বুধবার, ফেব্রুয়ারী ১২, ২০২৫
নিজস্ব প্রতিবেদক:
চব্বিশ সালের জুলাইয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদকে তুলে নেওয়ার পর প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) টর্চারসেলে (আয়নাঘর) আটকে রাখা হয়েছিল।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আয়নাঘর পরিদর্শনে গিয়ে ডিজিএফআইয়ের সেই দুই টর্চারসেল চিনতে পারার কথা জানিয়েছেন নাহিদ ও আসিফ।
জুলাইয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় নাহিদ ও আসিফকে সাদা পোশাকে তুলে নেওয়া হয়।
আয়নাঘর পরিদর্শনের পর নাহিদ জানান, তাকে যে কক্ষে আটকে রাখা হয়েছিল সেই কক্ষের একপাশে টয়লেট হিসেবে একটি বেসিনের মতো ছিল। ৫ আগস্টের পর এই সেলগুলোর মাঝের দেয়াল ভেঙে ফেলা হয়, দেয়াল রং করা হয়।
আয়নাঘর পরিদর্শনের পর আসিফ জানান, তাকে যে কক্ষে আটকে রাখা হয়েছিল সেই কক্ষের দেয়ালের উপরের অংশের খোপগুলোতে এক্সস্ট ফ্যান ছিল, এখন নেই।
আসিফ আরও জানান, তিনি দেয়াল দেখে কক্ষটিকে চিনতে পেরেছেন। কক্ষটি আগে অনেক ছোট ছিল, এখন মাঝের দেয়াল ভেঙে বড় করা হয়েছে। ওই কক্ষে তাকে চারদিন আটকে রাখা হয়েছিল। এসময় বাইরের কারও সঙ্গে তাকে কথা বলতে দেওয়া হয়নি। টয়লেট ছিল কক্ষের বাইরে এবং তাকে চোখ বেঁধে টয়লেটে নিয়ে যাওয়া হতো।
দুপুরে আয়নাঘর পরিদর্শন শেষে ড. ইউনূস বলেন, আইয়ামে জাহেলিয়াত প্রতিষ্ঠা করে গেছে বিগত সরকার।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, যা দেখলাম তা অবিশ্বাস্য ও বিভৎস। যারা নিগৃহীত হয়েছে তারা আমাদের সঙ্গে ছিলেন। বিনা দোষে তুলে এনে টর্চার করেছে। এমন টর্চার সেল সারা দেশে আছে বলে শুনলাম। গত সরকার সর্বক্ষেত্রে আইয়ামে জাহেলিয়াত প্রতিষ্ঠা করে গেছে।
গুম কমিশনকে ধন্যবাদ জানিয়ে ড. ইউনূস বলেন, এটি জাতির জন্য চূড়ান্ত ডকুমেন্ট হবে। মানুষের সামান্যতম অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। এই তথ্য আমাদের সবার সামনে আনার জন্য গুম কমিশনকে ধন্যবাদ।
প্রধান উপদেষ্টা আজ প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) যৌথ জিজ্ঞাসাবাদ সেল, র্যাব-২ এর সিপিসি-৩ এর ভেতরের সেল ও র্যাব সদর দপ্তরের টাস্কফোর্স ইন্টেলিজেন্স সেন্টার পরিদর্শন করেন, যেগুলো বন্দীশালা হিসেবে পরিচিত।
আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে বিরোধী মতের বহু মানুষকে তুলে নিয়ে বিচার বহির্ভূতভাবে অজ্ঞাত স্থানে আটক রাখার অভিযোগ ওঠে। অজ্ঞাত সেসব বন্দীশালার প্রতীকী নাম রাখা হয়েছে ‘আয়নাঘর’।
আয়নাঘর পরিদর্শনের সময় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ছিলেন উপদেষ্টাগণ, দেশ-বিদেশের গণমাধ্যমের প্রতিনিধি, ভুক্তভোগীদের কয়েকজন ও ভুক্তভোগী কয়েকটি পরিবারের সদস্যরা।
এমআই