতিযোগিতা, বিতর্ক, মাসনুন দোয়া, কেরাত, ইসলামি সংগীত, চিত্রাঙ্কন, কুইজ ইত্যাদি প্রতিযোগিতা, ইসলামিক কালচারাল প্রোগ্রামসহ নানা ধরনের সহপাঠ্যক্রমের আয়োজন করে চলেছে। প্রতিষ্ঠানটি সর্বশেষ আয়োজন করলো 'জানবো সবাই শিখবো সবাই' কুইজ প্রতিযোগিতা। এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে শিক্ষার্থীরা কাঙ্ক্ষিত যোগ্যতা নিয়েই বড় হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।'
জলবায়ু পরিবর্তন এবং বৈশ্বিক উষ্ণায়ন নিয়ে প্রজেক্ট প্রস্তুত করেন মুহাম্মদ হাবিবুর রশিদ, তাহমিদ জুহায়ের, মাহি-উল-আরিফিন, আব্দুল্লাহ আন নাফি, মো: জাবির হোসাইন, আবদুর রহমান ফারহান। প্রজেক্টের সংক্ষিপ্ত বিবরণে দলনেতা মুহাম্মদ হাবিবুর রশীল বলেন, 'জলবায়ু পরিবর্তন এবং বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণ ও প্রভাব তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে এ প্রজেক্টে। একদিকে দেখানো হয়েছে টারবাইন ও সৌর প্যানেলের ব্যবহারের মাধ্যমে বিদুৎ উৎপাদন, প্রাকৃতিক সবুজ-শ্যামলিমায় মানুষ, স্থলজ ও জলজ প্রাণির বেড়ে উঠা।
অন্যদিকে, নির্বিচারে বৃক্ষনিধন, যত্রতত্র দৈনন্দিন ও কারখানার বর্জ্য অপসারণ এবং মিলস-ফ্যাক্টরি, যানবাহন থেকে নির্গত কার্বন ডাই অক্সাইড, মিথেন, নাইট্রোজেন অক্সাইড, কার্বন মনোক্সাইড সহ অন্যান্য ক্ষতিকর গ্যাস কিভাবে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ঘটিয়ে ক্রমান্বয়ে বন্যা, খড়া, নদী ভাঙন, ভূমিধস সহ অন্যান্য প্রাকৃতিক বিপর্যয় বয়ে আনতে পারে তা দেখানো হয়েছে।'
মেলা শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত হয়ে। বিজ্ঞান মেলায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের মাঝে সনদ ও শিক্ষা উপকরণ
সময় জার্নাল/এলআর