জাকারিয়া শেখ, ফুলবাড়ী(কুড়িগ্রাম):
দেশের উত্তরের সীমান্ত ঘেষা কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলায় শীতের প্রকোপ তীব্র আকার ধারণ করছে। হিমেল হাওয়া আর ঘন কুয়াশায় ঢেকে যাচ্ছে পুরো উপজেলা। তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় জনজীবন বিপর্যস্থ হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে খেটে খাওয়া দিনমজুর এবং দরিদ্র জনগোষ্ঠী শীতের কারণে চরম দুর্ভোগে পড়েছে। শিশু ও বৃদ্ধরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে। সর্দি, কাশি, জ্বর, শ্বাসকষ্ট এবং নিউমোনিয়ার মতো সমস্যায় ভুগছেন অনেকেই।
উপজেলার রাবাইতারী গ্রামের কৃষক আমিনুল ইসলাম (৩৫)জানান, দিনে দিনে যেভাবে শীতের প্রকোপ বাড়ছে,কুয়াশায় ঢেকে যাচ্ছে এলাকায় তাতে বোরো ধানের বীজতলা রক্ষায় কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়বে।এর প্রভাব পড়বে রোপনের সময়।বীজ সংকট দেখা দেয়ার আশু সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে।সেই সঙ্গে কুয়াশার কারণে আলু ও সরিষার মতো ফসলের ক্ষতির আশঙ্কা করছেন স্থানীয় কৃষকরা।
সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান নজির হোসেন জানান,শীতবস্ত্রের অভাবে দুঃস্থ মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকাগুলোতে দরিদ্র মানুষের কষ্ট আরও বেশি। গরম কাপড় কেনার সামর্থ্য না থাকায় অনেকেই খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। সরকার ও বিভিন্ন সংস্থা থেকে এখনো কোনো শীতবস্ত্র বিতরণ শুরু হয়নি।
উপজেলার শীতার্ত মানুষদের সাহায্যার্থে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগ নেয়ার দাবী জানিয়েছেন অভিজ্ঞজন। তারা জানান দ্রুত শীতবস্ত্র বিতরণ ও বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা জরুরি। পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে শীতজনিত রোগ প্রতিরোধে সচেতন করা প্রয়োজন।
ফুলবাড়ী ইউনিয়নের ব্যবসায়ী সাইফুর রহমান বলেন, সকালে ঘন কুয়াশার কারনে হেড লাইট জ্বালিয়ে রাস্তায় চলাচল করতে হচ্ছে। কুয়াশার কারনে বেশি দুর দেখা যায় না। শীতকবলিত মানুষের কষ্ট লাঘবে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। সরকারি উদ্যোগ, স্থানীয় প্রশাসন ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোর সক্রিয় ভূমিকায় শীতার্ত মানুষদের দুঃখ কিছুটা হলেও লাঘব করতে পারে।
কুড়িগ্রামের রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানান, তাপমাত্রা সপ্তাহ ধরে জেলা জুড়ে ১২ থেকে ১৪ ডিগ্রী সেলসিয়াসের মধ্যে উঠানামা করছে। ঠান্ডার অনুভূতি কিছুটা বেড়েছে। ভোর থেকে ঠান্ডা বাতাস বইছে। দুইদিন থেকে ঘন কুয়াশা পড়ছে। এ মাসে জেলায় দুই-তিনটি শৈত্য প্রবাহ বয়ে যেতে পারে বলে জানান তিনি।
এমআই