এহসান রানা, ফরিদপুর:
ফরিদপুরের বোয়ালমারী প্রাণ কেন্দ্র চৌরাস্তায় অবস্থিত 'বঙ্গবন্ধু স্মৃতি স্তম্ভ’ পুলিশের বাঁধা উপেক্ষা করে এক্সকেভেটর দিয়ে ভেঙে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। এ নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে।
শনিবার ( ৮ ফেব্রুয়ারী) পৌরসভার প্রাণ কেন্দ্র চৌরাস্তায় অবস্থিত স্বাধীনতা চত্বরে অবস্থিত নৌকায় বসা শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল সম্বলিত স্মৃতি স্তম্ভটি হাতুড়ি-শাবল ও একটি এক্সকেভেটর দিয়ে আংশিক ভেঙে ফেলে হয়েছে। গত বছরের ৫ আগস্ট স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার পতনের দিন একটি স্তম্ভের বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি আংশিক ভাঙচুর করে ছাত্র জনতা। এবার কাঠামো ছাড়া সব কিছু ভেঙে ফেলা হলো।
গণঅভ্যুত্থানের মুখে দেশত্যাগ করে ভারতে আশ্রয় নেওয়া ফ্যাস্টিস শেখ হাসিনার উদ্ধত পূর্ণ কথাবার্তা বলার প্রতিবাদে স্বৈরাচার সরকারের স্মৃতিবিজড়িত স্থাপনাটি ভাঙচুর করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ছাত্র-জনতা।
ভাঙচুরের খবর পেয়ে বোয়ালমারী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে বাঁধা দেওয়ার চেষ্টা করেন। এসময় চত্বরে অবস্থিত বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা ফ্যাসিবাদবিরোধী নানা স্লোগান দিতে থাকে। এবং পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে ভাঙচুর চালায়।
পরে সেনাবাহিনীর একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও শান্তি স্থাপনে কাজ করে।
এ সময় চত্বরে চারপাশে উৎসুক জনতার ভিড় লক্ষ্য করা যায়।
জানা যায়, ২০১৪ সালে তৎকালীন ফরিদপুর -১ আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রহমান শহরটির সৌন্দর্য বর্ধন ও স্বাধীনতা সংগ্রামের স্মৃতি সংরক্ষণে পৌর সদরের ব্যস্ততম স্থান চৌরাস্তায় স্তম্ভটি নির্মাণের কাজ হাতে নেন। স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে এ স্তম্ভটি নির্মাণ করা হয়। সে সময় এটির নামকরণ করা হয় "বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা স্মৃতিস্তম্ভ"।
ভাঙচুর নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মী ও ছাত্রদল নেতা মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেন, গণ অভ্যুত্থানে শহীদ ভাইদের রক্তের দাগ এ মাটিতে এখনো শুকায়নি। অথচ পালিয়ে যাওয়া খুনি হাসিনা ভারতের মাটিতে বসে এ দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত, সেখানে বসে এদেশের মুক্তিকামী ছাত্রজনতার বিরুদ্ধে অনলাইনে ভাষণ দেওয়ার দুঃসাহসের প্রতিবাদে এই ভাঙচুর। আমরা এ দেশের মাটিতে ফ্যাসিবাদ শেখ হাসিনার রেখে যাওয়া শেকড় উপড়ে ফেলব।
ভাঙচুরে অংশগ্রহণ করা একাধিক ব্যক্তিরা জানান, দেশ ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক হিসেবে এখানে একটি সৌন্দর্য বর্ধনকারী স্থাপনা নির্মাণ করা হোক।
বোয়ালমারী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোহাম্মদ গোলাম রসুল ঘটনা সম্পর্কে অবগত রয়েছেন বলে জানালেও তিনি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে অপারগতা প্রকাশ করে।
ফরিদপুরের বোয়ালমারী নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানভীর হাসান চৌধুরী জানান, উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছি। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
এমআই