শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪

শীত: চাষিদের করণীয় জানতে ১৬১২৩ বা ৩৩৩১ নম্বরে কল করতে পারেন

শনিবার, নভেম্বর ৩০, ২০২৪
শীত: চাষিদের করণীয় জানতে ১৬১২৩ বা ৩৩৩১ নম্বরে কল করতে পারেন

সময় জার্নাল ডেস্ক:

চলে এসেছে শীত। সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত ঘন কুয়াশায় ঢেকে থাকছে চারপাশে। পড়ছে শিশিরবিন্দু, বইছে হিমেল হাওয়া৷ এ সময়ে নিম্ন তাপমাত্রা, ঘন কুয়াশা, গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি ও মেঘলা আবহাওয়া  আলু, টমেটো, সরিষা, শিম, পান, আম, লিচু, কুল, বোরো বীজতলা, ও অন্য ফসলের জন্য ক্ষতিকর। এ অবস্থা থেকে ফসলকে রক্ষার জন্য চাষিদের কিছু পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

আলু ও টমেটো
শৈত্যপ্রবাহ চলাকালে ঘন কুয়াশা থাকলে আলু, টমেটো ক্ষেতে নাবী ধ্বসা ও আগাম ধ্বসা রোগ দেখা দিতে পারে। এ অবস্থা থেকে আলু ও টমেটো ফসল রক্ষা করতে-

১. মড়ক দেখা দেওয়ার আগেই ভেলি বেঁধে দেওয়ার পর প্রতিরোধক হিসেবে স্পর্শ জাতীয় ছত্রাকনাশক যেমন ডাইথেন এম-৪৫/ইন্ডোফিল এম-৪৫/সিকিউর/মেলোডি ডিও ২ গ্রাম/লিটার পানিতে মিশিয়ে ৭ দিন পর পর স্প্রে করতে হবে।

২. যেসব জমিতে এরই মধ্যে মড়ক দেখা দিয়েছে; সেসব জমিতে রিডোমিল গোল্ড (২.৫ গ্রাম/লিটার)/ক্যাবরিওটপ (৩ গ্রাম/লিটার)/নিউবেন (২ গ্রাম/লিটার)/একরোভেট এ, জেড (৪ গ্রাম/লিটার)/করমিল (২ গ্রাম/লিটার)/নাজহ (২ গ্রাম/লিটার) ৭ দিন পর পর স্প্রে করতে হবে। স্প্রে করার সময় পাতার ওপর ও নিচে ভালোভাবে ভিজিয়ে দিতে হবে।

৩. আলুর জমিতে মড়ক দেখা দিলে ইউরিয়া উপরিপ্রয়োগ ও সেচ প্রদান বন্ধ রাখতে হবে।

৪. এ ছাড়া জাবপোকা ও সাদা মাছি পোকা দমনের জন্য তুন্দ্রা/এসাটাফ ১ গ্রাম/লিটার পানি বা ভলিয়ম ফ্লেক্সি ৫ গ্রাম/১০ লিটার পানি বা ম্যালাথিয়ন জাতীয় যে কোনো কীটনাশক অনুমোদিত মাত্রায় স্প্রে করা যেতে পারে।

ভুট্টা
১. ভুট্টা ক্ষেতের গাছের গোড়ার মাটি তুলে দিতে হবে।

২. ভুট্টা ফসলে এইজেড ও জাত অনুসারে বীজ গজানোর ২৫-৩০ দিন পর প্রথম কিস্তি এবং ৪০-৪৫ দিন পর দ্বিতীয় কিস্তি ইউরিয়া ও এমওপি সার প্রয়োগ করতে হবে।

৩. ভুট্টার সাথে সাথী বা মিশ্র ফসলের চাষ করে থাকলে সেগুলোর প্রয়োজনীয় পরিচর্যা করতে হবে।

৪. ভুট্টা ফসলে ফল আর্মিওয়াম পোকার আক্রমণ দেখা দিতে পারে, কাজেই নিয়মিত মনিটরিং, স্কাউটিং ও প্রয়োজনে দমন ব্যবস্থা নিতে হবে। মনিটরিংয়ের জন্য ফেরোমন ট্রাপ (একর প্রতি ৫টি) ব্যবহার করতে হবে।

