নিজস্ব প্রতিবেদক:
ক্ষমতা গ্রহণের পর যে কয়েকটি বড় চ্যালেঞ্জের মুখে অর্ন্তবর্তী সরকার পড়েছে, সেগুলোর একটি হলো নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ।বিশ্লেষকরা মনে করেন যে, দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে না রাখতে পারায় আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি মানুষের বড় ধরনের ক্ষোভ জন্মেছিল।
অগাস্টে গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে নতুন সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর মানুষের প্রত্যাশা ছিল, বাজারে পণ্যের দাম কমবে। কিন্তু বাস্তবে তা ঘটেনি।“বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। জিনিসপত্রের দাম তো কমেইনি, বরং সবকিছুর দাম আরও বেড়ে গেছে,” বলছিলেন ঢাকার ধানমণ্ডি এলাকার বাসিন্দা শায়লা সুলতানা।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাবে, আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার আগে দেশে মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়ায় ১১ দশমিক ৬৬ শতাংশ হয়েছিল।
নতুন সরকার ক্ষমতায় যাওয়ার পর সুদের হার বাড়ানোর পাশাপাশি নতুন করে টাকা না ছাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে সরকার।
এতে মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমলেও বাজারে সেটার প্রভাব খুব একটা দেখা যায়নি।
এমনকি তেল, চিনিসহ আমদানি করা নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের শুল্কহার কমিয়েও দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখতে পারছে না সরকার।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাব বলছে, অক্টোবরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ১০ দশমিক ৮৭ শতাংশ। গত তিন মাসে, অর্থাৎ অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর এটাই সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতি। অক্টোবরে খাদ্য মূল্যস্ফীতিও বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২ দশমিক ৬৬ শতাংশে।
“সোজা কথায়, গত তিন মাসে সরকার কোনোভাবেই দ্রব্যমূল্যকে নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয় নাই,- বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ এম কে মুজেরী।
দ্রব্যমূল্য যে সহনীয় পর্যায়ে নেই, সেটি সরকারও স্বীকার করছে।
“আমি মধ্যবিত্ত, নিজে বাজার করে খাই। আমি নিজেও মূল্যস্ফীতির কারণে চাপে আছি,” বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের বলেন নবনিযুক্ত খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার।
সরকার বলছে, সাম্প্রতিক বন্যার কারণে কৃষিক্ষেত্রে যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, সেটিও পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির অন্যতম কারণ। শিগগিরই চালসহ সবকিছুর দাম কমে আসবে বলেও আশা করছেন তারা।
“গত এক সপ্তাহ পর্যন্ত চালের দাম যতটুকু বেড়েছে আপাতত তা স্থিতিশীল রয়েছে, আমন ধান বাজারে এলে দাম আস্তে আস্তে আরও কমবে,” সাংবাদিকদের বলেন মি. মজুমদার।
তানহা আজমী