নিজস্ব প্রতিনিধি:
কোন ব্যক্তি ৬০ বিঘার বেশি কৃষিজমি রাখতে পারবেন না। এমনকি উত্তরাধিকার সূত্রে বেশি জমি পেলেও ৬০ বিঘা কৃষিজমি রেখে অতিরিক্ত জমি ছেড়ে দিতে হবে। অতিরিক্ত কৃষিজমি নির্ধারিত ক্ষতিপূরণ দিয়ে সরকার খাস করতে পারবে।
৪০ বছর ধরে আইনে এ বিধান থাকলেও কোনো সরকার বাস্তবায়ন করেনি। ভূমি সংস্কার আইনের এমন বিধান বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার।
৬০ বিঘার বেশি কৃষিজমির মালিকদের চিহ্নিত করার কাজ আগামী ডিসেম্বর মাস থেকে শুরু হচ্ছে। একজন ব্যক্তি কিংবা কোনো পরিবারের অধীনে কী পরিমাণ জমি রয়েছে তা চিহ্নিত করার নির্ভরযোগ্য ব্যবস্থা এখনো সরকারের কাছে নেই। প্রাথমিকভাবে অনলাইন ভূমি উন্নয়ন কর দেওয়ার ব্যবস্থার মাধ্যমে জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) ভিত্তিতে সীমার অতিরিক্ত জমির মালিকদের চিহ্নিত করার কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
আইনে আছে ‘ভূমি সংস্কার আইন, ২০২৩’-এ কৃষি ‘কৃষি ভূমি অর্জন সীমিতকরণ’ শিরোনামের ৪ ধারায় বলা হয়েছে- ৬০ প্রমিত বিঘার বেশি কৃষিজমির মালিক বা তার পরিবার হস্তান্তর, উত্তরাধিকার, দান বা অন্য কোনো উপায়ে নতুন কোনো কৃষিজমি অর্জন করতে পারবেন না।
তবে এ বিধান বিধি দিয়ে নির্ধারিত শর্ত অনুযায়ী শিথিল করা যাবে। কোনো সমবায় সমিতির সব সদস্য তাদের ভূমির মালিকানা সমিতির অনুকূলে হস্তান্তর করে নিজেরা চাষাবাদ করলে; চা, কফি, রাবার বা অন্য কোনো ফলের বাগানের জন্য ব্যবহৃত ভূমি; কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠান তার নিজস্ব কারখানায় ব্যবহৃত কাঁচামাল উৎপাদনের উদ্দেশ্যে ভূমি ব্যবহার করলে; কোনো কাজের জন্য সরকারের প্রয়োজনীয় বিবেচিত এমন কোনো ভূমি; কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের শতভাগ রপ্তানিমুখী কৃষিপণ্য বা কৃষিজাত পণ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পের জন্য বা শতভাগ রপ্তানিমুখী বিশেষায়িত শিল্পের জন্য সরকারের অনুমোদন নিয়ে ব্যবহৃত ভূমি; কোনো সংস্থার জনকল্যাণে সরকারের অনুমোদন নিয়ে ব্যবহৃত ভূমি; কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের শিল্প-কারখানা স্থাপন বা সম্প্রসারণে সরকারের অনুমোদনে ব্যবহৃত ভূমি এবং ওয়াকফ, দেবোত্তর বা ধর্মীয় ট্রাস্টের ক্ষেত্রে এর মালিকানাধীন ভূমির সম্পূর্ণ আয় ধর্মীয় বা দাতব্য কাজে ব্যয় হলে ওই বিধান (৬০ বিঘার বেশি জমির মালিক না হাওয়া) শিথিল হবে।
যদি কোনো ভূমির মালিক এ ধারার বিধান লঙ্ঘন করে ক্রয়সূত্রে কোনো নতুন কৃষিভূমি অর্জন করেন, তাহলে যে পরিমাণ ভূমি ৬০ বিঘার বেশি হবে তা সরকারের অনুকূলে বিধি নির্ধারিত পদ্ধতিতে সমর্পিত হবে এবং সমর্পিত ভূমির মূল্য বাবদ কোনো ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না। তবে শর্ত থাকে যে, উত্তরাধিকার, দান বা উইলের মাধ্যমে অর্জিত ভূমির ক্ষেত্রে এ বিধান প্রযোজ্য হবে না।
উত্তরাধিকার সূত্রে অর্জিত ভূমি ৬০ বিঘার বেশি হলে ভূমির মালিক তার পছন্দ অনুযায়ী ৬০ বিঘা ভূমি রাখতে পারবেন এবং অবশিষ্ট ভূমি সরকার বিধি নির্ধারিত পদ্ধতিতে ক্ষতিপূরণ দিয়ে খাস করতে পারবে বলেও আইনে উল্লেখ করা হয়েছে।
তানহা আজমী