নিজস্ব প্রতিবেদক:
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেছেন, জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় দেশে সংগঠিত গণহত্যা, হত্যাকাণ্ড, গুমসহ সব অপরাধের বিচার ট্রাইব্যুনালে হবে।
তিনি বলেন, এই সব গণহত্যা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধগুলো বিচারের এখতিয়ার শুধু আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের এবং এ সংক্রান্ত মামলার অভিযোগগুলো তদন্তের দায়িত্ব ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার।
গতকাল মঙ্গলবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক উমামা ফাতেমা ও শারমিন সুমির সাথে বৈঠক শেষে ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে এক ব্রিফিংয়ে চিফ প্রসিকিউটর এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘স্বল্পতম সময়ের মাধ্যমে আমরা আদালতের আদেশ চাইব, ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টগুলো থেকে জুডিশিয়াল নথি এবং থানাগুলোতে সংরক্ষিত নথিগুলো ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার কাছে প্রেরণ করতে।
এসব নথি পর্যালোচনা করার মাধ্যমে কোনো মামলায় যদি ভুল লোককে আসামি করা হয়, তাকে আমরা বাদ দিবো এবং প্রকৃত অর্থে যারা দোষী তাদের পক্ষভুক্ত করে যথাযথ মামলা করা হবে।’
যারা এখনো মামলা করেননি তারা অবশ্যই ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার ধানমন্ডি ১১/এ অফিস অথবা চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়ে এসে সরাসরি কিংবা ডাকযোগে অভিযোগ করতে পারবেন বলে তিনি জানান।
তিনি বলেন, মামলা সংক্রান্ত সব তথ্য-প্রমাণ, অডিও-ভিডিও, পত্রিকা, মেডিক্যাল রিপোর্ট, নথিসহ মামলা দায়ের করতে হবে, পরবর্তী সব দায়িত্ব প্রসিকিউশনের। এসব মামলা পরিচালনার জন্য কোনো ধরনের আইনজীবী নিয়োগ, টাকা ব্যয় কিংবা হাজিরা দেয়ার প্রয়োজন হবে না।
শহীদ ও ভিকটিম পরিবারের সবাইকে দ্রুততম সময়ে আসল অপরাধীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য সমস্ত প্রয়োজনীয় তথ্য-প্রমাণ জমা সাপেক্ষে ট্রাইব্যুনাল বরাবর অভিযোগ জানাতে আহ্বান জানান তিনি। মামলার সাক্ষী কিংবা ভুক্তভোগী পরিবারের কেউ চাঁদাবাজি, হুমকি কিংবা নিরাপত্তা ঝুঁকিতে থাকলে তাকে আইনানুযায়ী নিরাপত্তা দেয়া হবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তদন্ত সংস্থার দেয়া তথ্যের আলোকে ট্রাইব্যুনালে করা মামলার আসামি যারা অনেকেই অন্য মামলায় গ্রেফতার হয়ে আছেন তাদের নাম আমরা জানতে পেরেছি। শিগগিরই তাদের আদালতে উপস্থাপন করে গ্রেফতার দেখানোর আবেদন করা হবে।
চিফ প্রসিকিউটর বলেন, প্রকৃত দোষী যত শক্তিশালীই হোক, তাদের বিরুদ্ধে যদি অকাট্য প্রমাণ থাকে তবে তাদের বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। যারা নিরপরাধ তাদের হয়রানি বন্ধেও ট্রাইব্যুনাল সতর্ক থাকবে।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন ১৯ জুলাই আন্দোলনে শহীদ তাহির জামান পিওর মা শামসি আরা জামান এবং শহীদ সৈকতের বোন সাবরিনা আফরোজ সেবন্তি, ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর বি এম সুলতান মাহমুদ এবং গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামিম।
সময় জার্নাল/তানহা আজমী