মোহাম্মদ মুরাদ হোসেন, হাবিপ্রবি:
১০৪ নং কক্ষ; চারজন আবাসিক শিক্ষার্থী নিয়মিত অবস্থান করছেন সেখানে। অথচ কক্ষটিতে একটিও সিলিং ফ্যান নেই। গ্রীষ্মকালে ফ্যান সংকটে কক্ষটিতে থাকা দায়। টেবিল ফ্যান চালালেও অবিরত ঘাম ঝরে। একই সমস্যা হলটির প্রায় ৫০ টির অধিক কক্ষে। বলছি হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান হলের (সংক্ষেপে জিয়া হল) কথা।
প্রায় ১০০০ জন আবাসিক শিক্ষার্থী (বিদেশি ছাত্র সহ) একই সময়ে অবস্থান করতে পারেন বিশ্ববিদ্যালয়টির সবচেয়ে বড় এ ছাত্র হলটিতে। অথচ কোনো কক্ষে ১ টি করে এবং কোনো কোনো কক্ষে ২ টি করেই সিলিং ফ্যান নেই। অর্থাৎ অন্তত ৬০ টি কক্ষে প্রায় ২২০ জন শিক্ষার্থী সিলিং ফ্যান সমস্যায় রয়েছে।
সিলিং ফ্যান না থাকায় জনপ্রতি সর্বনিম্ন ১ টি করে টেবিল বা স্ট্যান্ড ফ্যান ব্যবহার করেন আবাসিক হলের শিক্ষার্থীরা। অর্থাৎ যে কক্ষে ফ্যান নেই সেখানে সর্বনিম্ন ৪ টি করে সবমিলিয়ে অন্তত ২২০ টি টেবিল বা স্ট্যান্ড ফ্যান চলে। কোনো কোনো কক্ষে সিলিং ফ্যান থাকার পরও অতিরিক্ত ফ্যান চালাতে হয়। এতে বিদ্যুৎ খরচও অধিক হারে বেড়ে যায়। গ্রীষ্মকালে ৪র্থ এবং ৫ম তলার শিক্ষার্থীদের গরমে অতিষ্ঠ হতে হয়। এতে অসুস্থ হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে বিগত সময় গুলোতে। ফলে পড়াশোনাতেও বিঘ্ন ঘটে।
হলটির ২২১ নং কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী শাহনিয়াজ সাঈদ সাদ বলেন, "আমাদের রুমের ২টি ফ্যানই দীর্ঘদিন ধরে নষ্ট হয়ে পরে রয়েছে। এগুলো ঠিক করা বা নতুন ফ্যান দেওয়ার কোনো উদ্যোগ নিতে দেখিনি। গরমে আমাদের খুব কষ্ট হয়। সিলিং ফ্যান না থাকলে সকল কাজে বিঘ্ন ঘটে। পড়াশোনাও হয়না। শরীর খারাপ হয়ে যায়।"
পরিসংখ্যান ১৮ ব্যাচের শিক্ষার্থী সুজন হোসেন বলেন, "এখানে নিম্নবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের শিক্ষার্থীরা থাকে। তাদের পক্ষে টেবিল ফ্যান কেনা সম্ভব হয়না। ফলে কেউ কেউ অন্য রুমে গিয়ে কিংবা কখনো কখনো রিডিং রুমে সারাদিন কাটায় বা ঘুমায়। হল এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এ বিষয়ে দ্রুত কিছু করা দরকার।"
সিলিং ফ্যান স্থাপনের বিষয়ে ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে নতুন হল প্রশাসন উদ্যোগ নিলেও বাস্তবায়নের চিহ্নমাত্র দেখা যায়নি। এ বিষয়ে হল সুপার প্রফেসর ড. আবু খায়ের মোহাম্মদ মুক্তাদিরুল বারী চৌধুরী জানান, ফ্যানের সংখ্যা টা বেশি হওয়ায় হল অফিস থেকে কেনা সম্ভব নয়। এজন্য তালিকা প্রণয়ন করে নিয়ম অনুযায়ী পি.ডি.ডব্লিউ. শাখায় চাহিদা দেওয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়টির পরিকল্পনা, উন্নয়ন ও ওয়ার্কস (পি.ডি.ডব্লিউ.) শাখার পরিচালক প্রফেসর ড. মো. মনিরুজ্জামান বাহাদুর জানান, " বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। সংশ্লিষ্ট শাখার সাথে সমন্বয় করে একটা ফলাফল পাওয়া যাবে।"
পরিকল্পনা, উন্নয়ন ও ওয়ার্কস শাখার ডেপুটি রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ মো. জাফর আলী জানান, ক্যাম্পাসের আরো কয়েক জায়গায় ফ্যানের চাহিদার ফাইল রয়েছে। রিজেন্ট বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত না হওয়াতে এতদিনেও কোনো অগ্রগতি ছিলনা। সর্বশেষ রিজেন্ট বোর্ডের সভায় খাতওয়ারি বাজেটের অনুমোদন সাপেক্ষে টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে। আশা করি শিঘ্রই এসব চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে।