জাকারিয়া শেখ, ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধিঃ
হেমন্তের আকাশে প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য আর এই সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিন ভিড় করছেন ফুলবাড়ীর ছড়ার পার এলাকায় প্রকৃতি প্রেমীরা।বিস্তীর্ণ জলাশয়ে সবুজের বুক চিরে হালকা গোলাপি আর বেগুনি রঙে ফুটে উঠা নান্দনিক সৌন্দর্যে মুগ্ধতা ছড়ানো কচুরিপানা ফুল। দেখলে মনে হবে শিল্পীর তুলিতে নিখুঁতভাবে আঁকা কোনো এক ছবি। দৃষ্টি কেড়েছে প্রকৃতি প্রেমীদের।উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম-গঞ্জের বিলে বা জলাশয়ে ফোটা ফুলগুলো কোনো সুবাস না ছড়ালেও এসব ফুলের রয়েছে নান্দনিক রূপ।
বিভিন্ন বয়স ও শ্রেণী পেশার মানুষের সমাগমে মুখর এখন ছড়ারপাড় এলাকা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার শিমুলবাড়ী ইউনিয়নের ফুলবাড়ী- বালারহাট সড়কের পাশের ছড়ায় মুক্ত জলাশয়ে মনোমুগ্ধকর দৃশ্য ছড়াচ্ছে কচুরিপানার ফুলগুলো। সড়কের পাশে এই অসাধারণ কচুরিপানার মনোমুগ্ধকর দৃশ্য নজর কেড়েছে পথচারীদের। বিশেষ করে কোমলমতি শিশুদের খেলনা হিসেবেও ব্যবহৃত হচ্ছে এই ফুল। সৌন্দর্য প্রেমীরা এসব ফুলের সৌন্দর্যে আকৃষ্ট হয়ে মোবাইল ফোনে বিভিন্ন আঙ্গিকে ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পোস্ট করে আনন্দ পাচ্ছেন। আবার কেউ কেউ ফুলের সঙ্গে নিজেকেও ক্যামেরাবন্দি করছেন পরম আনন্দে। এ যেন কচুরিপানা ফুলের স্নিগ্ধতায় বিমোহিত দর্শনার্থীরা।
ছড়ারপাড় এলাকার বাসিন্দা বেলাল হোসেন বলেন,সৌন্দর্য বিলানোর পাশাপাশি এই উদ্ভিদ থেকে তৈরি জৈব সার কৃষিকাজে রাসায়নিক সারের বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
কচুরিপানা গো-খাদ্যের পাশাপাশি রোদে শুকিয়ে রান্নাবান্নার কাজে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করি।কচুরিপানা মানুষের বিভিন্ন উপকারে আসে। এটি দেশীয় মাছের খাদ্য বংশবিস্তার ও জলজ প্রানী রক্ষায় জলাশয়ের পানির তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রন করে থাকে।
শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান জানান, কচুরিপানার বহুজাতিক গুণ রয়েছে।বিদ্যালয়ে যাওয়ার সময় এই মনোমুগ্ধকর দৃশ্য উপভোগ করি।কচুরিপানার ফুল যে এত মনোমুগ্ধকর পরিবেশ তৈরি করতে পারে তা এখানে না আসলে বুঝতাম না।
ফুলপ্রেমী অনিল চন্দ্র জানান, মুক্ত জলাশয়ে এক সঙ্গে এত ফুল ফুটে থাকার যে অপরুপ সৌন্দর্য তা অন্য কোনো যায়গায় দেখা যায় না। কচুরিপানা ফুল গ্রামীন ঐতিহ্যের একটি নিদর্শন।দেখে মনে হয় যেন ফুলেল চাঁদরে ঢেকে রাখা হয়েছে জলাশয় গুলো। প্রস্ফুটিত এ সব ফুলের অপরূপ সৌন্দর্যে বিমোহিত হচ্ছেন ফুলপ্রেমীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ।
ফুলবাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোছা. নিলুফা ইয়াছমিন বলেন, কচুরিপানা এক ধরনের বহুবর্ষজীবী ভাসমান উদ্ভিদ এবং খুব দ্রুত বংশবিস্তার করে।কচুরিপানার মাধ্যমে জৈব সার প্রস্তুত করে কৃষিতে কৃষকরা ভালো ফলন পাচ্ছে। এ ছাড়াও এই উদ্ভিদটি গো খাদ্যের চাহিদা মেটানোসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
এমআই