নোয়াখালী প্রতিনিধিঃ
নোয়াখালীর কবিরহাটে ৭বছর বয়সী এক মাদ্রাসা পড়ুয়া শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে জাকির হোসেন নামের এক যুবককে গ্রেফতার করেছে কবিরহাট থানার পুলিশ।
গ্রেফতার মোঃ জাকির হোসেন (৩০), ঘোষবাগ ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের ঘোষবাগ গ্রামের ভুঁইয়া বাড়ির আবুল খায়ের মন্টু সওদাগরের ছেলে। সে পেশায় একজন রাজমিস্ত্রী কন্ট্রাক্টর।
এর আগে গতকাল দুপুরে উপজেলার ঘোষবাগ ইউনিয়নের নতুন শাহাজির হাট বাজারের পাশে সৈয়দপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর এর দোকান সংলগ্ন স্থানে এঘটনা ঘটে।
সূত্রে জানা যায়, গত ৩ ফেব্রুয়ারী দুপুর আনুমানিক ১.৩০ ঘটিকায় মাদ্রাসা ছুটি হলে মেয়েটি পায়ে হেঁটে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা করে। কিছু দূর যাওয়ার পর একই এলাকার মন্টু সওদাগরের ছেলে জাকের হোসেন মোটর সাইকেল যোগে নিজ কর্মস্থল থেকে দুপুরে খাবার খাওয়ার জন্য বাড়ি আসার পথে মেয়েটির সাথে দেখা হয়। মেয়েটির সাথে ওরই সহপাঠী আরো দু'জনকে জাকির তার মোটরসাইকেল যোগে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে গাড়িতে উঠায়। দুই জন কে জাকিরের পিছনে বসালেও মেয়েটিকে মোটরসাইকেলে তার সামনে বসায়। মন্টু সওদাগরের দোকানের সামনে আসার পর পিছনের দুইজন শিশুকে নামিয়ে দিলে ওরা নিজ নিজ বাড়ি চলে যায়। দুপুরের সময় হওয়ায় ঐ দোকানসহ আসেপাশে দোকানগুলো বন্ধ ছিলো এবং কোন মানুষ আসেপাশে না থাকায় জাকিরের মনে কুপ্রবৃত্তি জাগ্রত হয়। সে মেয়েটিকে মোটরসাইকেল থেকে নামিয়ে মন্টু সওদাগরের দোকানের পাশের পরিত্যক্ত একটি খালি রুমে নিয়ে যায়। মেয়েটির পরনের কাপড়গুলো খুলে মুখ চেপে ধরে জোর পূর্বক ছোট্ট ৭ বছরের শিশুটির সাথে অনৈতিক কাজ করতে শুরু করে।
এই দিকে মেয়েটি মাদ্রাসা থেকে বাড়ি আসতে দেরি হচ্ছে দেখে তার পরিবারের সদস্যরা চিন্তিত হয়ে হৈইচই করে খুঁজতে বের হয়। জাকির বাহিরের হৈইচৈই শুনে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। মেয়েটি কোনরকম কাপড় পড়ে ঐ পরিত্যক্ত ঘর থেকে বের হলেই মেয়েটির মা তাকে দেখতে পায় এবং লক্ষ করে মেয়েটি ঠিকমতো হাঁটতে পারছে না। মেয়েটির মা দৌড়ে মেয়ের কাছে আসলে মেয়েটি কান্না জড়ানো কন্ঠে তার মা কে সব ঘটনা খুলে বলে।
সম্পূর্ণ ঘটনা শুনে মেয়েটির পরিবার সমাজের কিছু ব্যক্তিকে বিষয়টি অবগত করলে মেয়েটিকে নিয়ে দ্রুত কবিরহাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়৷ সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে মেয়েটিকে তার পরিবার কবিরহাট থানায় যায়।
এমন একটি মর্মান্তিক ঘটনা নিয়ে এলাকাবাসি সৈয়দপুর ইয়ং ইউনিটি সোসাইটি এর নিকট অভিযোগ করলে উক্ত সংগঠনের একজন প্রতিনিধি মেয়েটির পরিবারকে সহযোগিতা করার জন্য দ্রুত কবিরহাট থানায় উপস্থিত হয় এবং উক্ত সংগঠনের আরো সদস্য ও এলাকাবাসীর সহযোগিতা নিয়ে মাত্র ২০ মিনিট সময়ের মধ্যে আসামি জাকির হোসেনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মেয়েটির পরিবার এবং এলাকাবাসী তিব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন এবং আসামির উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানাচ্ছেন এলাকাবাসী।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কবিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহীন মিয়া জানান, ঘটনার পর পরই পুলিশ অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত জাকেরকে গ্রেফতার করে। ভিক্টিমের মায়ের লিখিত অভিযোগের আলোকে আসামিকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদলতে প্রেরণ করা হয়েছে এবং ভিক্টিমকে ডাক্তারি পরিক্ষার জন্য ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
এমআই