এহসান রানা, ফরিদপুর প্রতিনিধি:
ফরিদপুর জেলা সদরের নর্থচ্যানেল ইউনিয়নে মোহনের কোল নামে পরিচিত একটি জলাশয়ে বিষ দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। প্রতিহিংসা পরায়ন হয়ে রাতের আঁধারে দুর্বৃত্তদের দেয়া বিষে গত চার দিন যাবৎ মরে ভেসে উঠছে নানা প্রজাতির মাছ। এতে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পড়েছেন সংশ্লিষ্ট জেলেরা।
জলাশয়টি ওই ইউনিয়নের মোজাফফর মাতুব্বরের ডাঙ্গী গ্রামে প্রায় ৮ একর জায়গা নিয়ে অবস্থিত। এটি পদ্মা নদীর নিকটবর্তী হওয়ায় প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে এই কোলটিতে দেশীয় নানা প্রজাতির মাছ এসে থাকে। যা ওই গ্রামের একাধিক বাসিন্দার মালিকানা সম্পত্তি।
এরমধ্যে সাড়ে তিন একর প্রতিবছর ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকায় ৫ বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক ভাড়া নিয়েছেন ফরিদপুর পৌরসভার ভাটিলক্ষীপুর এলাকার বাসিন্দা বিষ্ণু চন্দ্র মালো (৫২) সহ তিন ব্যক্তি। অন্য দুজনের মধ্যে রয়েছেন পৌরসভার বাসিন্দা কামরুল হাসান করিম ও জামাল মীর।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ মরে ভেসে রয়েছে কোলটিতে। তা জেলেরা নেট জাল দিয়ে ধরে একটি জায়গায় জড়ো করে রাখছেন। সেখান থেকে দুর্গন্ধও ছড়িয়ে পড়ছে আশপাশে।
জেলে বিষ্ণু চন্দ্র মালো অভিযোগ করে জানান, প্রায় ৭/৮ মাস আগে কোলটি ভাড়া নিয়ে মাছ মেরে বিক্রি করে আসছি। কিন্তু পূর্বের ভাড়াটিয়া স্থানীয় বাদল শেখ (৪০) কোলটি ভাড়া নিতে না পারায় আমার সাথে কয়েকবার বাকবিতন্ডায় জড়িয়েছে। সে বিভিন্ন সময় আমাকে হুমকি দিয়ে বলেছে, শহর থেকে এসে মাছ কিভাবে মেরে নেই সেটা দেখে নেব।
এরমধ্যেই এই ঘটনা ঘটেছে, বিষ না দিলে এভাবে মাছ মরতে পারে না। আমার ধারণা, বাদলই আমার অংশে বিষ দিয়েছে। ও পূর্বেও বিষ দিয়েছিল এখানে।
এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত তাঁর প্রায় তিন লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানান। এছাড়া এ ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে জড়িতদের বিচারের দাবি জানান তিনি।
মাসুদ হোসেন নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, এখানে দীর্ঘদিন যাবৎ বিষ্ণু দাদা কাজ করে আসছেন। এ বছর উনার অনেক টাকা ব্যয় হয়েছে। হঠাৎ করে গত কয়েকদিন যাবত শুনতে পাই এখানে মাছ মরে ভেসে উঠতেছে। এখানেও এসেও যার সত্যতা পাই, এখনও মাছ মরে ভেসে উঠতেছে। যে বা যারাই এখানে বিষ দিয়েছে তাদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাই।
তবে বিষ দেয়ার বিষয়ে অস্বীকার করেন স্থানীয় বাদল শেখ। তিনি বলেন, ওই কোলে আমারও একটি অংশ রয়েছে। বিষ দিলেতো আমার মাছও মরবে। আমিও খুজতেছি কারা বিষ দিয়েছে। তবে তিনি পূর্বের বিষ দেয়ার ঘটনাটি স্বীকার করেন।
এ বিষয়ে ব্যাপারে ফরিদপুরের কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদউজ্জামান জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে, এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ এসেছে কি-না খোঁজ নিচ্ছি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সময় জার্নাল/এলআর