বুধবার, জানুয়ারী ২২, ২০২৫
নিজস্ব প্রতিবেদক:
কারো প্রেসক্রিপশন বা মহার্ঘ্য ভাতার জন্য ভ্যাট বাড়ানো হয়নি বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেছেন, রাজস্ব আয় বাড়াতেই ভ্যাট বাড়ানো হয়েছে। অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সেবায় ভ্যাট বা কর বাড়ানো হয়নি। যেসব পণ্যের ভ্যাট বেড়েছে সেগুলো অত্যাবশ্যকীয় না।
বুধবার (২২ জানুয়ারি) সচিবালয়ে খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির বৈঠক শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অর্থ উপদেষ্টা সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, মহার্ঘ ভাতা যদি দেই, সেটা আলাদা হিসাব করব। বাংলাদেশ হচ্ছে সবচেয়ে লোয়েস্ট ট্যাক্স পেয়িং কান্ট্রি। এলডিসির চেয়েও আমাদের ট্যাক্স কম। ভুটান, নেপাল, আইভরি কোস্ট, বুরকিনা ফাসোর চেয়েও কম। এত কম ট্যাক্স দিয়ে কীভাবে চান যে, আপনাকে সবকিছু দেব? এটা এক্সপেক্ট করা ঠিক হয় না। আমরা চশমার ভ্যাট বাড়িয়েছি। ১২৫ টাকায় পৃথিবীর কোন দেশে চশমা পাওয়া যায়? ওখানে ১৫ টাকা বাড়বে। খাবেন ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, ২০ টাকা ভ্যাট দেবেন না? ভাতের হোটেলে তো ভ্যাট জিরো করে দিয়েছি। গ্লোরিয়া জিন্স থেকে এক কাপ কফি খাবেন, ওখানে ১৫ টাকা দিতে আপনার বাঁধে? এই রকম অ্যাটিচিউড থাকলে তো জটিল। দরকার হলে ২০ টাকা বেশি দিয়ে মিষ্টি খাব। আমাদের রেভিনিউ এত কম যে, পুরো পিকচারটা আপনাদের কাছে এখনও আসে নাই, আসার কথাও না।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি কিছুদিন আগে ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকে গেলাম। আমরা যখন আসি ১৩৫ মিলিয়ন ডলার এলএনজি আমদানির বিল পাওনা ছিল। আমরা সেটা পেমেন্ট করেছি। এখন আবার এক মিলিয়ন ডলার পাওনা হয়েছে। রাশিয়ান অ্যাম্বাসাডার বলছে যে, তোমরা টাকা দিচ্ছ না, গম আমদানির বিল। ওই সময় এমন ছিল, এখন খারাপ হচ্ছে বলে আপনারা বলছেন। ওই সময় যে খুব ভালো ছিল তা কিন্তু না। আমার যারা সমালোচনা করে বেশিরভাগই আমার ছাত্র। ওরা বলে রাজস্ব জাল বাড়াতে, কোন জায়গায় আমরা বাড়াব? খালি বলে দিলেই তো হবে না। আমরা ক্ষেত্রগুলো খুঁজছি। যেই জায়গায় র্যাশনাল হয়, আমরা চেষ্টা করব।
সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ব্যয়ের দিকটায় আমরা সাশ্রয়ী হব। অনেক অপ্রয়োজনীয় সরকারি ব্যয় আছে। পাঁচ বছরের প্রকল্প ১০ বছর নিয়ে যাচ্ছে। বড় বড় প্রকল্প আছে যেখানে খরচ হওয়ার কথা ছিল ২৫ হাজার কোটি টাকা, খরচ হয়েছে ৫২ হাজার কোটি টাকা। টাকা কোত্থেকে আসবে, এগুলো তো আমাদের শোধ দিতে হবে।
এর আগে, গতকাল (২১ জানুয়ারি) সচিবালয়ে সাংবাদিকরা ভ্যাট বাড়ানোর প্রসঙ্গে জানতে চাইলে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, কেন ভ্যাট ও শুল্ক বাড়ানো হলো কিছুদিন পর তা জানতে পারবেন। তবে আগামী বাজেটে ভ্যাট ও কর ভালোভাবে সমন্বয় করা হবে। এ সময় তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ভ্যাট যে পর্যায়ে বাড়ানো হয়েছে তাতে কি এমন যে পণ্যের মূল্য বাড়তে পারে। ওষুধ, মোবাইল, ফলের রসে কমানো হয়েছে। অথচ দুধের দাম বেড়েছে। এটাতো বাড়ার কথা নয়।
এমআই