জাকারিয়া শেখ, ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধিঃ
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে ঘূর্ণিঝড় দানা’র প্রভাবে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিসহ দমকা হাওয়ায় রোপা আমন ক্ষেত নুয়ে পড়েছে মাটিতে। যার ফলে অভাবনীয় ক্ষতির শঙ্কায় আছে কৃষকরা। গত তিন দিনের বৃষ্টিপাত ও দমকা বাতাসে উপজেলার শতশত বিঘা আমন ক্ষেত মাটিতে নুয়ে পড়েছে। আমন চাষিদের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে আগাম শীতকালীন সবজি চাষিরা।চতুর্থ দফা বন্যা কাঁটিয়ে উঠতে না উঠতেই আবারো বৃষ্টিপাত ও দমকা বাতাসে আধাপাঁকা আমন ধান হেলে পড়ায় কৃষকের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
গত মঙ্গলবার বিকেল থেকে শুরু হওয়া ঝড়ো বৃষ্টি ও দমকা বাতাসে ঘরবাড়ির ক্ষয় ক্ষতি না হলেও উপজেলার প্রায় শতাধিক হেক্টর জমির আমন ক্ষেত মাটিতে নুয়ে পড়েছে। কয়েক দিনের মধ্যে যে ধান কৃষকের গোলায় উঠত হঠাৎ এই দমকা বাতাস ও বৃষ্টিতে কৃষকের বুক ভরা স্বপ্ন এক নিমেশেই মাটিতে মিশে গেছে। এতে বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়বেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কৃষকরা।
শনিবার সকালে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বৃষ্টিপাত ও দমকা বাতাসে পাঁচ হেক্টর(প্রায়) আমন খেতের ধানের শীষ পঁচে নষ্ট হওয়ার আশংকা করছেন কৃষকরা। এ ছাড়া দমকা বাতাসে বেগুন, মুলা, ফুলকপি, বাঁধাকপি, মরিচ, লালশাকসহ অন্যান্য শাক-সবজীর পাতা ছিঁড়ে যাওয়া, হেলে পড়াসহ ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
উপজেলার ভাঙ্গামোড় ইউনিয়নের কৃষক মিজানুর জানান, ধার-দেনা করে আমন ধান জমিতে লাগিয়েছি। হঠাৎ দমকা-বাতাসে খেতের সমস্ত ধান গাছ মাটিতে মিশে গেছে। এবছর পেটের ভাত হবে কিনা তা নিয়ে দুঃচিন্তায় আছি।
উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের কৃষক হালাল উদ্দিন জানান, তাদের প্রত্যেকের দেড় থেকে দুই বিঘা করে আমন খেত বাতাসে হেলে পড়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ফসলের ক্ষতি হওয়ায় আমরা বড় দুচিন্তায় আছি। আর কয়েকদিন পরেই খেতের ধান পাঁকতো।
কাশিপুর ইউনিয়নের কৃষক কাশিনাথ রায় জানান, তিন দিনে দমকা বাতাসে ৩ বিঘা জমির ধান মাটিতে পড়ে গেছে। দমকা বাতাসের তীব্রতা বেশি হওয়ায় আমন খেতের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন তিনি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোছা: নিলুফা ইয়াছমিন জানান, এ বছর ১১ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে কৃষকরা আমন ধানের চাষাবাদ করেছে। ঘূর্ণিঝড়ে দানার প্রভাবে দমকা বাতাসে উপজেলা জুড়ে তিন হেক্টর জমির ধান হেলে পড়েছে বলে জানান তিনি। হেলে পড়া ধানের গাছ গুলো ছোট ছোট কারে বেঁধে দাঁড় করিয়ে দেওয়ার পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
এমআই