আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
অবশেষে অভিশংসিতই হলেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইউল। দেশটির আইনপ্রণেতাদের ভোটে অভিশংসিত হয়েছেন তিনি। এতে সায় দিয়েছেন দেশটির পার্লামেন্টের ২০৪ জন সদস্য।
শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ খবর জানায় ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলকে সরাতে দ্বিতীয় দফার অভিশংসন প্রস্তাবে সায় দিয়েছেন দেশটির পার্লামেন্টের ২০৪ জন সদস্য। শনিবার পার্লামেন্টে আনা দ্বিতীয় দফা অভিশংসন প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটি হয়।
ভোটের এই ফলাফলের মধ্যে দিয়ে ইওনকে অবিলম্বে বরখাস্ত করার প্রাথমিক পথ খুলল। তাকে সরানো হলে প্রধানমন্ত্রী হবেন ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট।
তবে আইনপ্রনেতাদের এই রায় প্রেসিডেন্টকে স্থায়ীভাবে সরানোর নিশ্চিয়তা দেয় না। কারণ, এখানে আইনি মারপ্যাঁচও রয়েছে। অভিশংসনের পুরো প্রক্রিয়া শেষ হতে কয়েক সপ্তাহও লেগে যেতে পারে।
এ বিষয়ে এখন সাংবিধানিক আদালতে শুনানি হবে। যদি আদালতের নয় সদস্য বিশিষ্ট কাউন্সিলের ছয় জন অভিসংশন প্রস্তাবের পক্ষে মত দেন, তখনই কেবল প্রেসিডেন্টকে স্থায়ীভাবে পদ ছাড়তে হবে।
তেমন পরিস্থিতিতে ৬০ দিনের মধ্যে নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করতে হবে।
সম্প্রতি সামরিক আইন জারির কয়েক ঘণ্টা পর প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন তিনি। এর জের ধরে দেশটিতে রাজনৈতিক উত্তেজনা বিরাজ করছে। তাকে অভিশংসের জন্য বিরোধীরা অব্যাহত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল।
এর আগে, ইউনের অভিশংসনের জন্য দেশটির সংসদের সামনে অবস্থান নেয় হাজার হাজার মানুষ।
উল্লেখ্য, গত ৩ ডিসেম্বর মঙ্গলবার রাতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে ‘রাষ্ট্রবিরোধী শক্তিকে’ সমূলে উৎপাটনের কথা বলে হঠাৎ করেই সামরিক আইন জারির ঘোষণা দেন ইউন। তার এ ঘোষণায় পুরো দক্ষিণ কোরিয়া স্তম্ভিত হয়ে যায়। পরে প্রবল বিরোধিতার মুখে সামরিক আইন প্রত্যাহারে বাধ্য হন প্রেসিডেন্ট।
কিন্তু তার এই পদক্ষেপে দক্ষিণ কোরিয়া কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে গুরুতর রাজনৈতিক সংকটে পড়ে। বিরোধী দলের অভিশংসন প্রস্তাবের মুখে পড়েন ইউন।
গত শনিবার ইউন বিরোধীদল নিয়ন্ত্রিত পার্লামেন্টে প্রথম দফা অভিশংসন উদ্যোগ থেকে রক্ষা পান। তার ক্ষমতাসীন দল পিপল পাওয়ার পার্টির (পিপিপি) আইনপ্রণেতারা পার্লামেন্টের ওই অধিবেশন বয়কট করায় রক্ষা পান ইউন।
এর আগে, ইউন তার রাজনৈতিক বিরোধীদের সমালোচনা করে রাষ্ট্রবিরোধী শক্তি হিসেবে আখ্যায়িত করেন। এক টেলিভিশন ভাষণে তিনি বলেন, আমি শেষ পর্যন্ত লড়াই করে যাব।
এমআই