স্বাস্থ্য ডেস্কঃ
বলা হয়, শরীরে সবার আগে চর্বি জমে পেটে; আর সবার শেষে চর্বি ঝরে পেট থেকে! আমরা জীবনযাপনে একটু অসতর্ক হলেই শরীরের কোথাও চর্বি না জমলেও সবার আগে বাড়ে ভুঁড়ি। আর ওজন কমানোর জন্য কোমর বেঁধে ডায়েট করলেও গাল–মুখ শুকিয়ে কাঠ হওয়ার পর সব শেষে চর্বি ঝরে ভুঁড়ি থেকে। মেদ–ভুঁড়ি নিয়ে অস্বস্তিতে আছেন অনেকেই। পেটের ‘অনাহূত অতিথি’ চর্বি কমিয়ে ভুঁড়িকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিতে কতজন কত কীই–না করেন। তাতে হাতে হাতে ফল পান কজন? তবে প্রাকৃতিকভাবে পেটের চর্বি কমাতে আপনাকে সাহায্য করবে ৭টি ফল। জেনে রাখুন বিস্তারিত।
বিশেষজ্ঞদের মতে, কিছু ফল উচ্চমাত্রার আঁশ ও বিভিন্ন এনজাইমসমৃদ্ধ। এই আঁশ ও এনজাইম মূলত ওজন কমাতে এবং পেটের মেদ ঝরাতে সাহায্য করে। নিচের এই ৭টি ফল আপনার ওজন কমানোর লড়াইয়ে সাহায্য করবে। সঙ্গে পেট থেকে অতিরিক্ত চর্বি ‘পুড়িয়ে’ আপনাকে পরিণত করবে ‘খাঁটি সোনায়’।
১. আনারস
আনারসে ‘ব্রমেলিয়ন’ নামের একধরনের এনজাইম আছে। এটি হজমে সাহায্য করে পেট ফাঁপা কমায়। আনারসে প্রচুর আঁশ ও পানি আছে। এই আঁশ ও পানি ওজন কমাতে সাহায্য করে।
২. তরমুজ
তরমুজে আছে প্রচুর পানি। এ ছাড়া এটি খুব কম ক্যালোরিযুক্ত ফল। এটি আমাদের শরীরকে পানিপূর্ণ রেখে তরতাজা ও সতেজ রাখতে সাহায্য করে।
৩. পেঁপে
পেঁপে যে হজমকারক, তা কে না জানেন! বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পেঁপেতে এমন এনজাইম থাকে, যা হজমে সাহায্য করে এবং অন্ত্রের প্রদাহ কমায়। এ কারণে এটা ওজন কমাতেও সাহায্য করে।
৪. আপেল
বলা হয়, দিনে একটি আপেল খেলে চিকিৎসক থেকে দূরে থাকা সম্ভব, অর্থাৎ আপনার রোগবালাই কম হবে। যা হোক, আপেলে প্রচুর আঁশ ও পানি থাকে নিঃসন্দেহে। আপেল আপনার পেট ভরা রাখবে লম্বা একটা সময়, যা ওজন কমাতে বেশ কেজো।
৫. নাশপাতি
নাশপাতি উচ্চ আঁশ ও নিম্ন ক্যালরিযুক্ত। আঁশ বেশি থাকায় এটি অল্প খেলেই পেট ভরে যায়। ফলে তা ওজন কমাতে সাহায্য করে।
৬. কমলা
কমলায় প্রচুর ভিটামিন সি ও আঁশ থাকে। পেটও ভরা রাখে অনেকক্ষণ। ফলে কমলা আপনাকে অতিরিক্ত খাবার গ্রহণে বাধা দেবে। অর্থাৎ ওজন কমানোর বেলায় উপকার পাবেন।
৭. লেবু
গবেষকদের মতে, লেবু শরীরের বিপাক ক্রিয়ায় সাহায্য করে হজমশক্তি বাড়ায়। এ ছাড়া শরীরকে বিষক্রিয়া থেকে বাঁচায়, যা পেটের বাড়তি মেদ কমাতে দারুণ
কার্যকর।
ফল কি আস্ত খাবেন, না জুস?
যদি মনে করেন, ফলের জুস খেয়ে ওজন কমিয়ে ফেলবেন, তবে ভুল ভাবছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, শরীরের ওজন কমাতে আপনাকে ফলের আঁশযুক্ত মাংসল অংশ খেতে হবে, যা ফলের মাঝখানে থাকে। ফল থেকে রস বের করে নেওয়া হলে তাতে শুধু শর্করা বা চিনিই থাকে। যা ওজন আরও বাড়াতে পারে।
কখন ফল খাবেন
যদিও বলা হয়, ‘খালি পেটে জল, ভরা পেটে ফল’; তবুও বিষয়টি নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে দ্বন্দ্ব আছে। কেউ কেউ বলেন, দিনের যেকোনো সময়ই ফল খাওয়া যায়। কেউ বলেন, খালি পেটেই ফল খাওয়া তুলনামূলক ভালো। তবে দেখা গেছে, এভাবে ফল খেলে তা অনেক সময় রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। তাই হালকা কিছু খেয়েই ফল খাওয়া ভালো।
আরেকটা বিষয় মনে রাখা দরকার। তা হলো, দীর্ঘ সময় কেটে রাখা ফল খাওয়া উচিত নয়। এ ধরনের ফল পুষ্টিগুণ হারিয়ে ফেলে এবং শরীরও তা নিতে পারে না।
তানহা আজমী