মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪

কয়রায় খাল ভরাট করে আ’লীগ কার্যালয় নির্মাণ, ফসলের মারাত্মক ক্ষতি

বৃহস্পতিবার, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২৪
কয়রায় খাল ভরাট করে আ’লীগ কার্যালয় নির্মাণ, ফসলের মারাত্মক ক্ষতি

মোঃ ইকবাল হোসাইন,কয়রা উপজেলা প্রতিনিধি:

খুলনার সুন্দরবন সংলগ্ন উপকূলীয় কয়রা উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে বয়ে গেছে ৯৯টি ছোট-বড় সরকারি খাল। এর মধ্যে অর্ধশতাধিক খালে মাটির বাঁধ নির্মাণ করে আওয়ামী লীগের কার্যালয় নির্মাণ সহ নেট ও বাঁশের বেড়া দিয়ে মাছ চাষ করায় পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এতে বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা দেখা দিচ্ছে। মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কৃষি।

সরজমিনে জানা গেছে, কয়রা থানা ও উপজেলা পরিষদের পাশ দিয়ে প্রবাহিত গাগরামারী খাল ভরাট করে উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় বানানো হয়েছে। কয়রার দেউলিয়া বাজার সংলগ্ন সদর ইউনিয়নের ছোট দেউলিয়া খালটি দখলে ও দূষণে ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। খালের ওপরে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসরদের মদদে টংদোকান, পাকা ঘরসহ বেশ কিছু অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠেছে। 

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, গাগরামারী খাল ভরাট করে দলীয় কার্যালয় নির্মাণের কাজে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন খুলনা-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মো. আক্তারুজ্জামান। এছাড়া আমাদী ইউনিয়নের আমুরকাটা, বালিয়াডাঙ্গা জলকর ও বারইখালী খাল, মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের চৌকুনি এলাকার সীমানার খাল সম্পূর্ণ ভরাট হয়ে বন্ধ হয়ে গেছে। 

অভিযোগ করে আরো বলেন, চার কিলোমিটার দীর্ঘ কাশির খালটিতেও ছয়টি স্থানে বাঁশের বেড়া দিয়ে পানিপ্রবাহে বাধা সৃষ্টি করা হয়েছে। খালটির জরাজীর্ণ স্লুইসগেট দিয়ে প্রবেশ করছে লোনাপানি। খালটির দুই পাশের একাধিক জায়গায় ইট-বালু আর মাটি দিয়ে ভরাট করে অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে দোকানপাট।

এলাকাবাসী বলেন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সুপারিশে তাঁদের অনুসারীরাই কয়রার খালগুলো ইজারা পেয়েছেন। তাঁরা ইজারার শর্ত ভেঙে খালে মাটির বাঁধ নির্মাণ করে সেখানে মাদকের আস্তানা গড়ে তোলে। মাদক ব্যবসা সহ ও বাঁশের বেড়া দিয়ে মাছ চাষ করছেন ইচ্ছেমতো। এতে বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা ও গ্রীষ্ম মৌসুমে সেচ দিতে না পারায় কয়েক হাজার হেক্টর জমির ফসল উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।
কয়রা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ দপ্তর সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ৩৯টি খাল নিয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ে একটি প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, খালে লোনাপানির অনুপ্রবেশ বন্ধ এবং মিষ্টিপানি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা গেলে সংশ্লিষ্ট ৭ হাজার ২ হেক্টর জমিতে বছরে ৩৭০ কোটি ৮০ লাখ টাকার ফসল উৎপাদন করা সম্ভব। এ ছাড়া প্রতিবেদনে কয়রার ২০টি স্লুইসগেটের মধ্যে ৬টি সম্পূর্ণ অকেজো ও ১৪টি সংস্কারযোগ্য উল্লেখ করে নতুন ৪টি স্লুইসগেট নির্মাণের সুপারিশ করা হয়েছে।

কয়রা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, সমস্যা নিরসনে খাল খনন, নেট, বাঁশের বেড়া অপসারণ ও স্লুইসগেট সংস্কারই হচ্ছে স্থায়ী সমাধান। বিলে ফসল ও মাছের সমন্বিত চাষের জন্য খালে লোনাপানির অনুপ্রবেশ বন্ধ একান্ত প্রয়োজন। এগুলো হলে উপজেলায় কয়েক শ কোটি টাকার বাড়তি ফসল উৎপাদন সম্ভব।

কয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুলী বিশ্বাস বলেন, খালে কোনো অবস্থাতে বাঁধ কিংবা নেট-পাটা দিয়ে পানিপ্রবাহে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির সুযোগ নেই। দ্রুত উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে। তবে খালগুলোকে আগের স্থানে ফিরিয়ে নিতে হলে সামাজিক সম্পৃক্ততা প্রয়োজন। যাঁরা এগুলোর দখল-দূষণ করছেন, তাঁদের সচেতন করতে হলে সামাজিক সমন্বয় প্রয়োজন।

সময় জার্নাল/তানহা আজমী


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল