নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে থাকা যাবতীয় মামলা শেষ হলেই তিনি দেশে ফিরবেন বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুর পৌনে একটায় যুক্তরাজ্য থেকে শাহাজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছার পর সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।
এক-এগারোর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর ২০০৭ সালের ৭ মার্চ তারেক রহমানকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এরপর তাকে ১৩টি মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাকে রিমান্ডেও নেওয়া হয়।
১৮ মাস পর ২০০৮ সালের ৩ সেপ্টেম্বর জামিনে কারামুক্ত হন তিনি। এর আট দিন পর ১১ সেপ্টেম্বর দেশ ছেড়ে যুক্তরাজ্যে চলে যান। তখন থেকে সপরিবারে লন্ডনে অবস্থান করছেন। যুক্তরাজ্যে থাকা অবস্থায় একাধিক মামলায় কারাদণ্ড হয় তারেক রহমানের।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর কারাগার থেকে মুক্ত হন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ দলটির অধিকাংশ নেতা। সরকার পরিবর্তনের পর তারেক রহমান দ্রুত দেশে ফিরবেন বলে দলটির নেতাকর্মীরা ভেবে নিলেও চার মাসেও ফেরেননি তারেক রহমান। কবে নাগাদ তিনি দেশে ফিরতে পারেন এ নিয়ে দলটির নেতাকর্মীরা ধোঁয়াশায় রয়েছেন। এমন অবস্থার মধ্যে তারেক রহমান কবে যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফিরতে পারেন সে বিষয়ে তথ্য জানান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল।
বিএনপি মহাসচিব জানান, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মামলাগুলো শেষ হলেই তিনি দেশে ফিরবেন।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তারেক রহমানের বার্তা পৌঁছে দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, নেতাকর্মীদের ধৈর্য্য ধরার আহ্বান জানিয়েছেন তারেক রহমান। যে বিজয় এসেছে তা রক্ষা করারও নির্দেশনা দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
রাজনৈতিক দলগুলো অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ প্রমাণ করার চেষ্টা করছে বলে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম যে মন্তব্য করেছেন এর জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমি জানি না উনি এমন বক্তব্য কীজন্য করেছেন। কিন্তু ওনার এমন বক্তব্য রাজনৈতিক বিরোধী। আমি আশা করি না ওনারা এই ধরনের বক্তব্য দেবেন। রাজনৈতিক দলগুলো সব সময় এই অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন করেছে এবং একটি উদ্দেশ্য রয়েছে সেটা হচ্ছে গণতন্ত্রকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা। যেটার জন্য গত ১৫ বছর ধরে আমরা লড়াই করছি।
মির্জা ফখরুল বলেন, সংস্কার নয়, নির্বাচনকে প্রাধান্য দিচ্ছে বিএনপি এমন ধারনা ভুল। বিএনপি দুই বছর আগেই সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছে। নূন্যতম সংস্কার শেষ করে নির্বাচন দিতে হবে। বাংলাদেশে যেসব সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে তা নির্বাচিত সরকার ছাড়া মোকাবেলা করা চ্যালেঞ্জিং।
গত ৩০ নভেম্বর স্ত্রীর চিকিৎসাসহ দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে দেখা করতে লন্ডন যান মির্জা ফখরুল। সেখানে তিনি যুক্তরাজ্য বিএনপি আয়োজিত একটি সমাবেশে বক্তব্য দেন। এছাড়া যুক্তরাজ্য বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় ও যুক্তরাজ্যের বাংলা গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকদের সঙ্গেও মতবিনিময় করেন।
সফর শেষে বুধবার লন্ডনের স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টায় বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন ফখরুল। আজ দুপুরের দিকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন।
এমআই