নিজস্ব প্রতিনিধি:
সংস্কারকাজ সম্পূর্ণ করার জন্য বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি সমর্থন দেয়ার সংকল্প ব্যক্ত করেছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেয়া সাক্ষাতকারে তিনি এই মন্তব্য করেন। রয়াটার্স জানায়, গত আগস্ট মাসের প্রথম দিকে জেনারেল ওয়াকার এবং তার সৈন্যরা হাসিনার বিরুদ্ধে ছাত্রদের নেতৃত্বাধীন প্রবল বিক্ষোভে তাদের পাশে দাঁড়ায় এবং এর মাধ্যমে হাসিনার ১৫ বছরের ক্ষমতায় থাকার পর অপসারণ নিশ্চিত হয়ে যায়, তিনি প্রতিবেশী ভারতে পালিয়ে যান।
রাজধানী ঢাকায় গতকাল এই সাক্ষাতকার নেয়া হয় বলে রয়টার্স জানায়। জেনারেল ওয়াকার বলেন, নোবেল পুরস্কারজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকারের অন্তর্বর্তী প্রশাসনের প্রতি তার পূর্ণ সমর্থন রয়েছে।
জেনারেল ওয়াকার বলেন, 'আমি তার পাশে দাঁড়াব। যাই ঘটুক না কেন। যাতে তিনি তার মিশন সম্পন্ন করতে পারেন।
উল্লেখ্য, ইউনূস বিচার বিভাগ, পুলিশ, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে অত্যাবশ্যক সংস্কার, দেশে একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
হাসিনার বিদায়ের অল্প কয়েক সপ্তাহ আগে সেনাপ্রধানের দায়িত্ব গ্রহণকারী জেনারেল ওয়াকার বলেন, গণতন্ত্রে প্রত্যাবর্তনের জন্য বছর দেড়েক সময় লাগতে পারে। তিনি এ সময় ধৈর্য ধরার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি বলেন, 'আপনি যদি আমাকে জিজ্ঞাসা করেন, তবে আমি বলব যে আমাদের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় যাওয়ার একটি সময়সীমা থাকা দরকার।'
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস এবং সেনাপ্রধান ওয়াকার প্রতি সপ্তাহে মিলিত হন এবং তাদের মধ্যে 'খুবই ভালো সম্পর্ক' রয়েছে।
জেনারেল ওয়াকার বলেন, গোলযোগের পর দেশকে স্থিতিশীল করার চেষ্টায় সরকারের প্রয়াসের প্রতি সামরিক বাহিনী সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, 'আমি নিশ্চিত যে আমরা একসাথে কাজ করতে পারব। আমাদের ব্যর্থতার কোনো কারণ নেই।'
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, জুলাই মাসে চাকরির কোটা নিয়ে শুরু হওয়া আন্দোলনে এক হাজারের বেশি লোক নিহত হয়েছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসে এটিই সবচেয়ে রক্তাক্ত অধ্যায়।
হাসিনার বিদায়ের পর সরকারের ব্যাপক সংস্কারের প্রেক্ষাপটে সেনাবাহিনীতেও অন্যায়কারী সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। জেনারেল ওয়াকার বলেন, অনেক সৈনিককে ইতোমধ্যেই শাস্তি দেয়া হয়েছে। তিনি অবশ্য বিস্তারিত কিছু বলেননি।
জেনারেল ওয়াকার সেনাবাহিনীকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখার ব্যাপারে বলেন, 'এমনটা কেবল তখনই ঘটতে পারে, যখন প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে ক্ষমতার কিছু ভারসাম্য থাকে, যেখানে সেনাবাহিনী সরাসরি থাকবে প্রেসিডেন্টের অধীনে।'
সময় জার্নাল/এলআর