সিদ্ধার্থ চক্রবর্তী, বাকৃবি প্রতিনিধি:
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ক্রীড়া প্রশিক্ষণ বিভাগের এক কর্মকর্তা নিজ অফিসে আত্মহত্যা করেছে। আত্মহত্যা করা কর্মকর্তার নাম কৃষিবিদ মোহাম্মদ মোস্তাইন কবীর (সোহেল) (৪৫) । তিনি বর্তমানে এডিশনাল ডিরেক্টর (ওএসডি) হিসেবে কর্মরত ছিলেন। নিজ অফিসের ফ্যানের আংটার সাথে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে বলে জানিয়েছেন ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ শফিকুল ইসলাম খান। মৃতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্যে ময়মনসিংহ মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে।
ঘটনা জানাজানি হলে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. মো. হেলাল উদ্দীন, ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল হক, প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল আলীমসহ প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যবৃন্দ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় , দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে তার আত্মহত্যার বিষয়টি জানাজানি হয়। পরে দুপুর ১ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশ সোহেলের নিজ অফিসের সামনে উপস্থিত হয়। পরে অফিসের দরজার লক ভেঙে পুলিশ ভিতরে প্রবেশ করে। এসময় তার গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলন্ত লাশ দেখা যায় এবং তার জিহবা বের হয়ে ছিল। লাশের পাশে একটি টেবিল ছিল এবং টেবিলের ওপর কাচ লাগানো ছিলো। কাচের ওপর একটি কাঠের চেয়ার ছিল। ওই চেয়ারে পায়ের ছাপও দেখা যায়। ওই রুমের একপাশে একটি ভাঙা চেয়ারও ছিল। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সোহেলের একটি মোবাইল, চিরকুট, মানিব্যাগ (নগদ টাকা, এটিএম কার্ড), জাতীয় পরিচয়পত্র (তার ও তার স্ত্রীর) টেবিলের ওপর থাকা কিছু কাগজপত্র এবং তার পরিহিত জুতা ও মুজা সংগ্রহ করে নিয়ে যায়।
তবে তদন্তের স্বার্থে চিরকুটের বিষয়ে কিছু জানানো যাবে না বলে জানিয়েছেন অফিসার ইনচার্জ শফিকুল ইসলাম খান।
ক্রীড়া প্রশিক্ষণ বিভাগের বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, তিনি কখন আসেছেন কেউ দেখেনি। তবে ধারণা করা হচ্ছে সকাল ৭ টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২ টার মধ্যে তিনি অফিসে আসেন। ওই বিভাগের মৌসুমি শ্রমিক সুমন নামের একজন ঘটনাটি প্রথম দেখেছেন বলে জানা যায়। তিনি ৫ আগস্টের আগে ক্রীড়া প্রশিক্ষণ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, তিনি সকাল সাড়ে ৭ টার দিকে ক্রীড়া প্রশিক্ষণ বিভাগে প্রবেশ করেন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত কিছু শিক্ষক ও কর্মকর্তারা জানান, তার স্ত্রী এসে বলেছেন যে তিনি সকাল সাড়ে ৭ টার দিকে বাজার করার জন্যে বের হয়েছিলেন। পরে তার স্ত্রীকে সবাই বাসায় পাঠিয়ে দেয়।
ঘটনার বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল আলীম বলেন, ঘটনা জানতে পেরে দ্রুত ঘটনাস্থলে যায়। দরজা লক ছিল। পরে আমি থানায় জানাই। পুলিশ এসে লক খুলে তার মরদেহ নামিয়ে নেন। পরে ময়নাতদন্তের জন্যে তারা লাশ মেডিকেলে পাঠায়। তবে কি জন্যে আত্মহত্যা করেছে এটি এখনি বলা যাচ্ছে না।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে বাকৃবির ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল হক বলেন, তিনি (সোহেল) আজকে নির্ধারিত সময়ের আগেই অফিসে এসেছিলেন, তখন অফিসে কেউ ছিল না। তিনি নিজেই তার কক্ষের তালা খুলে প্রবেশ করেছেন এবং আত্মহত্যার উদ্দেশ্যে টেবিলের ওপর উঠেছিলেন। টেবিলে ওঠার পায়ের ছাপ আমরা দেখেছি। ঘটনাস্থলে দুইটি নোট পাওয়া গেছে, যেগুলো পুলিশের কাছে আছে।
এমআই