সরিষা বা সিম
মেঘলা আবহাওয়ায় সরিষা ক্ষেত ও শিম গাছে জাবপোকার আক্রমণ হতে পারে। আক্রমণ দেখা দিলে জৈব বালাইনাশক হিসেবে বিষকাটালির রস, নিম/তামাক পাতার রস প্রয়োগ করতে হবে। আক্রমণ তীব্র হলে ম্যালাথিয়ন ৫৭ ইসি জাতীয় কীটনাশক প্রতি লিটার পানিতে ২ মিলিলিটার হারে মিশিয়ে ফসলে স্প্রে করতে হবে।

পান
ঘন কুয়াশা, নিম্ন তাপমাত্রা ও শৈত্যপ্রবাহের ফলে পান গাছের পাতা ঝরে যাওয়া/পাতা হলুদ হয়ে যাওয়া ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে। এ অবস্থায়-

১. পান বরজের বেড়া ও ছাউনি ঘন করে মেরামত করতে হবে। যাতে কুয়াশা ও বাতাস পান বরজে ঢুকতে না পারে। বিশেষত উত্তর পার্শ্বের বেড়া ভালোভাবে দিতে হবে।

২. আক্রান্ত মরা পান গাছ, লতা-পাতা ভালোভাবে বেছে বরজ পরিষ্কার করে মাটিতে পুঁতে ফেলতে হবে কিংবা পুড়িয়ে ফেলতে হবে।

৩. সরাসরি সরিষার খৈল ও নাইট্রোজেন সার প্রয়োগ করা যাবে না। খৈল ভিজিয়ে ৭/৮ দিন পচানোর পর তা শুকিয়ে প্রয়োগ করতে হবে।

৪. পানের লতা ও পাতার পচন রোগ দমনের জন্য (মেলোডি ডিও প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম)/সিকিউর (১ গ্রাম/লিটার পানিতে)/জিটালাক্স ২৫ ডব্লিউ পি অনুমোদিত মাত্রায় আক্রান্ত লতা ও পাতায় ১০ দিন অন্তর অন্তর ভালোভাবে ভিজিয়ে স্প্রে করতে হবে।

আম, লিচু ও কুল
ঘন কুয়াশার কারণে আম, লিচু ও কুল গাছের মুকুল নষ্ট হওয়ার আশংকা আছে। এ সময় হপার পোকা দমনে সাইপারমেথ্রিন জাতীয় কীটনাশক ১ মিলিলিটার/লিটার হারে পুরো গাছে স্প্রে করতে হবে। এনথ্রাকনোজ রোগ দমনে প্রতিরোধক হিসেবে কার্বেন্ডাজিম/প্রোপিকোনাজল জাতীয় ছত্রাকনাশক অনুমোদিত হারে স্প্রে করতে হবে।

বোরো বীজতলা
ঘন কুয়াশা, নিম্ন তাপমাত্রা ও শৈত্যপ্রবাহের ফলে বোরো বীজতলা কোল্ড ইনজুরির কারণে চারা হলুদ হয়ে মারা যাওয়া, চারা ধ্বসা ও কৃসেক রোগে আক্রান্ত হতে পারে। সে ক্ষেত্রে-

১. প্রতিদিন সন্ধ্যায় বীজতলা ডুবিয়ে সেচ দিতে হবে এবং সকালে পানি বের করে দিতে হবে।

২. আবহাওয়া কুয়াশাচ্ছন্ন হলে বীজতলা স্বচ্ছ পলিথিন দিয়ে রাতদিন ঢেকে রাখতে হবে এবং রোদ হলে পলিথিন উঠিয়ে ফেলতে হবে।

৩. সকালে চারার ওপর দিয়ে দড়ি টেনে শিশির ঝরিয়ে দিতে হবে, এতে চারা কোল্ড ইনজুরি থেকে রক্ষা পাবে।

৪. প্রতি শতাংশ বীজতলায় ৪০০ গ্রাম জিপসাম, ২৮০ গ্রাম ইউরিয়া ও ২ কেজি ছাই প্রয়োগ করলে উপকার পাওয়া যাবে।

৫. চারা ধ্বসা ও চারা মরা রোগের জন্য মেনকোজেব প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম হারে মিশিয়ে বীজতলায় স্প্রে করতে হবে।

তা ছাড়া কৃষির যে কোনো সমস্যায় উপজেলা কৃষি অফিস অথবা কৃষি কল সেন্টারের ১৬১২৩ নাম্বারে বা কৃষক বন্ধু সেবার ৩৩৩১ নাম্বারে কল করে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিতে পারেন।

সময় জার্নাল/এলআর


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল