সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪

চারুকলার পরিচালক ও প্ল্যানিং কমিটির পদত্যাগ চায় শিক্ষার্থীরা

সোমবার, সেপ্টেম্বর ২, ২০২৪
চারুকলার পরিচালক ও প্ল্যানিং কমিটির পদত্যাগ চায় শিক্ষার্থীরা

চবি প্রতিনিধি:

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা দুঃশাসন, অব্যবস্থাপনা ও বৈষম্যের  আভিযোগে চারুকলার পরিচালক ও প্লানিং কমিটির পদত্যাগ দাবি করেছেন।

সোমবার (১ আগষ্ট) এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যামে এই দাবি জানান চারুকলা বিভাগের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়,চারুকলা ইন্সটিটিউট চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালক সুফিয়া বেগম ২০২২ সালে এই পদে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই নজিরবিহীন দুঃশাসন, অব্যবস্থাপনা ও বৈষম্য আচরণ চালিয়ে আসছেন। বিগত ২০২২-২০২৩ সালে শিক্ষার্থীদের এক দফা দাবি 'চারুকলাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ভূখন্ডে প্রত্যাবর্তন চাই আন্দোলনকে তৎকালীন সরকারের রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সাথে লিয়াজোঁ থেকে ক্ষমতার অপব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের দমন করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, সহ সকল দায়ভার নেওয়া কর্তাব্যক্তিই এই দাবির যৌক্তিকতা স্বীকার করলেও নানান তালবাহানা দেখান। অতঃপর, স্বৈরাচারী শাসক সাবেক সরকার প্রধান শেখ হাসিনার স্বাক্ষর নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চারুকলাকে স্থানান্তর করা হয়েছিল বলে সবাই নানান ছুতোর আশ্রয় নেন। তৎকালীন অর্থবছরে সরকারের বাজেট স্বল্পতাকে কারণ দেখিয়ে ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে এই দাবি পূরণ সম্ভব না ঘোষনা করেন। কিন্তু তারপরও শিক্ষার্থীরা স্থানান্তর প্রক্রিয়া শুরু করার দাবি নিয়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন জারী রাখলে তাতে ক্ষমতাশীল দলের পেটুয়া বাহিনী দিয়েও হামলা করা হয় শিক্ষার্থীদের। আন্দোলনের ১০০ তম দিন, ১০ই ফেব্রুয়ারী ২০২৩ইং বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ মিনারে শান্তিপূর্ণ অবস্থান ও গণস্বাক্ষর কর্মসূচিতে ছাত্রলীগের সন্ত্রাস বাহিনী তথা, বিরিয়ানি বাহিনী ভাড়া করে হামলা করা হয় শিক্ষার্থীদের উপর। এতে কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেলের শরণাপন্ন হয়। তারমধ্যে দুইজন নারী শিক্ষার্থীও আহত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেলে যায়। শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আজ.ম নাসির উদ্দীন, চারুকলা ইনস্টিটিউটের পরিচালক সুফিয়া বেগম এবং তৎকালীন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও প্রক্টর এই হামলার সাথে সরাসরি জড়িত। এসময় ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের হাতে এক নারী সাংবাদিক কর্মীও হেনাস্তা হয়। সেসময় ফ্যাসিস্ট সরকারের সাবেক শিক্ষামন্ত্রী দীপুমনি ও শিক্ষাপ্রতিমন্ত্রী নওফেল এই হামলার স্বীকার হয় শিক্ষার্থীরা

আন্দোলন প্রতিহত করতে হমকি ও ভীতিপ্রদর্শন করে জোরপূর্বক ইন্সটিটিউট খুলে দেওয়ারও ঘোষণা দেয়। যা প্রত্যাখ্যান করে পুনরায় আন্দোলনে যায় শিক্ষার্থীরা।

সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তে শিক্ষার্থীদের জন্য চারুকলা ইন্সটিটিউট বন্ধ করে দিয়ে সংস্কারের নামে সরকারি অর্থায়নেও দূর্নীতি করে পরিচালক মহোদয়। যার দরুন সংস্কার মূলক কোন কাজ দৃশ্যমান হয়নি। মার্চ ২০২৩ এর শুরুতে চারুকলা ইন্সটিটিউটের শিক্ষা-কার্যক্রম শুরু হলেও দেড় বছরের অধিক সময়েও বর্তমান পরিচালক শিক্ষার্থীদের মৌলিক প্রয়োজন খাবারের চাহিদা অর্থাৎ ক্যান্টিন ও ডাইনিং পর্যন্ত চালু করার আগ্রহ দেখায়নি। ফ্যাসিস্ট সরকার যেভাবে মেট্রোরেল বন্ধ রেখে দেশবাসীকে কষ্ট দিতে চেয়েছিল, তেমন ভাবে ক্যান্টিন, বন্ধ রেখে, চারুকলার শিক্ষার্থীদের শিল্পী হওয়ার প্রয়োজন নেই এমন নানান বক্তব্য দিয়ে ক্লাসরুম ব্যবহারের সুবিধা হ্রাস করে। ক্লাসের সময় কমিয়ে, শিক্ষার্থীবান্ধব কর্মচারী এমনকি শিক্ষার্থীবান্ধব যে কয়জন শিক্ষক আছেন, তাদের হেনস্তার মাধ্যমে চারুকলায় অঘোষিত স্বৈরাচারী ব্যবস্থা চালু রেখেছেন বর্তমান পরিচালক সুফিয়া বেগম এবং প্ল্যানিং কমিটিতে থাকা তার স্বামী অধ্যাপক জসিম উদ্দীন। বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের সাথে লেয়াজু করে স্বৈরাচারী সাবেক প্রধানমন্ত্রীর স্বাক্ষর নিয়ে ২০১০ সালে মূল ক্যাম্পাস থেকে চারুকলাকে স্থানান্তর করে বিশ্ববিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অধিকার স্থির করেন অধ্যাপক জসিম উদ্দীন। যিনি তৎকালীন চারুকলা বিভাগের পরিচালক ছিলেন। একই দলিল দিয়ে তিনি ও বর্তমান পরিচালক তথা তার স্ত্রী সুফিয়া বেগম সহ আরো কয়েকজনকে চারুকলা কলেজের শিক্ষক থেকে অবৈধ পন্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসাবে নিযুক্ত করার পথ নিশ্চিত করেন এবং তারাই বর্তমানে চারুকলা ইনস্টিটিউটের প্ল‍্যানিং কমিটির অন্যতম সদস্যবৃন্দ। যে প্লানিং কমিটি আদতে চারুকলার শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ ব্যপ্তি রেখে স্বৈরাচারী স্বার্থেই নিযুক্ত আছে।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সুবাদে যেসকল প্রতিশ্রুতিবদ্ধ সুবিধা দেওয়ার কথা ছিল যেমন -বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাস থেকে চারুকলা ইন্সটিটিউটের যাতায়াতের বাস সংকট নিরসন। মেয়েদের জন্য ছাত্রী হোস্টেল তৈরি, ছেলেদের হোস্টেলের আসন বৃদ্ধি, ক্যান্টিন ও হোস্টলের জন্য ডাইনিং ব্যবস্থা চালু সহ শিক্ষার্থীদের মৌলিক সুবিধা নিশ্চিত করতেও এই প্রশাসন অপারগতার পরিচয় দিয়েছে। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের সাথে দুর্ব্যবহার, মনগড়া আইনকানুন তৈরি ও তার প্রয়োগ, ব্যবহারিক পুনঃপরীক্ষা বন্ধ করা, ব্যাক্তিগত রোধের কারণে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় বসতে না দেওয়া, ক্লাসরুম ও পরীক্ষার হলে মানসিকভাবে হেনস্তা করা, ফলাফল মূল্যায়নে অসংখ্যবার কারচুপি, আন্দোলনে অংশগ্রহণ ও নেতৃত্ব দেওয়া শিক্ষার্থীদের ইচ্ছাকৃতভাবে পরীক্ষার ফলাফলে অবমূল্যায়ন করা, অপরদিকে ক্ষমতাশীল বিশেষ ছাত্রলীগ কর্মীকে পরীক্ষায় নকল সহ নানান সুবিধা দিয়ে বৈষম্যের নজির রেখে গেছেন পরিচালক সুফিয়া বেগম। তার প্রশাসনের অন্যতম। আরেকটি ব্যর্থতা সেশনজট তৈরি। অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত ও ফলাফল প্রকাশে নিলম্বের কারণে চারুকলা ইন্সটিটিউট বর্তমানে চরম সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে।এসবের পাশাপাশি সর্বশেষ বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন সময়ে পরিচালক ও তার সিন্ডিকেট নীরব ভূমিকা পালন করে ও শিক্ষার্থীদের পর্যন্ত নিরাপত্তা নিশ্চিৎ করতেও ব্যর্থ হয়।

এমআই 


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল