রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪

যেখানে আজও ব্যবহার হ‌চ্ছে ব্রিটিশ আমলের ঐতিহ্যবাহী ইঁদারা

রোববার, নভেম্বর ২৪, ২০২৪
যেখানে আজও ব্যবহার হ‌চ্ছে ব্রিটিশ আমলের ঐতিহ্যবাহী ইঁদারা

জাকা‌রিয়া শেখ, ফুলবাড়ী(কু‌ড়িগ্রাম)প্রতি‌নি‌ধিঃ

বিলুপ্ত হওয়া প্রাচীন গ্রামবাংলার ঐতিহ্যগুলোর মধ্যে অন্যতম হ‌চ্ছে ইঁদার। যা এক সময় পানের জন্য সুপেয় পানির একমাত্র উৎস। বর্তমান আধু‌নিক প্রযুক্তির যুগে গ্রামবাংলায় বিকেল বেলা  মা-বোনের কলসি কো‌লে ইঁদারা থেকে পা‌নি আনার  চিত্র তেমন একটা দেখা না গেলেও কু‌ড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী উপ‌জেলায় আজও দেখা মিল‌ছে সেই বাস্তব চিত্র।

কু‌ড়িগ্রা‌ম জেলার ফুলবাড়ী উপজেলার সা‌বেক দা‌সিয়ারছড়া ছিটমহল সড়‌কে আজোয়াটারী গ্রামে ব্রিটিশ কা‌লের সাক্ষী এই অঞ্চ‌লের ঐতিহ্যবাহী সচল  ইঁদারাটি-ই ছিল এই গ্রামের মানুষের সুপেয় খাবার পানির একমাত্র উৎস। এই গ্রা‌মের প্রবীন ব্যক্তি মোগবুল হো‌সেন জানান, এই এলাকায় ভোলামামুদ না‌মে একজন গোয়ালা ছি‌লেন।‌তি‌নি সর্বদা দু‌ধে পা‌নি মি‌শি‌য়ে বি‌ক্রি কর‌তেন। দু‌ধে পা‌নি মিশা‌নো মহাপাপ বিষয়‌টি জান‌তে পে‌রে তি‌নি ১৩১৩ সা‌লে পাপ মোছ‌নের আশায় এই ইঁদারাটি নির্মান ক‌রেন। ১৩৫৭ সা‌লে  ইদারা‌টি প্রথম সংস্কার করা হয়। পরবর্তী‌তে বাংলা‌দেশ ভারত ছিটমহল বি‌নিম‌য়ের সময় প্রশাসনের উ‌দ্যেগে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যকে ধ‌রে রাখ‌তে সরকা‌রি ভা‌বে ১৯১৭-১৮ অর্থবছ‌রে এল‌ জি এস‌ পি ৩ এর অর্থায়‌নে ইঁদারারটি সংস্কার করা হয়।২০-২৫ ফুট গোলাকার ও অনন্ত ৫০-৬০ ফুট নিচ পর্যন্ত মাটি খুড়ে এই ইঁদারা তৈরি করা হয়ে‌ছে। গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য ধ‌রে রাখ‌তে এই  কুয়া‌টির উপর টি‌নের ছাউ‌নি নির্মান সহ গোড়া বাধাঁই করে লোকজ‌নের বসার ব্যবস্থা করা  হ‌য়ে‌ছে। এই কুয়া‌টি এখন এই এলাকার কা‌লের সাক্ষী হ‌য়ে দা‌ড়ি‌য়ে র‌য়ে‌ছে।

এই এলাকার ওয়ার্ড সদস্য সাইফুর রহমান জানান, আমার বাপ দাদার সময় থে‌কে এই ইঁদারার পা‌নি সংগ্রহ ক‌রে খাওয়াসহ গৃহস্থালির সকল কা‌জে ব্যবহার করে এই এলাকার মানুষ।এমন কি ইঁদারারটি থে‌কে ছোট ছোট বালক বা‌লিকারাও সহ‌জে পা‌নি তুল‌তে পা‌রে। বর্তমানে প্রায় সকলের বাড়িতে টিউব‌য়েল থাকার পরেওে আয়রন মুক্ত সু‌পেয় পা‌নির একমাত্র উৎস হিসা‌বে আমরা এই কুয়া‌টি‌কে ব্যবহার করি‌। ইঁদারারটির চা‌রি‌দি‌কে বসার ব‌্যবস্থা করায় লোকজন অবসর সময় কাটান।

কুয়া থে‌কে পা‌নি তু‌লে কল‌সি ক‌রে নি‌য়ে যে‌তে যে‌তে সোমা নামের এক গৃহবধু ব‌লেন ,এই কুুয়ার পা‌নি আয়রন মুক্ত হওয়ায় ভাত তরকা‌রির রং ভাল হয় তাই একটু কষ্ট হ‌লেও আমরা এই পা‌নি ব্যবহার ক‌রি।এই ইঁদারার পানি স্বচ্ছ ও ঠান্ডা।

সা‌বেক ছিটমহল বি‌নিময় সমন্বয়ক আলতাব হোসেন বলেন, ১৩১৩ সা‌লে ছিটমহল এবং বাংলার সীমা‌ন্তে অব‌স্থিত এই কুয়া‌টি কা‌লের সাক্ষী হ‌য়ে দা‌ড়ি‌য়ে আছে। কুয়া‌টি দেখ‌তে দুরদুরান্ত থে‌কে লোকজন আসে।এটা আমা‌দের গ্রা‌মের ঐতিহ্য।এই কুয়ার পানি সবসময় ঠাণ্ডা থাকে। কুয়ার উপর ছাউ‌নিসহ রক্ষণাবেক্ষণ করায় পানি নষ্ট হয় না।

উপ‌জেলার প্রকৌশলী মামুনুর রহমান জানান,গ্রামবাংলার প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী ইঁদারাগুলো কালের আবর্তে হারিয়ে গেছে। যা এখন শুধুই স্মৃতি। সরকা‌রি অর্থ দি‌য়ে সংস্কার ‌করায় ব্রিটিশ কালের সাক্ষী হ‌য়ে দা‌ড়ি‌য়ে থাকা ঐতিহ্যবাহী ইঁদারাটি ব্যবহার হ‌চ্ছে। এই এলাকার মানুষের সুপেয় পানির চাহিদা পূরণ ক‌রছে এই ইঁদারা‌টি।

এমআ্ই


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল