রাবি প্রতিনিধি :
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা, বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ও সমাজসেবক মাদার বখশের ৫৮তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে। সোমবার( ২০ জানুয়ারি) এ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদার বখশ হল প্রশাসন বাদ আসর দোয়া ও আলোচানা সভার আয়োজন করে।
আলোচনা সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মাতিয়ুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের সমাজসেবায় মাদার বখশের গুরুত্ব কখনো ভুলার মতো না। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় না হলে আমাদের পড়াশোনাও হতো না। মাদার বখশ আমাদের সেই সুযোগ করে দিয়েছেন। জুবেরী স্যার এবং মাদার বখশের কারণে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। উনার থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরা জীবনে শিক্ষা নিতে পারি। তার মাধ্যমে আমরা ন্যায়পরায়ন এবং সমাজের জন্য কাজ করার জন্য উৎসাহিত হতে পারি।
জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক আখতার হোসেন মজুমদার বলেন, ১৯৫৪ সালের দিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় পাওয়া খুবই কষ্টসাধ্য ছিল। এটা সহসসাধ্য ছিল না। কিছু মানুষের গুরুত্বপূর্ণ অবদানের মাধ্যমে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছি। মাদার বখশ তাদের মধ্যে অন্যতম। তারা যে কল্যানে এটি প্রতিষ্ঠিত করেছেন আমাদের সে জন্য কাজ করতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, রাজশাহীর বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন আইকন হচ্ছে মাদার বখশ। তিনি কঠিন জীবন পার করে জীবনের একটি পর্যায়ে এসে আইকনিক হয়ে দাড়িয়েছেন। মাদার বখশের মাধ্যমে আমরা জীবনে চলার পথে অনুপ্রেরণা হিসেবে বিবেচিনা করতে পারি। মাদার বখশ সমাজে হিন্দু - মুসলিম দাঙ্গা থেকে রক্ষা করতে যে অপ্রাণ ভূমিকা রাখছে, সেটা থেকে আমরা শিক্ষা নিতে পারি।
মাদার বখশের পৌত্র কাজী হা-মিম সালেহ বলেন, মাদার বখশ রাজশাহীর মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য কাজ করেছেন। আমরা কোনকিছু চাই না,আমরা চাই মাদার বখশের মৃত্যুবার্ষিকিটা কেন্দ্রীয়ভাবে আয়োজন করুক প্রশাসন। এ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রতি বছর হাজারো শিক্ষার্থী বের হচ্ছে, তাদেরকে মাদার বখশের সম্পর্কে জানানো উচিত। মাদার বখশের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে কখনো অন্যায়ের পক্ষে থাকতেন না। তিনি ন্যায় সঙ্গত দাবির পক্ষে কখনো ছাড় দিতেন না।
এসময় সভাপতিত্বে করেন মাদার বখশ হলের প্রাধ্যক্ষ ড. শাহ হোসাইন আহমদ মেহেদী হাসান। আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাপাখানার প্রশাসক মাহফুজুর রহমান আকন্দ, বিভিন্ন হলের প্রাধ্যক্ষ,হলের আবাসিক শিক্ষক, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা, শিক্ষার্থী, এবং হলের কর্মকর্তাবৃন্দ।
উল্লেখ্য, ১৯০৫ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি মাদার বখশ নাটোরের সিংড়া থানার চলনবিল এলাকার স্থাপনদিঘি গ্রামে এক কৃষক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। রাবি ছাড়াও তার প্রচেষ্টায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে রাজশাহী কোর্ট একাডেমি, লহ্মীপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, রাজশাহী মুসলিম হাই স্কুল, রাজশাহী হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ, মাদার বখশ আইডিয়াল স্কুল ও মাদার বখশ গার্হস্থ্য অর্থনীতি মহিলা কলেজ। ১৯৬৭ সালের ২০ জানুয়ারী তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
এমআই