মুহা: জিললুর রহমান, সাতক্ষীরা প্রতিনিধি:
বৈষম্যহীন নীতি অনুকরণে রাজস্ব আহরণের রেকর্ড তৈরি হয়েছে ভোমরা স্থল বন্দরে। দখল আর চাঁদাবাজ সিন্ডিকেট বিলুপ্ত হওয়ায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে ফিরেছে প্রাণচাঞ্চল্যতা, বেড়েছে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য। ফলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ৫৩ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে ভোমরা বন্দরে।
ভোমরা স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) গত ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে ভোমরা বন্দরে ৮৫৩ কোটি ৯৯ লাখ টাকা রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে। ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের শুরুতে জুলাই মাসে রাজস্ব অর্জিত হয় ৬০ কোটি ৮৬ লাখ ৭ হাজার ৫৫২ টাকা। এছাড়া আগস্ট মাসে ৮৮ কোটি ৩৬ লাখ ৭৩ হাজার ৮৩৩ টাকা, সেপ্টেম্বর মাসে ৪৭ কোটি ৯৯ লাখ ১৮ হাজার ৬৫৭ টাকা, অক্টোবর মাসে ৬৫ কোটি ২ লাখ ১৩ হাজার ৫১৪ টাকা, নভেম্বর মাসে ৭৯ কোটি ৬৬ লাখ ৬ হাজার ২৫৪ টাকা ও ডিসেম্বর মাসে ৫৪ কোটি ৩২ লাখ ৫২ হাজার ৬৪ টাকা। অর্থ বছরের শেষ ছয়মাসে অথ্যাৎ ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে ৪৮ কোটি ৮৪ লাখ ৯৫ হাজার ৮১৩ টাকা, ফেব্রæয়ারি মাসে ৬৩ কোটি ৩২ লাখ ৩৬ হাজার ২৬০ টাকা, মার্চ মাসে ১৬৬ কোটি ৪৮ লাখ ৭ হাজার ৪৬৩ টাকা, এপ্রিল মাসে ১১১ কোটি ৩০ লাখ ৫৮ হাজার ৫১৩ টাকা, মে মাসে ৬৯ কোটি ৬৩ লাখ ৬৩ হাজার ৫১৩ টাকা, এবং অর্থবছরের শেষ জুন মাসে ৫১ কোটি ৭৫ লাখ ৮৪ হাজার ৪৪৯টাকা রাজস্ব অজিত হয়েছে। ফলে ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে মোট রাজস্ব আদায় হয়েছে ৯০৭ কোটি ৫৮ লাখ ১৭ হাজার ৮৮৫ টাকা । যা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের বেঁধে দেওয়া লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫৩ কোটি ৫৯ লাখ ১৭ হাজার ৮৮৫ টাকা বেশি রাজস্ব অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে ভোমরা বন্দর।
এদিকে বন্দরের আমদানি-রপ্তানি বানিজ্য বৃদ্ধি সম্পর্কে জানতে চাইলে ব্যবসায়ীরা জানান, বৈশ্বিক মন্দা আর ডলার সংকটের কারণে এলসি (ঋণপত্র) খুলতে না পারায় আমদানী বাণিজ্যে নেতিবাচক প্রভাব তৈরি হয়েছে। তাছাড়া বিগত সময়ে সিএন্ডএফ
এজেন্টস এ্যাসোসিয়েশনের অর্থ ক্ষমতালিপসু কথিত দখলবাজদের নিয়ন্ত্রণে ছিল ভোমরা বন্দর। এমন কোন ক্ষেত্র ছিলনা যেখানে নৈরাজ্যের ছায়া পড়েনি। ফলে চাঁদাবাজদের প্রভাব বিস্তারে অধিকাংশ ব্যবসায়ীরা বন্দর ছাড়তে বাধ্য হয়েছিল। এমনই দুর্বিসহ পরিস্থিতির মধ্যেও আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য সচল রেখেছেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা।
ভোমরা কাস্টমসের সহকারি কমিশনার মতলেবুর রহমান জানান, অন্তরবর্তী সরকারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছে কাস্টমস প্রশাসন। কোন অনিয়ম দুর্নীতি করার সুযোগ না থাকায় বন্দরে তৈরি হয়েছে ব্যবসাবান্ধব অনুকূল
পরিবেশ। ব্যবসায়ীরা স্বচ্ছতার নিরিখে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য পরিচালনা করায় বৃদ্ধি পেয়েছে রাজস্ব প্রবৃদ্ধি।
তিনি আরও বলেন, বৈশ্বিক মন্দা আর ডলার সংকট অবস্থার উন্নতি হলে এ বন্দরে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বৃদ্ধি পাবে এবং রাজস্ব অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
এমআই