মোঃ এমদাদ উল্যাহ, চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধিঃ
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে পূর্ব বিরোধের জেরে মনোয়ারা বেগম(৫০) নামে এক বিধবার বাড়ী-ঘরে হামলা-ভাংচুর ও লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রভাবশালী হামলাকারীরা নগদ অর্থ লুট সহ প্রায় দেড় লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি করেছে। ঘটনার পর থেকে ভুক্তভোগীরা বাড়ীঘর ছেড়ে অন্যত্র পালিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে।
রোববার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এমনই অভিযোগ করেছেন কনকাপৈত ইউনিয়নের বশকরা গ্রামের মৃত আমির হোসেনের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম। লিখিত বক্তব্যে তিনি হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি এবং নিজ বাড়িতে ফিরে যাওয়ার আকুতি জানিয়েছেন। এ সময় তার পরিবারের সদস্যরাসহ আত্মীয়-স্বজনগণ উপস্থিত ছিলেন।
মনোয়ারা বেগম অভিযোগে উল্লেখ করেন, ঘটনার পর থেকে হামলাকারীদের ভয়ে ভুক্তভোগির পরিবার নিজ বাড়িতে ঢুকতে পারছে না। হামলাকারীরা এখনো প্রকাশ্যে বুক ফুলিয়ে এলাকায় বিচরণ করায় আরেকটি অনাকাঙ্খিত ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। এ ঘটনার সমাধান চেয়ে সামাজিকভাবে কোনো সাড়া ও সহযোগিতা পায়নি ভুক্তভোগী পরিবার। হামলার ঘটনায় তিনি সহ তার পরিবারের আরেকজন সদস্য আহত হন। পরে চিকিৎসা গ্রহণ শেষে তারা চৌদ্দগ্রাম থানায় ৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৮/১০ জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোনো সমাধান না হওয়ায় চরম নিরাপত্তাহীনতায় নিজ বাড়ির বাহিরে মানবেতর দিন কাটাচ্ছেন।
থানায় দায়েরকৃত অভিযোগ সূত্রে আরও জানা গেছে, পূর্ব বিরোধের জেরে বশকরা গ্রামের মোহাম্মদ দুলালসহ প্রভাবশালী মহলের নেতৃত্বে কতিপয় যুবক দীর্ঘদিন ধরে ভুক্তভোগির পরিবারকে এলাকা থেকে উচ্ছে¡দ করার হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছিল। বিষয়টি নিয়ে কয়েকদফা সামাজিক বৈঠক হয়। সর্বশেষ গত ২১ ডিসেম্বর বিকালে অনুষ্ঠিত বৈঠকে উত্তেজিত জনতা মনোয়ারা বেগমের পরিবারকে হুমকি প্রদান করলে উভয় পক্ষের মধ্যে হট্টগোলের কারণে অমীমাংশিতভাবে বৈঠকটি শেষ হয়। এরপর রাতেই দুলালের নেতৃত্বে আরো ৮-১০ জন যুবক দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে বিধবা মনোয়ারা বেগমের বাড়িতে অনধিকার প্রবেশ করে হামলা চালায়।
এ সময় হামলাকারীরা বিধবার ঘর, ঘরে থাকা দামী আসবাবপত্র ভাংচুর, আলমারিতে থাকা নগদ অর্থ ও পুত্রবধূর গলায় থাকা স্বার্ণালঙ্কার লুট সহ ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করে। পরে আশেপাশের লোকজন গেলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। হামলায় মনোয়ারা বেগম ও তার নাতি
এমরান আহত হয়। পরে আত্মীয়-স্বজনের সহযোগিতায় তারা চিকিৎসা গ্রহণ করে।
এ ঘটনার পর থেকেই ভুক্তভোগির পরিবার নিজ বাড়ীতে ঢুকতে পারছে না। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় সমাধানের চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি। পরে ভুক্তভোগি কর্তৃক চৌদ্দগ্রাম থানায় মোঃ দুলাল, তার ছোট ভাই বাবু, একই এলাকার মোঃ স্বাধীন, মোঃ সোহাগ ও শুভ এর নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ৮-১০ জনকে আসামী করে চৌদ্দগ্রাম থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করে।
এ বিষয়ে মোঃ দুলাল বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা। তাদের বাড়িঘরে হামলার ঘটনা আরও আগে ঘটেছে। বরং সামাজিক বিচার চলাকালীন মনোয়ারা বেগমের ছেলে আবু বকর আমাদের উপর হামলা চালিয়েছে। এ ঘটনায় থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছি। বিষয়টির সরেজমিন তদন্ত করেছে পুলিশ। সামাজিকভাবে সমাধানের চেষ্টা চলছে।
চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এটিএম আক্তার উজ জামান বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে’।
এমআই