শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪

ইবির সেই শিক্ষকের কুশপুত্তলিকা পোড়ালো শিক্ষার্থীরা

মঙ্গলবার, অক্টোবর ২২, ২০২৪
ইবির সেই শিক্ষকের কুশপুত্তলিকা পোড়ালো শিক্ষার্থীরা

সাইফ ইব্রাহিম, ইবি প্রতিনিধি:

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হাফিজুল ইসলামের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের হেনস্তা ও যৌন হয়রানি সহ নানা অভিযোগ এনে তার অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে বিভাগের শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে তারা ওই শিক্ষকের কুশপুত্তলিকা নিয়ে মিছিল শেষে তাতে থুতু ও জুতা নিক্ষেপ করে আগুনে পুড়িয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, অভিযোগ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটির ডাকে ওই শিক্ষকের ক্যাম্পাসে আসার কথা জানতে পেরে শিক্ষার্থীরা এ কর্মসূচি পালন করে। বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্র-নজরুল কলা ভবনের সামনে থেকে হাফিজুল ইসলামের ছবি সম্বলিত কুশপুত্তলিকা হাতে মিছিল নিয়ে তারা পুরো ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে। পরে প্রধান ফটকে গিয়ে ফটকের সাথে কুশপুত্তলিকা ঝুলিয়ে তাতে জুতা ও থুতু নিক্ষেপ করে। জুতা নিক্ষেপ শেষে দুপুর ২টার দিকে তাতে আগুন ধরিয়ে দেন তারা। এসময় শিক্ষার্থীরা ওই শিক্ষকের স্থায়ী বরখাস্তেরর দাবি জানিয়ে ‘বহিষ্কার বহিষ্কার, হাফিজ বহিষ্কার’, ‘হাফিজ হটাও, ডিএস বাঁচাও’, ‘হাফিজের বিরুদ্ধে, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’ সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, হাফিজুল ইসলাম শ্রেণিকক্ষে ছাত্রীদের নষ্টা, পতিতা, বাজারের মেয়ে সম্মোধনসহ প্রকাশের অনুপযোগী বিভিন্ন ভাষায় গালিগালাজ ও পোশাক নিয়ে বাজে মন্তব্য করতেন। এটেনডেন্সের বিনিময়ে শিক্ষার্থীদের ছাত্রলীগের মিছিলে পাঠানো, শিক্ষার্থীদের ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে পেটানো ও ছাদ থেকে ফেলে দেওয়ার হুমকির অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা। এছাড়া ছাত্রদের জোরপূর্বক সমকামিতায় বাধ্য করা, কথা না শুনলে মার্ক কম দেওয়া, মেয়েদের ব্যাক্তিগত নাম্বারে কল দিয়ে বিরক্ত করা, ফেইক আইডি দিয়ে বিভিন্ন ছাত্রীর সঙ্গে কুরুচিপূর্ণ কথোপকথনের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

এর আগে গত ৭ অক্টোবর এসব অভিযোগ তুলে ধরে তার অপসারণের দাবিতে প্রধান ফটক অবরোধ করে বিভাগের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেন। পরে উপাচার্যের কাছে লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ দেওয়া হলে অভিযোগ তদন্তে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। তদন্ত কমিটির কাছে সাক্ষাৎকার দিতে মঙ্গলবার হাফিজুল ইসলামের ক্যাম্পাসে আসার কথা জানার পর শিক্ষার্থীরা এসব কর্মসূচি পালন করেন। তবে নিরাপত্তা শঙ্কার কথা জানিয়ে ওই শিক্ষক সাক্ষাৎকার দিতে ক্যাম্পাসে আসেননি বলে জানা গেছে।
শিক্ষার্থীরা বলেন, উপাচার্যের সাথে সাক্ষাতের পর তিনি একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দেন। গতকাল তদন্ত কমিটির কাছে আমরা আমাদের অভিযোগগুলো জমা দিয়েছি। তদন্তের জন্য অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের আজকে ক্যাম্পাসে আসার কথা, সেই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা আজকের কর্মসূচি। আমরা তাকে বিভাগ থেকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছি। বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও তাকে বরখাস্ত করা হোক। তাকে যদি আজীবনের জন্য বরখাস্ত  করা না হয়, আমাদের আন্দোলন-কর্মসূচি ধারাবাহিকভাবে চলবে।

শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, তদন্ত কাজে তাকে ক্যাম্পাসে আসতে আমরা বাঁধা দিচ্ছি না। এটা আমরা আমাদের প্রতিবাদ জানাচ্ছি। তার প্রত্যেকটি অপকর্মের প্রমাণ আমাদের কাছে আছে। তদন্তের মাধ্যমে তার এসব অভিযোগ অবশ্যই প্রমাণিত হবে।

এদিকে অভিযোগের বিষয়ে ওই শিক্ষকের বক্তব্য জানতে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. কাজী মোস্তফা আরীফ বলেন, ‘অভিযোগ তদন্তে সোমবার আমরা কিছু শিক্ষার্থীদের সাক্ষাৎকার নিয়েছিলাম। মঙ্গলবার বিভাগের শিক্ষকদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে। অভিযুক্ত হাফিজুল ইসলামের আজ ক্যাম্পাসে আসার কথা থাকলেও তিনি নিরপাত্তা শঙ্কার কথা জানিয়ে সাক্ষাৎকারের জন্য ক্যাম্পাসে আসেনি। তার সাক্ষাৎকার কীভাবে নেওয়া যায় আমরা বসে সিদ্ধান্ত নেব।’

এমআই 


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল