সময় জার্নাল প্রতিবেদক : মাদক নির্মূলে সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে জানিয়েছে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এমপি বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী ২০৪০ সালের মধ্যে তামাক মুক্ত দেশ গড়ার ঘোষণা দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণা বাস্তবায়নে কাজ করা আমাদের দায়িত্ব।
শনিবার (২৬ জুন) সন্ধ্যায় মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে দ্যা বাংলাদেশ এন্টি ড্রাগ ফেডারেশন (বিএডিএফ) আয়োজিত মাদকবিরোধী ওয়েবিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনামন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, মাদকের মন্দ দিক নিয়ে নতুন করে বলার কিছুই নেই। তামাকের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সরকার সচেতন রয়েছে। বিশ্বব্যাপী মাদককে ঘৃণার চোখে দেখা হচ্ছে। এর থেকে দূরে থাকার চেষ্টা চলছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রীও সব সময় মাদকের বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখছেন। বিশ্ব ফোরামেও তিনি মাদকের বিরুদ্ধে কথা বলে যাচ্ছেন।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরকে আরও শক্তিশালী করা হচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, সরকারের পক্ষে একা এ কাজ সম্ভব নয়। এ জন্য দ্যা বাংলাদেশ এন্টি ড্রাগ ফেডারেশনসহ এধরণের সংগঠেনের সহযোগিতা প্রয়োজন।
সভাপতির বক্তব্যে দ্যা বাংলাদেশ এন্টি ড্রাগ ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট ও সাবেক এমপি নুর মুহাম্মদ বলেন, মাদক নির্মূলে কিভাবে এ সংগঠনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায় তা নিয়ে পরিকল্পনা করছি। পরিকল্পিতভাবে কাজ করতে গেলে প্রচার ও পয়সার প্রয়োজন রয়েছে। যেহেতু আমি যমুনা ব্যাংকের দায়িত্বে আছি সে জন্য আমরা ভালো একটা বাজেট রাখতে পারব বলে আশা করছি। এছাড়াও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও ব্যাংকগুলোকে সাথে নিয়ে আমরা এগিয়ে যাবো। মাদক থেকে যারা ফিরে আসতে চায় আমরা তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবো। এবং মাদকজনিত কারণে যাদের কিডনিতে সমস্যা হয়েছে আমরা তাদের বিনামূল্যে ডায়ালাইসিসের ব্যবস্থা করেছি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাবেক সচিব ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, সীমান্ত দিয়ে অব্যাহত মাদকব্যবসায়ীরা মাদক সরবরাহ করছে। প্রশাসন এসব ব্যবসায়ীদের আটক করলেও তা বন্ধ করা যাচ্ছে না। বিকল্প হিসেবে মানুষের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি করে তা বন্ধ করতে হবে। মাদকের আগ্রাসন বিশ্বব্যাপী রয়েছে। বিষয়টিকে বিবেচনায় নিয়েই আমাদের পরিকল্পনা সাজাতে হবে। মাদকের সমস্যা দীর্ঘদিন ছিল। বিশ্বের কোথাও সীমান্তে মাদক বন্ধ হয়নি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি ঘন্টায় মাদকের ৩টি চালান প্রবেশ করে যদিও তারা অনেক সতর্ক রয়েছে। মাদক মোকাবেলা করতে হলে প্রথমত এর সাপ্লাই কমাতে হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। আগে আমাদের ঘরকে মাদক মুক্ত করতে হবে। তারপর সমাজ এর পর দেশকে। সরকার নির্মূল করতে চেষ্টা করে যাচ্ছে। কিন্তু আমি বা আমরা কি করছি? মাদকাসক্ত সন্তানকে নিরাময় করতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আমরা মাদকের বিরুদ্ধে কমিটি করে খেলাধূলা থেকে শুরু করে সঙ্গীতের আয়োজন করেছি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের সদস্য খবির উদ্দিন আহমেদ বলেন, সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে তরুণদের সচেতন করতে হবে। কিভাবে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে তাদের সচেতন করা যায় তা বের করতে হবে। সঠিক তথ্য শেয়ার করে তাদেরকে বাঁচাতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে যমুনা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মির্জা ইলিয়াস বলেন, আমাদের দেশের জনসংখ্যার উল্লেখযোগ্য মানুষ মাদকে আসক্ত। আজকের এ দিনে বুঝতে হবে কেন আমরা ২৬শে জুনকে পালন করছি। মাদকের বিরুদ্ধে সবাইকে সচেতন হতে হবে। বাচ্চাদের এর থেকে দূরে রাখতে অভিবাবকদের সচেতন হবে। প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানকে এর বিরুদ্ধে সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। যুবকদের ৮০ শতাংশ এর সাথে জড়িত হয়ে পড়েছে। সবাই নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করলেই এর প্রতিকার করা যাবে। মাদক বিরুদ্ধে সোচ্চার হলেই দেশ অর্থনৈতিকভাবে আরও তরাণ্বিত হবে।
শাহেদুল ইসলাম হেলাল বলেন, মাদক নিরাময় কেন্দ্র আবাসিক এলাকায় হতে হবে। তরুণদের কানেকশন করতে হবে মাদক নির্মূলের ক্ষেত্রে।
পর্যটন বিচিত্রার সম্পাদক মহিউদ্দিন হেলাল বলেন, যুব সমাজকে যথাযথ কাজে লাগাতে হলে তাদেরকে মাদক মুক্ত রাখতে হবে। সরকারের একার পক্ষে এটি সম্ভব নয়। তবে আমরা যদি এর বিরুদ্ধে সচেতন হই তবেই সরকার আরও বেশি নড়েচড়ে বসবে। আজ আমাদের খেলার জায়গায় না থাকায় ইন্ডিভিজিওয়াল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এ পরিস্থিতির কারণে ছেলে মেয়েরা মাদকের দিকে ধাবিত হয়েছে। তাছাড়া নিষিদ্ধ জিনিসের প্রতি আমাদের কৌতূহল রয়েছে।
ধূমপান মুক্ত বাংলাদেশ চাই সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ধূমপান মুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারলেই মাদক মুক্ত দেশ গড়ে তুলতে পারব। মাদকের শুরু ধূমপানের মাধ্যমেই হয়ে থাকে। তাই সোশ্যালওয়ার্ক হিসেবে সবাইকে ধূমপান থেকে বিরত থাকার আহবান জানাই।
ওয়েবিনারে আরও বক্তব্য রাখেন বিএডিএফ’র জেনারেল সেক্রেটারি এম রফিকুল ইসলাম রলি, জয়েন্ট সেক্রেটারি ইরফান আহমেদ প্রমুখ।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়ার সহকারি অধ্যাপক শিরিনা বিথীর উপস্থাপনায় ওয়েবিনারে মিডিয়া পার্টনার ছিলেন সময় জার্নাল।
ওয়েবিনারটি দেখতে ক্লিক করুন :
সময় জার্নাল/এসএ