নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
ডেঙ্গুর প্রভাবে নিয়মিত হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে রোগীর ভিড়। গত বছরের মতো এবারও রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, কমলাপুর ও মুগদা এলাকায় ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি। এসব এলাকায় রোগীদের চিকিৎসায় ভরসা মুগদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল। গত বছর এই হাসপাতালে এই সময়ে প্রায় ৫০০ জন করে ডেঙ্গুরোগী ভর্তি থাকলেও এ বছর আসনের বাইরে ভর্তি নেওয়া হচ্ছে না। এতে ফিরে যেতে হচ্ছে অনেক ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীকে।
রোববার রাতে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল চিকিৎসা নিতে গিয়েছিলেন সাজিদ। তার ভাই অনেক চেষ্টা করেও হাসপাতালে আসন না থাকায় ভর্তি করাতে পারেননি তাকে। হাসপাতাল থেকে জানানো হয় আসন খালি নেই।
হাসপাতালের সামনে এমন অনেক রোগীরই দেখা মিলে, যারা আসন না পেয়ে অন্য হাসপাতালে আসন আছে কি না খোঁজ নিচ্ছেন রোগীকে ভর্তির জন্য। এমন অবস্থা দেখা গেছে ঢাকা মেডিকেলেও। সেখানে আসনের বাইরে রোগী ভর্তি হচ্ছে। সেখানে আশপাশে পা ফেলার জায়গাও নেই।
মুগদা হাসপাতালে আসা বেশিরভাগ রোগীই মুগদা, মান্ডা, বাসাবো, মানিকনগর, ধলপুর, যাত্রাবাড়ী ও শনিরআখড়া এলাকার বাসিন্দা। এছাড়া ঢাকার বাহির থেকেও কিছু রোগী আসছেন এখানে। তবে আসন না পেয়ে ফিরে যেতে হচ্ছে অনেক রোগীকেই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাসপাতাল পরিচালক এস এম হাসিবুল ইসলাম বলেন, আগে অনেক রোগী মেঝেতে থাকার কারণে মশারি টানাতে পারতো। এতে সাধারণ রোগীদেরও ডেঙ্গু হয়ে যাচ্ছিল। এ কারণে শয্যার বাইরে কোনো রোগী রাখছি না।
মুগদা মেডিকেলের ৮ম তলা ও ১১ তলায় ডেঙ্গু রোগীদের জন্য ভর্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখানে শিশুরা ৮ম তলায় ও প্রাপ্তবয়স্করা চিকিৎসা নিচ্ছেন ১১ তলায়।
রোববার হাসপাতালের তথ্যে জানা গেছে, হাসপাতালটিতে প্রাপ্তবয়স্ক ডেঙ্গু রোগীদের জন্য শয্যা নির্ধারণ করা হয়ছে ৭০টি। যার একটিও খালি নেই। গতকাল পর্যন্ত ভর্তি ৯৬ জন ভর্তি রোগীর মধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক ৭০ জন এবং ২৬ জন শিশু। আর এদের মধ্যে পুরুষ ৫৪ জন এবং নারী ৪২ জন।
ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের নিয়মিত কিছু পরীক্ষা করা লাগে। এর মধ্যে রক্তের অবস্থা জানতে সিবিসি অন্যতম। তবে মুগদা মেডিকেলে এই পরীক্ষার ধীরগতির কারণে আশে পাশের ক্লিনিকেই করতে হয়েছে টেস্ট।
হাসপাতালে রোগীর সাথে আসা স্বজন আসাদ জাগো নিউজকে জানায়, সিবিসিসহ কিছু টেস্ট বাহিরে করাতে হয়েছে। এখানে বলেছে তাদের পরীক্ষার মেডিসিন নেই। সিবিসি পরীক্ষা করালেও দীর্ঘ সময় লেগে যায়।
মুগদা মেডিকেল কলেজের পরিচালক এস এম হাসিবুল ইসলাম জানান, হাসপাতালটিতে প্রতিনিয়ত ডেঙ্গু রোগীর চাপ বাড়ছে। গত সেপ্টেম্বর মাসে ডেঙ্গু রোগের চিকিত্সা নিয়েছেন তিন হাজার ২৭০ জন। এর মধ্যে শিশু ৮৩৯ জন। এই সময়ে শিশুসহ মারা গেছেন আটজন। চলতি বছরে এ পর্যন্ত ডেঙ্গু রোগের চিকিত্সা নিয়েছেন আট হাজার ৮১০ জন। তাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৩২ জনের।
সময় জার্নাল/তানহা আজমী