সাইফ ইব্রাহিম,ইবি প্রতিনিধি:
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে পোষ্য কোটার ক্ষেত্রে ন্যূনতম পাশ নম্বর পেলেই ভর্তির সুযোগ মিলছে। তবে এমন শর্ত শিথিলের পরেও পোষ্যদের অনেকে পাশ নম্বরের কম নম্বর পাওয়ায় তাদের ভর্তি করানো সম্ভব হচ্ছে না। তাই গতবারের ন্যায় এবারও ভর্তি পরীক্ষায় ফেল করলেও শর্তহীনভাবে পোষ্যদের ভর্তির দাবি জানিয়েছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
এদিকে আজ বুধবার (৩০ অক্টোবর) সকাল ১১টায় উপাচার্যের সভাপতিত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ভর্তি কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হবে। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দাবির প্রেক্ষিতে সভায় পোষ্য কোটায় ভর্তির নম্বর শিথিলকরণের বিষয়ে আলোচনা করা হবে জানা গেছে। তবে সভায় যাতে এমন ধরনের কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা না হয় তার দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা পোষ্য কোটার বিষয়ে এমন দাবিকে অযৌক্তিক বলে মনে করছেন। পোষ্য কোটায় পাশ নম্বরে ভর্তির বিষয়টিকেও মেধার অবহেলা ও বৈষম্যমূলক আচরণ হিসেবে আখ্যা দিচ্ছেন তারা।
জানা যায়, ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে গুচ্ছ ভর্তি প্রক্রিয়ার শর্ত অনুযায়ী ভর্তি পরীক্ষায় সর্বনিম্ন ৩০ নম্বর পেলেই একজন শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের যোগ্যতা অর্জন করবেন। কোটাধারীদের জন্যও একই শর্ত প্রযোজ্য।
এদিকে ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় সৃষ্টির পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সন্তানরা পোষ্য কোটার সুবিধা নিয়ে আসছিল। তবে ২০২১-২২ ও ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে পোষ্য কোটায় ভর্তির কোনো বিশেষ সুযোগই রাখা হয়নি। তবে শুধু মাত্র ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করলেই শর্তহীনভাবে পোষ্যদের ভর্তির দাবি জানিয়েছিলেন তারা।
এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তারা সাবেক উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি ও দীর্ঘদিন যাবত কর্মবিরতি পালন করেছেন। এর বিপরীতে এ পদ্ধতির বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীরাও বিভিন্ন সময় আন্দোলন করেছেন। এমনকি শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকেও পোষ্য কোটার বিষয়টি বিবেচনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে আবারও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির ক্ষেত্রে পাশ মার্ক ৩০ ও ২৪ নম্বর রাখা হয়েছে। গত ০৯ অক্টোবর ন্যূনতম পাশ নম্বর পেয়েছে এমন পোষ্যদের সাক্ষাৎকার নিয়েছে পোষ্য কোটা সংশ্লিষ্ট ভর্তি কমিটি। তবে এক্ষেত্রেও পোষ্যদের অনেকেই পাশ নম্বরের চেয়ে কম নম্বর পাওয়ায় ভর্তির সুযোগ পাচ্ছে না। ফলে এমন পরিস্থিতিতে সেই পুরনো দাবি সামনে আনছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। ফেল করলেও পোষ্যদের শর্তহীন ভাবে ভর্তির দাবি জানিয়েছেন তারা। এবার তারা এখনও মাঠের কর্মসূচিতে না গেলেও বিভিন্নভাবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে কনভিন্স করার চেষ্টা করছেন। তারা তাদের দাবির পক্ষে বিভিন্ন যুক্তিও পেশ করছেন।
বিষয়টি নিয়ে ভর্তি কমিটির সদস্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলাম বলেন, অনেকেই আমাকে এটা নিয়ে কনভিন্স করার চেষ্টা করেছে। এক্ষেত্রে তারা যে যুক্তিগুলো দেখিয়েছে সেগুলো শতভাগ গ্রহণযোগ্য নয়। তবে আমরা চাই কোথাও যেন বৈষম্য না হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্য দিয়ে অর্জিত এই বাংলাদেশে থেকে আমরা বৈষম্য দূর করতে চাই।
শতভাগ না হলেও সেটা যেন ৯৯ শতাংশে নিশ্চিত করা যায়। এক্ষেত্রে যা যা করণীয় তা করতে হবে। আজ ভর্তি কমিটির সভা আছে। উপাচার্যসহ ভর্তি কমিটির অন্যরা সেখানে থাকবেন। সবার আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত আসবে। আমার মনে হয়না পোষ্য কোটার বিষয়ে আলোচনাটা ফলপ্রসূ হবে।
তানহা আজমী