ইউনুস রিয়াজ, গবি প্রতিনিধি:
বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা ২৬ বছর হলেও শিক্ষার্থীদের খাবারের নেই সুব্যবস্থা। দিনের পর দিন ক্যান্টিন নিয়ে অভিযোগ করলেও তার সমাধান মিলেনি। কয়েক দফায় ক্যান্টিনের দ্বায়িত্ব হস্তান্তর করেও স্বস্তি ফিরছে না তাদের। উচ্চমূল্যের খাবারের সঙ্গে পরিমাণে রয়েছে অসামঞ্জস্যতা। দীর্ঘদিনের এমন বৈষম্যের চিত্র ফুটে উঠেছে সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে (গবি)।
জানা যায়, খাবারের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেশি এবং এর সাথে খাবারের মান ও পরিমাণের মিল নেই। এছাড়া ক্যান্টিনের পরিবেশেরও তীব্র সমালোচনা করছেন শিক্ষার্থীরা। স্যাঁতসেঁতে রান্নাঘর, বিশুদ্ধ পানির অভাব এবং পর্যাপ্ত জায়গার সংকট তাদের দুর্ভোগ বাড়িয়ে তুলেছে।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন, ক্যান্টিন মালিক কোনো কারণ দেখানো ছাড়াই হঠাৎ খাবারের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। উদাহরণস্বরূপ, একসময় ৫ টাকা দামের সিংগাড়া এখন ১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, কিন্তু খাবারের পরিমাণ বা মানের দামের তুলনায় তেমন কোনো উন্নতি হয়নি। এছাড়া ক্যান্টিনে পর্যাপ্ত পরিমাণ বসার জায়গা এবং বিশুদ্ধ পানির অভাবের বিষয়টি শিক্ষার্থীদের জন্য খুবই সমস্যাজনক হয়ে উঠেছে।
ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষার্থী আব্দুল মাযেদ সালাফি জানান, ক্যান্টিন মালিক বাজারে থাকা তার নিজস্ব দোকানে বেঁচে যাওয়া ক্যান্টিনের খাবার বিক্রি করেন একই দামে। শিক্ষার্থীরা আশা করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যান্টিনের খাবারের দাম অবশ্যই বাজার থেকে কম হবে এবং তাদের জন্য পরিবেশবান্ধব ব্যবস্থা থাকবে।
উদ্ভূত অভিযোগ নিয়ে ক্যান্টিনের দ্বায়িত্বে থাকা মো. আরশেদ বলেছেন, প্রতিদিনের বাজারের উচ্চমূল্যের কারণে খাবারের দাম বাড়ানো হয়েছে। ক্যান্টিনটি মাসে ৮ থেকে ১০ দিন বন্ধ থাকে এবং অন্যান্য ছুটির কারণে মাসে মাত্র ২০ দিনের মতো খোলা থাকে। এতে স্টাফদের পুরো মাসের বেতন এবং অন্যান্য খরচ মেটাতে হিমসিম খেতে হচ্ছে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যান্টিনের মতো এখানে কোনো ভর্তুকি বা ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা নেই। বিদ্যুৎ বিলসহ অন্যান্য খরচগুলোও তাকে বহন করতে হয়, যা খাবারের দামে প্রভাব ফেলে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যান্টিন কমিটির সদস্য ও ফার্মেসি বিভাগের প্রভাষক তানিয়া আহমেদ জানিয়েছেন, ক্যান্টিনের ইন্টেরিয়র পরিবর্তন ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হবে। শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী ফিল্টার বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে এবং ক্যান্টিনের দ্বায়িত্বশীলকে টোকেন সিস্টেম, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা এবং গ্লাস ও প্লেট পরিবর্তনের জন্য বলা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, ক্যান্টিনের সমস্যাগুলোর দীর্ঘমেয়াদী সমাধানের জন্য দ্রুত ক্যান্টিন স্থানান্তরের পরিকল্পনা করছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে সেটি কখন বাস্তবায়িত হবে, তা নিশ্চিত নয়।
শিক্ষার্থীরা একটি শিক্ষার্থী বান্ধব ক্যান্টিনের দাবি তুলছেন, যেখানে খাবারের দাম সহনীয় এবং পরিবেশ হবে স্বাস্থ্যকর। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) আবু মুহাম্মাদ মুকাম্মেল জানান, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ক্যান্টিনে ভর্তুকির নজির আছে বলে আমার জানা নেই। ক্যান্টিনের বিষয়ে ক্যান্টিন কমিটি সিদ্ধান্ত জানালে আমরা বিবেচনা করে দেখবো।
সময় জার্নাল/এলআর