সময় জার্নাল ডেস্ক:
নরসিংদী সদর উপজেলার মাধবদীর কিছু কিশোর।
এক কিশোরের পায়ের সামনে থুতু ফেলার জেরে সবার সামনে তাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে ১০/১২ জন কিশোর। তারা স্থানীয় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য, বয়স ১৫ থেকে ১৭ বছরের মধ্যে।
শুধু কি কুপিয়ে হত্যা? উল্লাস করে, একজনের হাত-পা বেঁধে রেখে মাথায় ও শরীরে ডিম ভেঙে শাস্তি দেওয়ার মতো ঘটনাও ঘটিয়েছে কিশোররা। পুলিশের কাছে আটক হওয়ার পরেও দেখেছি কিশোর অপরাধী টেলিভিশন ক্যামেরায় ছিনতাই ও হত্যার বর্ণনা দিয়েছে অনুশোচনা-অনুকম্পাহীন নির্বিকারভাবে।
এ ছাড়া, মাদক সেবনের জেরে ২ পক্ষের কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে ২ কিশোর গ্রুপের মধ্যে মারামারি হয়েছে। প্রেমের কারণে খুন, মাদকের ভাগ নিয়ে খুন হচ্ছেই। সম্প্রতি কুষ্টিয়া জেলা স্কুলের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক তার বাড়িতে নির্মমভাবে খুন হন ভাতিজার হাতে। ভাতিজা নওরোজ মাদক ও অনলাইন জুয়ায় আসক্ত হয়ে এবং ফুপুর শাসনের জের হিসেবে শিল দিয়ে মাথায় আঘাত করে রোকসানাকে হত্যা করে।
ঘটনাগুলো বিচ্ছিন্নভাবে ঘটলেও চরম শঙ্কার জন্ম দিয়েছে। শিশু থেকে তরুণদের এই আচরণ একধরণের অসহিষ্ণু সমাজের কথা বলছে। মানুষের এই অসহিষ্ণু হয়ে ওঠার পেছনে অনেক ক্ষোভ রয়েছে বলে মনোবিজ্ঞানীরা মনে করেন।
এই কিছু দিন আগে গত শুক্রবার ৩ জানুয়ারিতে বিকেলে কুমিল্লায় রানীর বাজার সড়কে কিশোর গ্যাং অস্ত্র হাতে মহড়া দেয়। ২০১৫ সালের দিকে কুমিল্লা নগরে কিশোর গ্যাংয়ের তৎপরতার বিষয়টি আলোচনায় আসে। রতন ও ঈগল ছাড়াও নগরের আলোচিত কিশোর গ্যাং গ্রুপ হচ্ছে র্যাক্স, এক্স, এলআরএন, সিবিক, মডার্ন, রকস্টার, ডিস্কো বয়েজ, বসসহ শুধু কুমিল্লা নগরেই কিশোর গ্যাংয়ের কমপক্ষে ২০টি পক্ষ আছে। এসব গ্যাং নিজেদের আধিপত্য দেখাতে প্রকাশ্যে সহিংসতায় জড়াচ্ছে।
গত ৪ ডিসেম্বর রাতে নগরের অশোকতলা এলাকায় সজীব হোসেন ওরফে বাবু (২২) নামের এক তরুণকে পিটিয়ে ছুরিকাঘাত করা হলে পরদিন সকালে হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। পুলিশ বলছে, ওই ঘটনার নেপথ্যে ছিল কিশোর গ্যাংয়ের মাদক কারবার।
তানহা আজমী