অ আ আবীর আকাশ, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি:
গত ক'দিনের টানা ভারী বৃষ্টিপাতে লক্ষ্মীপুরে আবার বন্যা হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। জেলার বিভিন্ন স্থান বৃষ্টির পানিতে আবার তলিয়ে গেছে রাস্তাঘাট, বাড়ির উঠান পানিতে নিমজ্জিত হয়ে আছে। যদিও গেল বন্যার পানি এখনো নামেনি। অনেক স্থানে ঘরবাড়ি এখনো জলাবদ্ধতায় পানি আক্রান্ত রয়েছে।
গত কয়েকদিনে বন্যা কবলিত এলাকার পানি নামতে শুরু করলেও এখন আবার ওই সব এলাকা বন্যার কবলে পড়েছে। কেউ কেউ আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বাড়িতে ফিরে গেলেও আবার বন্যা দেখা দেওয়ায় আশ্রয়কেন্দ্রের দিকে ছুটছেন।
সদর উপজেলার দালাল বাজার এলাকার বাসিন্দা ইমতিয়াজ আহমেদ বুলবুল জানান, তাদের এলাকা থেকে বন্যার পানি নেমে গিয়ে আবার বৃষ্টির পানিতে উঠান ও রাস্তা তলিয়ে গেছে। ঘর-বাড়ী এখনো পানি আক্রান্ত। কোথাও বের হওয়ার জো নেই।
মান্দারী ইউনিয়নের যাদৈয়া গ্রামের বাসিন্দা নুর হোসেন অ আ আবীর আকাশকে বলেন, আমাদের বাড়িঘরে বন্যার পানি ছিল। গত তিনদিন আগে বাড়ির উঠান থেকে পানি নেমে যায়।
কিন্তু গত দুদিনের বৃষ্টিতে আবার উঠানে পানি উঠে গেছে। এলাকার পাকা সড়কের কোনো কোনো স্থান তলিয়ে গেছে। দুই-তিনদিন আগে এলাকার অনেকে আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বাড়ি ফিরেছেন। কিন্তু ফের পানি ওঠায় তারা আবার আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন। আবার বন্যা দেখা দেওয়ায় নতুন করে সংকট দেখা দিয়েছে।
লক্ষ্মীপুর পৌর এলাকার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা জান্নাত এ প্রতিবেদককে বলেন, বাড়ির রাস্তায় থাকা বন্যার পানি পুরোপুরি নেমে গিয়ে আবার বৃষ্টির পানি জমে গেছে। নিচু এলাকাগুলোতে আগের বন্যার পানিই এখনো পুরোপুরি যায়নি, এর মধ্যে আবার ভারী বৃষ্টি হচ্ছে, ফলে পানি কমছে না। রাস্তায় হাঁটু পানি জমেছে।
সদর উপজেলার বাঙ্গাখাঁ গ্রামের বাসিন্দা নুর মোহাম্মদ বলেন, আমাদের এলাকার বন্যার পানি এখনো পুরোপুরি নামেনি। এরই মধ্যে বৃষ্টির পানিতে আবার বন্যা দেখা দিয়েছে। কোথাও হাঁটু পানি, কোথাও কোমর পানি উঠেছে। আবার দুর্ভোগ পোহাতে হবে।
এদিকে জেলার রামগতি আবহাওয়া অফিস জানায়, রামগতিতে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৩৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়।
আবহাওয়া পূর্বাভাসে জানিয়েছে, রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার অঞ্চলের ওপর দিয়ে দক্ষিণ/দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০-৬০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি/বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ২ নম্বর নৌ হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
রামগতি আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র আবহাওয়া অবজারভার সোহরাব হোসেন অ আ আবীর আকাশকে বলেন, শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকাল ৬টা থেকে রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ৬টা পর্যন্ত ১৩৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
তিনি জানান, বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপ থাকায় বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে। এছাড়া আসন্ন পূর্ণিমাতেও ভারী বৃষ্টিপাত হবে। পূর্ণিমার প্রভাবে মেঘনা নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েক মিটার উচ্চতায় বাড়বে।
সময় জার্নাল/এলআর