ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম)প্রতিনিধি :
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) কর্তৃক পাঁচ বাংলাদেশি কৃষককে মারধরের ঘটনায় সিও পর্যায়ে ঘন্টা ব্যাপি পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে গোরকমন্ডল সীমান্তে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) ও বিএসএফের মধ্যে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে বিজিবির পক্ষ থেকে ফুলবাড়ী উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের কৃষ্ণানন্দ বকসী সীমান্তে বিএসএফের অনুপ্রবেশ ও পাঁচ বাংলাদেশি কৃষককে মারধরের ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়। বিজিবি দাবি করে, বিএসএফের এই অনুপ্রবেশ আন্তর্জাতিক সীমান্ত চুক্তির লঙ্ঘন এবং এ ধরনের কর্মকাণ্ড ভবিষ্যতে সীমান্তে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন লালমনিরহাট ১৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শাকিল আলম এবং ভারতের ১৩৭ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের কমান্ডিং অফিসার কমরেড অমিত কুমার।
বৈঠকে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব দেয় এবং ভবিষ্যতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে কূটনৈতিক ও সামরিক পর্যায়ে আলোচনার মাধ্যমে তা সমাধানের সিদ্ধান্ত নেয়।
এছাড়া, উভয় পক্ষ সীমান্তে নিয়মিত টহল ও নজরদারি বাড়ানোর বিষয়ে সম্মত হয়েছে, যাতে এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা পুনরাবৃত্তি না ঘটে।
পতাকা বৈঠকের পর ফুলবাড়ী সীমান্ত এলাকায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। সীমান্তের দুই পাশে বিজিবি ও বিএসএফের সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছে এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অতিরিক্ত নজরদারি চালানো হচ্ছে।
উল্লেখ্য গত ১৪ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার দুপুর আড়াইটার দিকে ফুলবাড়ী উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের কৃষ্ণানন্দ বকসী সীমান্তে ৯৩০ নম্বর আন্তর্জাতিক সীমানা পিলারের ৮ নম্বর সাব-পিলারের পাশে প্রায় ৫০০ গজ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বিএসএফের সদস্যরা প্রবেশ করে। এ সময় শূন্যরেখার কাছে নিজ জমিতে কাজ করা ১০-১২ জন কৃষকের ওপর তারা চড়াও হয়। ভারতের নারায়ণগঞ্জ বিএসএফ ক্যাম্পের ৮-১০ জন সদস্য অকথ্য গালাগাল করতে করতে কৃষকদের মারধর শুরু করে।কৃষকরা দৌড়ে গ্রামে আশ্রয় নিলে বিএসএফ সদস্যরাও পিছু নিয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে। পরে গ্রামবাসীরা সংঘবদ্ধ হয়ে বিএসএফকে ধাওয়া দিলে তারা কাটাতারের ভেতরে ফিরে যায়। ঘটনার পর সীমান্তে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে বিজিবি দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এমআই
