মো. মাহিদুজ্জামান সিয়াম, গবি প্রতিনিধি:
গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে (গবি) বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হলো ৪র্থ সমাবর্তন। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আয়োজিত এ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে চ্যান্সেলরের প্রতিনিধি হিসেবে সভাপতিত্ব করেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ। সমাবর্তনে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে ডিগ্রি তুলে দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই জাতীয় সংগীত পরিবেশন এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থান শহীদের প্রতি এক মিনিট নিরাবতা পালন করে সমাবর্তন মঞ্চে আসন গ্রহণ করেন আমন্ত্রিত অতিথিরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো: আবুল হোসেন বলেন, গণ বিশ্ববিদ্যালয় গণ মানুষের প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠান কোনো ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান না বরং সামাজিক মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান। আজ দীর্ঘ এগারো বছর পর আজ সমাবর্তনের আয়োজন সম্পন্ন হচ্ছে। গ্রাজুয়েটরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম দিনের শপথ বাক্যের কথা মনে রাখবেন। মনে রাখবেন অর্থ উপার্জন প্রয়োজন তবে গরিবের ঘাম-রক্তের উপর দিয়ে যেন এই উপার্জন না হয়।
সমাবর্তনের বিশেষ বক্তা ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খান শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, আজকের এই মুহুর্ত আপনাদের জন্য একটি বিশেষ মুহুর্ত। এখন আপনাদের প্রতি নৈতিক দায়িত্ব অর্পিত হলো। আপনাদের দায়িত্ব দেশের মানুষের জন্য কাজ করা। আমি আশা রাখি শিক্ষার্থীরা জনস্বার্থ ও দেশের স্বার্থের জন্য শিক্ষার্থীরা কাজ করে যাবে। সবাই গণ বিশ্ববিদ্যালয় এবং এই প্রতিষ্ঠানের আদর্শ ধারণ করেই বিশ্ববিদ্যালয়কে সামনের দিকে নিয়ে যাবেন।
সমাবর্তনের সভাপতি শারমিন এস মুরশিদ বলেন, আমরা ন্যায্য-গণতান্ত্রিক সমাজ গড়তে পারিনি বলেই ২০২৪ এ গণ অভ্যুত্থান ঘটেছে। আজ সমাবর্তনে উপস্থিত গ্রাজুয়েটদের মনে রাখতে হবে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর লক্ষ্যই ছিলো গ্রামে চলো গ্রাম গড়ো। আমি গণ বিশ্ববিদ্যালয়কে এমন স্থানে দেখতে চাই যেখানে পৃথিবীর সব গণ জাগরণের মানুষদের মিলনমেলা হবে।
সমাবর্তনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছিল উৎসবমুখর পরিবেশ। তাদের মধ্যে অনেকেই আনন্দে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। স্নাতক সম্পন্ন করা এক শিক্ষার্থী বলেন, দীর্ঘ সময় পর আমাদের এই সমাবর্তন আয়োজিত হচ্ছে। অনেক আলোচনা সমালোচনা থাকলেও অবশেষে সমাবর্তনে অংশগ্রহণ করার সুযোগ হচ্ছে। বহুদিন পর সবাই আবার একত্রিত হচ্ছে এটা এক আনন্দঘন মুহুর্ত।
সমাবর্তন উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ে দিনব্যাপী নানা আয়োজন ছিল। সাংস্কৃতিক পরিবেশনা, শিক্ষার্থীদের আনন্দ মিছিল, স্মারক ফটোসেশন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের স্মারক গ্রহণের মাধ্যমে দিনটি বিশেষভাবে উদযাপন করা হয়।