বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫

জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিল, সংবিধানের বিপরীতে হাঁটছেন ট্রাম্প

বুধবার, জানুয়ারী ২২, ২০২৫
জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিল, সংবিধানের বিপরীতে হাঁটছেন ট্রাম্প

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

প্রেসিডেন্ট হিসেবে উদ্বোধনী বক্তৃতায় ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে, তার প্রশাসন সংবিধান ভুলে যাবে না। অর্থাৎ এই প্রতিশ্রুতির মাধ্যমে তিনি বুঝিয়েছেন যে, তারা সংবিধানের পথেই হাঁটবেন। কিন্তু এই প্রতিশ্রুতি খুব বেশি সময় টেকেনি।

ক্ষমতাগ্রহণের পরই ট্রাম্প বেশ কিছু নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন। এর মধ্যে রয়েছে জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব লাভের সুযোগ বাতিলের আদেশ। জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব মার্কিন সংবিধানের ১৪তম সংশোধনী থেকে আসা অধিকার। এতে বলা হয়েছে, যেসব ব্যক্তি যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণ করেছে বা প্রাকৃতিকভাবে নাগরিক হয়েছে ও আইনগতভাবে এখানকার অধীনে রয়েছেন, তারা যুক্তরাষ্ট্র ও সংশ্লিষ্ট অঙ্গরাজ্যের নাগরিক। কিন্তু ট্রাম্প এমনটা মনে করেন না।


অপরদিকে সাংবিধানিক বিষয় হওয়ায় এই আইনে পরিবর্তন আনা কিংবা পুরোপুরি বাতিল করে দেওয়াটা খুবই কঠিন। এ বিষয়ে যে কোনো সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে হলে দুই-তৃতীয়াংশ স্টেটের পার্লামেন্টে পাস করতে হবে। তারপর সিনেটে দুই-তৃতীয়াংশ পাস করতে হবে ও হাউজে পাস করতে হবে। আবার বিষয়টি নিয়ে অনেকে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থও হতে পারেন।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ট্রাম্পের এই প্রচেষ্টা আইনি বাধার মুখে পড়বে। এরই মধ্যে আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন ও অন্য সংস্থাগুলো তার এই নির্বাহী আদেশের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। তবে ট্রাম্প যেহেতু প্রেসিডেন্ট, তার হাতে অনেক ক্ষমতা থাকে। ফলে তিনি জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব পাওয়ার প্রক্রিয়াটা অনেক জটিল করে দিতে পারেন।

এরই মধ্যে ফেডারেল এজেন্সিগুলোকে অবৈধ অভিবাসী কিংবা সাময়িক ভিসাধারী বাবা-মায়ের সন্তানদের জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব না দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রীয় সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকরের জন্য ৩০ দিন সময় দেওয়া হয়েছে।

ট্রাম্পের আদেশের অধীনে, আগামী মাস থেকে ফেডারেল সরকার কোনো নবজাতকের বাবা-মা মার্কিন নাগরিক না হলে তাদের নাগরিকত্বের স্বীকৃতি প্রদানকারী নথিপত্র ইস্যু করা হবে না। আমেরিকায় জন্মগ্রহণকারী অননুমোদিত অভিবাসীদের সন্তানদের এভাবে বাদ দেওয়া হবে। কিন্তু প্রায় ৩০ লাখ মানুষ যারা আমেরিকায় বিভিন্ন ধরনের কাজ বা স্টুডেন্ট ভিসায় বসবাস করছেন তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

তুলনামূলকভাবে কিছু ধনী দেশ বিশেষ করে কানাডা, লাতিন আমেরিকার বেশিরভাগ দেশ তাদের দেশে জন্মগ্রহণকারী প্রত্যেককেই নাগরিকত্ব দিয়ে আসছে। আমেরিকাও গৃহযুদ্ধের শেষের দিকে একই পথে হাঁটা শুরু করেছিল। ১৮৫৭ সালে ড্রেড স্কটের সিদ্ধান্তকে বাতিল করার জন্য সংবিধান সংশোধন করা হয়েছিল। দেশটির ১৪তম সংশোধনী নিশ্চিত করেছে যে মুক্ত ক্রীতদাস এবং তাদের সন্তানরা এখন থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকের স্বীকৃতি পাবে।

কিন্তু ট্রাম্পের যুক্তি হলো, ১৪তম সংশোধনীতে যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণকারী প্রত্যেকের জন্য সর্বজনীনভাবে নাগরিকত্ব প্রসারিত করার জন্য কখনও ব্যাখ্যা করা হয়নি।


ট্রাম্পের আদেশ আইনি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে এমনকি এটা বাস্তবায়ন করাও কঠিন হবে। পাসপোর্টের জন্য আবেদন করার সময় আমেরিকানদের এখন তাদের নাগরিকত্ব প্রমাণ করার জন্য শুধুমাত্র একটি জন্মসনদ জমা দিতে হয়। এগুলো পিতামাতার নাগরিকত্ব বা আইনি অবস্থা রেকর্ড করে না। জন্মসনদ স্থানীয় সরকারের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়। তাই এই আইন খুব দ্রুত পরিবর্তনের সম্ভাবনা বিশেষ করে গণতান্ত্রিক রাজ্যগুলোতে এটা প্রায় অসম্ভব।

এমআই


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৫ সময় জার্নাল