নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
ব্রেইন ইটিং অ্যামিবা বা ‘ঘিলুখেকো’ অ্যামিবা নিয়ে সতর্ক করছেন চিকিৎসকরা,বিপদ এড়াতে খেয়াল রাখবেন যে বিষয়গুলোঃ
কলের পানিতে নাক ধুচ্ছিলেন এক ব্যক্তি। সেই সময়েই নাকি নাকে ঢুকে যায় একটি প্রাণঘাতী অ্যামিবা। নাক দিয়ে ঢুকে সোজা চলে যায় মস্তিষ্কে। এর পর মস্তিষ্কের কোষ ধীরে ধীরে খেয়ে নেয় মারাত্মক অ্যামিবা। বিজ্ঞানীদের কথায় মূলত একটি সংক্রমণ ঘটায় এই অ্যামিবা। বিজ্ঞানের পরিভাষায় যাকে বলা হয় প্রাইমারি অ্যামিবিক মেনিনজোএনসেফালাইটিস।
নাইগ্লেরিয়া ফাউলেরি অ্যামিবা কী?
ঘিলুখেকো নামে পরিচিত নাইগ্লেরিয়া ফাউলেরি অ্যামিবা একটি এককোষী প্রাণী। মাইক্রোস্কোপ ছাড়া এটিকে দেখা যায় না। সাধারণত হালকা উষ্ণ পরিষ্কার জলে এই অ্যামিবা দেখতে পাওয়া যায়। এছাড়াও হ্রদ ও নদীর জলে পাওয়া যায় এই অ্যামিবা।
কীভাবে সংক্রমণ ছড়ায় ঘিলুখেকো অ্যামিবা?
পানির মাধ্যমেই এটি মানুষের শরীরে পৌঁছায়। একবার পৌঁছালে মাথা পর্যন্ত চলে যায় এই অ্যামিবা। সেখানে গিয়ে মস্তিষ্কের কোষ নষ্ট করতে শুরু করে নাইগ্লেরিয়া।
সংক্রমণের রিপোর্ট করা মামলাগুলির একটি বড় অনুপাতের পানির সংস্পর্শে আসার ইতিহাস ছিল, 58% সাঁতার বা ডাইভিং থেকে, 16% স্নান থেকে, 10% পানি খেলা যেমন জেট স্কিইং, ওয়াটার-স্কিইং এবং ওয়েকবোর্ডিং থেকে এবং 9% অনুনাসিক সেচ থেকে। সংক্রমণ প্রতিরোধের পদ্ধতিগুলি তাই জলের আশেপাশে যে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত তার উপর ফোকাস করে যাতে নাকে জল প্রবেশ করা রোধ করা যায়, বিশেষ করে উষ্ণ আবহাওয়ায়৷ সাঁতার কাটার সময় নাকের ক্লিপ পরলে দূষিত পানি অনুনাসিক গহ্বরের উপর দিয়ে যাওয়া রোধ করতে সাহায্য করতে পারে। মাথা পানির উপরে রাখা এবং উষ্ণ বিশুদ্ধ পানিতে ঝাঁপ না দেওয়া বা ডুব না দিলেও দূষিত পানি নাক পর্যন্ত যেতে বাধা দিতে পারে। সাঁতারুদেরও হ্রদ, পুকুর এবং নদীর তলদেশে পলি খনন করা বা নাড়া দেওয়া এড়াতে হবে কারণ এখানেই অ্যামিবা বাস করার সম্ভাবনা বেশি।
সাইনাসে সেচ দেওয়ার সময় বা অনুনাসিক গহ্বরের আচার পরিষ্কারে অংশ নেওয়ার সময়,সিদ্ধ বা পাতিত জল ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
কী লক্ষণ দেখা যায়?
এই অ্যামিবার সংক্রমণে মাথাব্যথা থেকে জ্বরের মতো উপসর্গ দেখা যায়। এছাড়াও মাথা ঘোরা, বমি, শরীরের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলার লক্ষণও দেখা দিতে পারে। খুব মারাত্মক পর্যায়ে মানসিক সমস্যাও দেখা দিতে শুরু করে।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী একবার ঘিলুখেকো অ্যামিবাতে আক্রান্ত হলে বাঁচার আশঙ্কা কম। নথি অনুযায়ী, ১৫৪ জন আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে মাত্র ৪ জন বেঁচেছিলেন।
তানহা আজমী