রাজশাহী প্রতিনিধি : রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার সকাল থেকে রবিবার সকাল পর্যন্ত চিকিৎসাধীন অবস্থায় তারা মারা যান। রামেক হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এ নিয়ে চলতি মাসের ২০ দিনে (১ থেকে ২০ জুন) এ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মারা গেছেন ২০৩ জন। এর মধ্যে ৯৭ জনই মারা গেছেন করোনা শনাক্তের পর। বাকিরা উপসর্গ নিয়ে মারা যান।
রামেক পরিচালক জানান, নতুন মৃতদের চাঁপাইনবাবগঞ্জের একজন করোনা পজিটিভ ছিলেন। বাকি ৯ জনের মধ্যে রাজশাহীর ৭, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ১ ও নওগাঁর ১ জন উপসর্গে মারা যান। মৃতদের সাতজন পুরুষ ও তিনজন নারী। এদের মধ্যে ৩১ থেকে ৫০ বছর বয়সী একজন, ৪১ থেকে ৫০ বছর বয়সী একজন, ৫১ থেকে ৬০ বছর বয়সী তিনজন ও ৬১ বছরের বেশি বয়সী পাঁচজন রয়েছেন।
তিনি আরও জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় রামেক হাসপাতালে নতুন ভর্তি হয়েছেন ৫৪ জন। এর মধ্যে রাজশাহীর ৩৫, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৯, নাটোরের ৩, নওগাঁ ৬ ও পাবনার ১ জন। একই সময় সুস্থ হয়েছে হাসপাতাল ছেড়েছেন ৩৮ জন।
তিনি বলেন, ‘আজ রবিবার সকাল পর্যন্ত এ হাসপাতালের ৩০৯ বেডের বিপরীতে করোনা ও উপসর্গের রোগী ভর্তি রয়েছেন ৩৭৭ জন। অতিরিক্ত বেডের ব্যবস্থা করে অতিরিক্ত রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এদের মধ্যে রাজশাহীর ২২৯ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৭৫, নাটোরের ২৯, নওগাঁর ৩২, পাবনার ৬, কুষ্টিয়ার ৪ ও চুয়াডাঙ্গার ২ জন।’
রামেক পরিচালক জানান, শনিবার রাজশাহীর দুই ল্যাবে চার জেলার মোট ৬৫২ জনের নমুনা পরীক্ষায় করোনা পজিটিভ এসেছে ২৮০ জনের। এদিন রাতে প্রকাশিত দু’টি পিসিআর ল্যাবের নমুনার ফলাফলে দেখা যায়, রাজশাহী শনাক্তের হার ৪৬ দশমিক ৯৯ শতাংশ, চাঁপাইনবাবগঞ্জে শনাক্তের হার ৩১ দশমিক ৫০ শতাংশ ও নওগাঁয় ৫৯ দশমিক ৪৬ শতাংশ।
করোনা ও উপসর্গে গত ১ জুন সাত, ২ জুন সাত, ৩ জুন নয়, ৪ জুন ১৬, ৫ জুন আট, ৬ জুন ছয়, ৭ জুন ১১, ৮ জুন আট, ৯ জুন আট, ১০ জুন ১২, ১১ জুন ১৫, ১২ জুন চার, ১৩ জুন ১৩, ১৪ জুন ১২, ১৫ জুন ১২, ১৬ জুন ১৩, ১৭ জুন ১০, ১৮ জুন ১২ ও ১৯ জুন ১০ জন মারা যান।
এদিকে করোনা রোগীদের চাপ বেড়ে যাওয়ায় এবং জায়গা দেওয়া সম্ভব না হওয়ায় রামেক হাসপাতালের আরেকটি সাধারণ ওয়ার্ডকে (১৭ নং) কোভিড ওয়ার্ড ইউনিটে সম্প্রসারিত করা হচ্ছে। করোনা রোগীদের জন্য ১৭ নং ওয়ার্ডে বর্তমানে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সরবরাহ লাইন স্থাপনের কাজ চলছে।
রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের ৩৬টি শয্যা এবং বারান্দায় আরও ১২টি মিলিয়ে ৪৮টি শয্যার ব্যবস্থা করা যাবে। দু’একদিনের মধ্যেই ওয়ার্ডে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সরবরাহ লাইনের কাজ শেষ হবে। এরপরই সেখানে করোনা রোগীদের রাখা যাবে।
সময় জার্নাল/আরইউ