জাহিদুল ইসলাম, রাবি প্রতিনিধি
সীমান্তে হত্যা ও ভারতীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী কর্তৃক বাংলাদেশকে হুমকির প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবন সংলগ্ন প্যারিস রোডে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা।
এ সময় শিক্ষার্থীরা 'ফেলানী থেকে স্বর্ণা, স্বর্ণা থেকে জয়ন্ত, তারপর?', 'সীমান্তে আর কত বাংলাদেশী মারবে ভারত?', 'ফেলানী থেকে শ্রী জয়ন্ত, বাংলাদেশ আর কতকাল থাকবে ঘুমন্ত?', 'বন্ধু প্রতিবেশী না বৈরী প্রতিবেশী? মি. মোদী কী চান?', 'পাক-চীন সীমান্তে কাপো থরো থরো, বাংলার সীমান্তে কেন শিশু মারো?' ইত্যাদি স্লোগান ও লেখা সংবলিত প্লাকার্ড প্রদর্শন করেন।
প্রতিবাদ সমাবেশের সাথে সংহতি প্রকাশ করে অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, 'আমাদের নিরস্ত্র সাধারণ নাগরিকের উপর সীমান্তে যেভাবে হত্যা হচ্ছে এটি সুস্পষ্ট আমাদের সার্বভৌমত্বের উপরে তাদের হস্তক্ষেপ। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই। রাষ্ট্রীয়ভাবে আমাদের আরও শক্ত প্রতিক্রিয়া জানানো উচিত। আমাদের পররাষ্ট্রনীতির মূল লক্ষ্য হলো কারো সাথে বৈরিতা নয় সকলের সাথে বন্ধুত্ব। কিন্তু সেটি সত্যিকারের বন্ধুত্ব, কোন ব্যক্তির সাথে ব্যক্তির বন্ধুত্ব নয়। সেটি জনগণের সাথে আরেকটি দেশের জনগণের বন্ধুত্ব। কিন্তু ভারত বাংলাদেশের জনগণ থেকে অনেকটা দূরে সরে গেছে।'
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক তারেক তৌফিকুর রহমান ভারতীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং এর বক্তব্যের প্রতিবাদ করে বলেন, 'মি. রাজনাথ সিং মধ্যপ্রাচ্যে হামাস-ফিলিস্তিনের সাথে ইসরায়েলের সাথে যুদ্ধ ও রাশিয়া- ইউক্রেনের যুদ্ধের সাথে বাংলাদেশের তুলনা করেছেন এবং ভারতীয় সেনাবাহিনীকে প্রস্তুত থাকার কথা বলেন। এ ধরনের আহ্বান অত্যন্ত জঘন্য, নিন্দনীয় ও আন্তর্জাতিক আইন খেলাপী আচরন। আমরা বাংলাদেশের জনগণের পক্ষ থেকে তার বক্তব্যের তীব্র ঘৃণা ও নিন্দা জানাই। আমরা তাকে 'শাট-আপ' কল দিয়ে জানাতে চাই আপনি আপনার অসংলগ্ন উচ্চারণ বন্ধ করুন।'
কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মার বলেন, 'গজলডোবার বাধ খুলে দিয়ে, সীমান্তে মানুষ হত্যা করে তারা আমাদের বন্ধুত্বের নমুনা দিচ্ছে! আমরা তাদের বন্ধু রাষ্ট্র বলে হাজার হাজার টন ইলিশ পাঠাচ্ছি বিনিময়ে তারা আবরার ফাহাদ, স্বর্ণা দাস ও জয়ন্তকে উপহার দিচ্ছে। আমরা স্পষ্টভাবে জানাচ্ছি কোনো দেশের সাথে ব্যাক্তিকেন্দ্রীক সম্পর্ক চাই না। প্রশাসনিক বন্ধুত্ব প্রশাসনিকভাবে চলবে। হাসিনার সাথে মোদির বন্ধুত্বের পরিবর্তে আমরা বাংলাদেশের সাথে ভারতের বন্ধুত্ব চাই।'
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী নাফিস আহমেদের সঞ্চালনায় প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী এ কর্মসূচিতে অংশ নেয়।
সময় জার্নাল/এলআর