বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪

ডানা অতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটলো সাতক্ষীরার উপকূলবাসীর

শুক্রবার, অক্টোবর ২৫, ২০২৪
ডানা অতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটলো সাতক্ষীরার উপকূলবাসীর

মুহা: জিললুর রহমান, সাতক্ষীরাঃ

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ডানা’র শেষাংশ শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) সকাল নাগাদ উপকূল অতিক্রম করলেও এর প্রভাব এখনো কাটেনি। সকাল থেকে সাতক্ষীরার উপকূলীয় এলাকাসহ জেলার সর্বত্রই থেমে থেমে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। দুপুরের দিকে একবার সূর্য উকি দিলেও দিনভার আর দেখা মেলেনি। সেই সাথে থামেনি বৃষ্টিপাত। এখনো আকাশ মেঘাচ্ছন্ন। তবে ডানা’র শঙ্কা কেটে যাওয়ায় স্বস্তি ফিরেছে উপকূলের মানুষের মধ্যে। এদিকে ঘূর্ণিঝড় ডানা’র আঘাতের শঙ্কায় গত তিনদিন ধরে নির্ঘুম রাত কাটিয়েছেন সাতক্ষীরার শ্যামনগর, আশাশুনি ও কালিগঞ্জের উপকূলবাসী। 

টানা বৃষ্টি আর দমকা হাওয়ার কারণে উপকূলের নদ-নদীতে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় দূর্বল বেড়িবাঁধ ভাঙার আতংকে ছিল তারা। উপকূলীয় শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা, পদদ্মপুকুর, কৈখালী, রমজাননগর, আটুলিয়া ও বুড়িগোয়ালিনী এবং আশাশুনির প্রতাপনগর ও বিছট এলাকার নদীর পাড়ে বসবাস করা মানুষ উদ্বেগ উৎকণ্ঠার সাথে রাত কাটালেও শুক্রবার সকাল থেকে জনজীবন স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। নদ- নদীতে জোয়ারের পানি স্বাভাবিক সময়ের মতো প্রবাহিত হচ্ছে। তবে খোলপেটুয়া নদী ও কপোতাক্ষ নদ কিছুটা উত্তাল দেখা গেছে। তারপরও ঘূর্ণিঝড় ডানা’র আঘাতের শঙ্কা কাটায় স্বস্তি ফিরেছে উপকূলের জনজীবনে।

শ্যামনগর উপজেলার পদ্মপুকুর ইউনিয়নের পাতাখালী গ্রামের বাসিন্দা সোহরাব আলী বলেন, আমাদের গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে কপোতাক্ষ নদ। কপোতাক্ষ নদের ভাঙনে বেড়িবাঁধ প্রায় বিলিন হতে চলেছে। তাই ঝড়ের কথা শুনে আমরা ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। ঘূর্ণিঝড় ডানা’র আঘাতের শঙ্কা কেটে যাওয়ায় উপকূলীয় এলাকার জীবনযাত্রা প্রায় স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। লোকজন ঘর ছেড়ে বাইরে বের হতে শুরু করেছে।

আশাশুনির বিছট গ্রামের রুহুল আমিন মোড়ল বলেন, বাড়ির সামনে দিয়ে বয়ে গেছে খোলপেটুয়া নদী। নদী ভাঙনে বিলিন হয়ে গেছে বিছট গ্রামের প্রায় অর্ধেক এলাকা। গৃহহারা হযেছে ৫০ এর অধিক পরিবার। নদী ভাঙনে বেড়িবাঁধ ভাঙতে ভাঙতে আমাদের ঘরের সামনে চলে এসেছে। বর্তমানে বেড়িবাঁধের অবস্থা খুবই নাজুক। তাই কোন ঘূর্ণিঝড়ের কথা শুনলে আমরা গ্রামবাসী সব সময় ভয়ে ভয়ে থাকি। বৃহস্পতিবার সারারাত প্রায় আমরা বাঁধের উপর কাটিয়েছি। তিনি দ্রæত বিছট গ্রামের ঝুকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ সংষ্কারের দাবি জানান।

সাতক্ষীরা জেলা আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুলফিকার আলী রিপন জানান, ঘূর্ণিঝড় ডানা’র প্রভাবে গত ২৪ ঘন্টায় ২৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকড করা হয়েছে। তবে দিনভার কালবৈশাখীর মতো দমকা হাওয়া ও বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টি হতে পারে।

প্রসঙ্গতঃ গত ১৭ বছরে সিডর, আইলা, আম্পান ও ইয়াসের মতো অন্তত ১৪টি বড় ঝড় ঘূর্ণিঝড়ে সৃষ্ট জলোচ্ছাস দেখেছে সাতক্ষীরার উপকূলের সাধারণ মানুষ। একেবারে প্রকৃতির কাছে ছেড়ে দিতে হয়েছে জীবনকে। সেরকমই ডানা’র প্রভাবে টানা তিন দিনের বৃষ্টিতে নাকাল হয়ে পড়েছে এ অঞ্চলের মানুষ। এই বছরের প্রথম ঝড় রিমালের ক্ষত এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি সাতক্ষীরা উপকূলের মানুষ। এরমধ্যে ছোট ছোট আরও দূর্যোগ লেগেই ছিল। তবে ঘূর্ণিঝড় ডানা সরাসরি সাতক্ষীরার উপকূল আঘাত না হানলেও এর প্রভাবে টানা বৃষ্টিতে জেলার নি¤œাঞ্চল প্লাবিত করেছে। কাঁচাঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ করেছে। চলাচলের মাটির রাস্তাতে হাটাহাটিও অসম্ভব হয়েছে। আমন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

সাতক্ষীরার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সাইফুল ইসলাম জানিয়েছেন, ডনার প্রভাবে টানা তিন দিনের বৃষ্টিতে রবি মৌসুম তথা শীতকালীন শাকসবজি ও আমন ধানে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

এমআই 




Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল