ফয়সাল আহমেদ, ডিআইইউ প্রতিনিধিঃ
সম্প্রতি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে (ডিআইইউ) ছাত্ররাজনীতি বন্ধের ঘোষণার পর কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসংগঠনগুলো৷
তারা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয়টির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সভাপতি শামীম হায়দার পাটোয়ারী ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ লালন পালন করেছেন৷ ছাত্রলীগকে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা দিয়েছেন৷ বিনিময় ছাত্রলীগ তার হয়ে কাজ করেছেন৷ তারা ছাত্র রাজনীতির নামে ক্যাম্পাসে আধিপত্য বিস্তার করেছেন যার ফলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের কোন অধিকারের বিষয়ে কথা বলতে সাহস পায় নাই৷
রোববার (২ মার্চ) গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রতিক্রিয়ায় এসব কথা বলেন ছাত্র নেতারা৷ এর আগে গত শুক্রবার (২৮শে ফেব্রুয়ারি) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়টির রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মো. রফিকুল ইসলাম ও প্রক্টর অধ্যাপক ড. সাজ্জাদ হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতির নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি কোড অব কন্ডাক্ট, ভর্তির নীতিমালা ও শর্তানুযায়ী ক্যাম্পাসে রাজনীতি নিষিদ্ধ। এমতাবস্থায়, ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাস সীমানায় শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক কার্যক্রম না করার জন্য কর্তৃপক্ষের নির্দেশক্রমে বিশেষভাবে বলা যাচ্ছে।বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সকল শিক্ষার্থীকে নিয়ম মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন।
এ ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় ডিআইইউ শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক রাকিবুল হাসান চাঁদ বলেন, শামীম হায়দার পাটোয়ারী ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ লালন পালন করেছেন৷ ছাত্রলীগকে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা দিয়েছেন বিনিময় ছাত্রলীগ তার হয়ে কাজ করেছেন৷ তারা ছাত্র রাজনীতির নামে ক্যাম্পাসে আধিপত্য বিস্তার করেছেন, যার ফলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের কোন অধিকারের বিষয়ে কথা বলতে সাহস পায় নাই৷ তিনি সাধারণ শিক্ষার্থীদের অধিকার হরণসহ অনেক অনিয়ম করেছেন৷ তার লালিত-পালিত ছাত্রলীগের ভয়ে শিক্ষার্থীরা এতদিন কোন কথা বলে নাই।
রাকিবুল আরও বলেন, আপনারা দেখবেন ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি কার্যক্রম না করার নির্দেশ দেওয়ার দুই দিন আগে সাধারণ শিক্ষার্থীদের অধিকার বাস্তবায়নে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নেতৃবৃন্দরা।
তিনি আরও বলেন, মূলত ছাত্রদল সাধারণ শিক্ষার্থীদের অধিকার নিয়ে কথা বলতে শুরু করেছে এই ভয়ে উনি ক্যাম্পাসের ছাত্র রাজনৈতিক মূলক কার্যক্রম না করার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি যতই নির্দেশ দেন না কেন আমরা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করে যাবো ইনশাআল্লাহ।
অন্যদিকে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের সংগঠক মো: মুহতাসিম ফুয়াদ বলেন, আমি বিশ্বাস করি, একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রাজনীতির মাত্রা নির্ধারণের মূল দায়িত্ব প্রতিষ্ঠানটির প্রাইম স্টেকহোল্ডারদের—অর্থাৎ সংখ্যাগরিষ্ঠ শিক্ষার্থীদের, অভিভাবকদের, শিক্ষকদের এবং প্রশাসনের। রাজনীতি করা প্রত্যেক নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার, তবে সেটি যেন শিক্ষার পরিবেশ ব্যাহত না করে, সেদিকে লক্ষ্য রাখা জরুরি।
একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের অধিকার ও সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য যথাযথ প্রতিনিধিত্ব থাকা প্রয়োজন। শিক্ষার্থীদের সমস্যা সমাধানে এবং নীতিনির্ধারণে ভূমিকা রাখার জন্য একটি কার্যকর স্টুডেন্ট কাউন্সিল থাকা অপরিহার্য। এটি শিক্ষার্থীদের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করবে এবং প্রশাসনের সঙ্গে একটি কার্যকর যোগাযোগ স্থাপন করবে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিবেশ সুরক্ষিত রেখে, গঠনমূলক উপায়ে শিক্ষার্থীদের মতপ্রকাশের সুযোগ থাকা উচিত। আমি আশা করি, প্রশাসন ও শিক্ষার্থীরা যৌথভাবে এমন একটি কাঠামো গড়ে তুলবে, যা শিক্ষার্থীদের কল্যাণ নিশ্চিত করবে এবং শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখবে।