জাহিদুল ইসলাম , রাবি প্রতিনিধি :
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য কোটাকে লাল কার্ড প্রদর্শন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। রবিবার ( ৮ ডিসেম্বর) দুপুর তিনটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে সাধারণ শিক্ষার্থীরা এ কর্মসূচি পালন করেন। কর্মসূচি থেকে পোষ্য কোটার পক্ষে যুক্তি দেখিয়ে আগামীকাল ( ৯ ডিসেম্বর) শিক্ষক - কর্মকর্তাকে উন্মুক্ত বিতর্কের আহবান জানিয়েছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
এসময় শিক্ষার্থীরা কোটা না মেধা? মেধা মেধা' 'সারা বাংলায় খবর দে কোটা প্রথার কবর দে ', 'জনে জনে খবর দে পোষ্য কোটার কবর দে', 'সাকিব আঞ্জুম মুগ্ধ', 'জোহা স্যারের স্মরণে ভয় করিনা মরনে ' 'আপোষ না বিপ্লব, বিপ্লব বিপ্লব,'' তুমি কে? আমি কে? মেধাবী মেধাবী, 'ছাত্রসমাজের একশান ডাইরেক্ট একশান,' ' মেধাবীদের কান্না আর না আর না, 'ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকে।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রাবি শাখার সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার বলেন, পোষ্য কোটার বিরুদ্ধে আজকে আমরা রেড কার্ড প্রদর্শন করলাম। আগামীকালের বিতর্ক প্রতিযোগিতায় যদি তারা তাদের পোষ্য কোটার পক্ষে যুক্তি দেখাতে পারে তাহলে আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা পোষ্য কোটাকে মেনে নিব। আর যদি কোন যুক্তি দেখাতে না পারে তাহলে সেখান থেকে পোষ্য কোটার বাতিল ঘোষণা করতে হবে। জুলাই অভুত্থানের মাধ্যমে আমরা ফ্যাসিস্ট একটা সরকারের পতন ঘটিয়েছি। পোষ্য কোটা নিয়ে তালবাহনা করলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পতন ঘটাতে ১০ মিনিটের বেশি সময় আমরা নিব না।
এসময় বৈষম্য বিরোধী বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মেশকাত মিশু বলেন, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে এবং চাকরির বাজারে বৈষম্য মূলক যে পোষ্য কোটা রয়েছে সেটাকে লাল কার্ড দেখাতে আজকের কর্মসূচি। আমাদের একমাত্র দাবি হচ্ছে পোষ্য কোটাকে চিরতরে বিলুপ্ত করতে হবে। দেশের সর্বস্তরের প্রতিষ্ঠান থেকে এ বৈষম্য কোটা বিলুপ্ত করে বৈষম্য বিরোধী বাংলাদেশ গড়তে হবে।
শিক্ষার্থীদের সাথে সংহতি প্রকাশ করে আইন বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক মোর্শেদুল ইসলাম বলেন,১৯৯৩ সালে তৎকালীন যে উপাচার্য ছিলেন তার ছেলেকে ৩৭ মার্কও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি নেওয়া হয়নি। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ন্যূনতম মার্ক ৪০। পরবর্তীতে দেখা গেছে ২২, ২৫, ২৮, ৩২ এবং ৪০ পায়না এমন ছাত্র-ছাত্রীদের কোটায় ভর্তি করা হয়েছে। পরে এসব ছাত্রছাত্রীরা সংশ্লিষ্ট ডিপার্টমেন্টে যেয়ে ফার্স্ট-ক্লাস ফার্স্ট এবং সেকেন্ড হয়েছে। কিভাবে হয়েছে? তেল দিয়ে। এদেরকেই পরবর্তী সংশ্লিষ্ট বিভাগের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এই কারণে আমি চাইনা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন শিক্ষকের ছেলে বা মেয়ে কোটায় ভর্তি হোক।
উল্লেখ্য, ১৪ নভেম্বর পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে আমরণ অনশনেও বসেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মাঈন উদ্দীনকে সভাপতি করে ২০ সদস্যের কোটা পর্যালোচনার কমিটি গঠিত হয়। তবে এ কমিটি সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করে করেও কার্যকরী সিদ্ধান্তে আসতে পারছে না। তার প্রেক্ষিতে আজকে লাল কার্ড প্রদর্শনি কর্মসূচি পালিত হয়।
এমআই