মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৪

শিক্ষা দিবসে শিক্ষার্থীদের ভাবনা

মঙ্গলবার, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৪
শিক্ষা দিবসে শিক্ষার্থীদের ভাবনা

মো. জুবায়ের ইসলাম, তিতুমীর কলেজ:

আজ ১৭ সেপ্টেম্বর মহান শিক্ষা দিবস। ১৯৬২ সালের এই দিনে পাকিস্তানি শাসন, শোষণ ও শিক্ষা সংকোচন নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে শহীদ হন ওয়াজিউল্লাহ, গোলাম মোস্তফা, বাবুলসহ নাম না-জানা অনেকেই। তাদের স্মরণে এই দিনকে শিক্ষা দিবস হিসেবে পালন করা হয়।

স্বৈরশাসক আইয়ুব খান ক্ষমতা দখলের মাত্র ২ মাস পর ১৯৫৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একটি শিক্ষা কমিশন গঠন করেন। শরীফ কমিশন নামে খ্যাত এসএম শরীফের নেতৃত্বে গঠিত এই কমিশন ১৯৫৯ সালের ২৬ আগস্ট তাদের প্রতিবেদন পেশ করে। এতে শিক্ষা বিষয়ে যেসব প্রস্তাবনা ছিল তা প্রকারান্তরে শিক্ষা সংকোচনের পক্ষে গিয়েছিল। আইয়ুব সরকার এই রিপোর্টের সুপারিশ গ্রহণ এবং তা ১৯৬২ সাল থেকে বাস্তবায়ন করতে শুরু করে। বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন আইয়ুবের এই শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়।

বর্তমানে জাতীয় শিক্ষাক্রম রুপরেখা - ২০২১ অনুযায়ী ২০২২ সালে পরীক্ষা মূলক ভাবে নতুন পাঠ্যক্রম চালু করা হয়। কিন্তু নতুন এই শিক্ষা কারিকুলাম নিয়ে অনেক বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষার্থী চায় নতুন শিক্ষা ব্যবস্থার পরিবর্তন হোক। তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা শিক্ষা দিবস নিয়ে কি ভাবছে, টা তুলে ধরেছে মো. জুবায়ের ইসলাম।

 তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী মো. শিহাব সারার উজ্জ্বল বলেন, শিক্ষা এমন একটি মৌলিক অধিকার যেটা দিয়ে মানুষ নিজের যোগাযোগ, চাহিদা, বোধ, আবেগ, জ্ঞান প্রকাশ করতে পারবে। নিজের ভালো - মন্দ বুঝতে পারবে। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা স্বাধীনতার পর থেকে একভাবেই চলে আসছে যেখানে শুধু মুখস্থ বিদ্যার ভিত্তিতে মূল্যায়ন করা হয়। কোনো গঠনমূলক, কারিগরি শিক্ষার প্রচলন খুব একটা নেই আমাদের দেশে। ছোটকাল থেকেই আমাদের বাবা মা একটি নির্দিষ্ট শিক্ষার ভিতরে ঠেলে দেয় আমাদের। আমরা জানিই না আমরা বড় হয়ে কি হবো। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা এমন হওয়া উচিত যেখানে আমরা নিজের ইচ্ছাতে প্রয়োজনের ভিত্তিতে শিক্ষা নিতে পারবো। কিছু কিছু জায়গায় সাম্প্রদায়িকতার কারণে অনেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে না। আমাদের সকলের জন্য শিক্ষা উন্মুক্ত হওয়া উচিত। আমাদের জীবনের জন্য যেই শিক্ষা প্রয়োজন সেটা বাস্তবায়িত করা দরকার। যেই শিক্ষা ব্যবস্থায় পড়ে জীবনের কোনো কাজে আসবে না সেই শিক্ষা ব্যবস্থার সংস্কার করা হোক। যেই শিক্ষা ব্যবস্থা কারিগরি ভিত্তিক, অভিজ্ঞতা ভিত্তিক, আদর্শিক হবে সেই শিক্ষা ব্যবস্থা কায়েম করা প্রয়োজন। 

তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী মো. আল আমিন বলেন, শিক্ষা নিয়ে আমরা চাই বাংলাদেশে নতুন যে কারিকুলাম হয়েছে এটা অতিসত্তর একটা পরিবর্তন দরকার। আমরা দেখেছি যে স্কুল পর্যায়ে গ্রুপিং গুলো তুলে নেওয়া হয়েছে , এতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হ-য-ব-র-ল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। আমরা গত ১ বছরে যেই পরিবর্তন দেখেছি সেগুলোর পরিবর্তে আমাদের ইংরেজি ভার্সন এর যে কারিকুলাম রয়েছে সেই হিসেবে যাতে বাংলাদেশের শিক্ষা কারিকুলামে সংস্কার করা হয় এটাই আমার প্রত্যাশা।

তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী নাঈম হাসান বলেন, শিক্ষা ব্যবস্থায় আমাদের মূল সমস্যা , এখানে যেই জ্ঞান অর্জন আমাদের প্রয়োজন সেগুলো আমাদের শিখানো হয় না। অনার্স শেষ করার পর আমরা জানি না আমাদের ভবিষ্যৎ কি হবে। উন্নত দেশগুলো তে ১৮ বছর বয়সের পরই তারা নিজেদের পায়ে দাঁড়াতে পারে। কিন্তু আমরা ২৫ বছর বয়স হয়ে গেলেও ফ্যামিলি থেকে টাকা আনতে হয়। 

তিনি আরো বলেন, আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় বৈষম্যের কারণে সবাই সমান সুযোগ পেয়ে থাকে না। দেখা গেছে একই ক্লাসে পড়াশুনা করে করো বাবা নিম্নস্তরের কর্মকর্তা, আবার কারো বাবা উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। এতে উভয়ের মাঝে মৌলিক অধিকার প্রাপ্তির বিশাল ব্যবধান দেখা যায়। উচ্চপদস্থ লোকের ছেলেমেয়েরা ক্লাস ১০ এর পরেই বিদেশ চলে যায়, দেশে ব্যাক করে না আর। আর এদিকে নিম্নস্তরের লোকের ছেলেমেয়েরা দেশে বিসিএস এর জন্য বসে থাকে। তো যে বেশি সুযোগ সুবিধা পায় তার দেশের জন্য কোনো ভূমিকা থাকে না। আর যারা দেশের জন্য ভূমিকা রাখে তারা সুযোগ সুবিধা পায় না ঠিক মতো। তো শিক্ষার এই বৈষম্য আমাদের দেশে সংস্কার করা দরকার।

তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী আল নোমান নিরব বলেন, সেকুলার পন্থী শিক্ষা কারিকুলাম আমরা চাই না। সেকুলার পন্থী করে ব্যবস্থায় পশ্চিমা বিশ্বের কালচার আমাদের মধ্যে ঢুকে পড়ছে। তিনি বলেন, নতুন যে শিক্ষা কারিকুলাম হয়েছে সেটি বাতিল করতে হবে। নতুন করে বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা করতে হবে যেখানে কোনো ধর্ম নিরপেক্ষ নিয়মনীতি থাকবে না। পশ্চিমা অপসংস্কৃতি যেগুলো আমদানি হচ্ছে সেগুলো দূর করে নতুন শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারলে আমাদের অনেক উপকার হবে।

এমআই


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল